সম্মানীত প্রিয় পাঠকগণ
আগামী কাল থেকে শুরু
হচ্ছে মুসলিম উম্মার পবিত্র আশুরা বা মহরমের রোযা রাখার
দিন আমরা অনেকে
রোযা রাখার সঠিক
দিন বা কয়টি
রোযা রাখতে হবে তা জানিনা তাই আমি অধম আপনাদের সামনে সহীহ হাদীসের ভিত্তিতে এই গুলি
পর্যালোচনা করব......
দ্বীন ইসলামে কিছু পর্ব
বা দিবস আছে। যেগুলো আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নির্ধারণ করেছেন ইবাদত-বন্দেগী বা নেক আমল করার
জন্য। এমনি একটা
বিশেষ দিবসের নাম আশুরা। হিজরী সনের
প্রথম মাস মুহাররমের দশ তারিখ। মুসলিম উম্মাহর দ্বারে কড়া
নাড়ে প্রতি বছর এই দিনটি।
এ মাস আমাদের স্বরণ
করিয়ে দেয় আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর হিজরত
ও তার দাওয়াতী জিন্দেগী শুরু ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের কথা। এ মাসে রয়েছে এমন একটি দিন,
দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে
যে দিনে নবী মুসা আ. এর বিজয় হয়েছিল। পতন হয়েছিল তখনকার সবচেয়ে শক্তিশালী জালেম সম্রাট ফেরআউন ও তার সম্রাজ্যের এবং ইতিহাসের সবচেয়ে হৃদয় বিদারক হত্যা কান্ড হয়েছিলো ইয়াযিদ বাহীনির হাতে
আমাদের প্রানপ্রিয় নবী (দ:)ওনার ২ নাতীন ইমাম হাসান
ও ইমাম হুসাইন (রা:)সহ অসংথ্য মুসলিমদের শাহাদাত দিবস
উক্ত দিনটিই হল আশুরা বা মুহাররম মাসের দশ তারিখ।এ দিনটি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে খুবই
প্রিয়। তাই তিনি
এ দিনে সওম পালনের সওয়াব প্রদান করে থাকেন বহুগুণে।
যেমন হাদীসে এসেছে
عن
أبي هريرة رضى الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم أفضل الصيام بعد رمضان شهر الله المحرم، وأفضل الصلاة بعد الفريضة صلاة الليل. رواه مسلم
"আবু হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত তিনি
বলেনঃ রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রমজানের পর সর্বোত্তম সওম হল আল্লাহর প্রিয় মুহাররম মাসের
সওম। এবং ফরজ সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হল রাতের
সালাত" বর্ণনায় : মুসলিম
আশুরার বৈশিষ্টের মধ্যে রয়েছে এ দিনে আল্লাহ তায়ালা তার নবী মুছা আ. ও তার অনুসারী ঈমানদারদের ফেরআউনের জুলুম থেকে
নাজাত দিয়েছিলেন এবং ফেরআউনকে তার বাহিনীসহ সমুদ্রে ডুবিয়ে মেরেছেন।
সাহাবী ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আগমন করলেন
তিনি আশুরার দিনে
ইহুদীদের সওম পালন
করতে দেখলেন। যেমন
হাদীসে এসেছে
عن
ابن عباس رضى الله عنهما: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قدم المدينة فوجد اليهود صياما يوم عاشوراء، فقال لهم رسول الله صلى الله عليه وسلم : ما هذا اليوم الذي تصومونه؟ قالوا هذا يوم عظيم أنجى الله فيه موسى وقومه، وغرق فرعون وقومه فصامه موسى شكرا فنحن نصومه. فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : فنحن أحق وأولى بموسى منكم. فصامه رسول الله صلى الله عليه وسلم وأمر بصيامه. رواه البخاري و مسلم
"ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি
বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় এসে দেখলেন যে, ইহুদীরা আশুরার দিনে
সওম পালন করছে। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন "এটা কোন দিন যে তোমরা
সওম পালন করছ?
তারা বললঃ এটা এমন এক মহান
দিবস যেদিন আল্লাহ মুছা আ. ও তার সম্প্রদায়কে নাজাত দিয়েছিলেন এবং ফেরআউনকে তার দলবলসহ ডুবিয়ে মেরেছিলেন। মুছা আ. শুকরিয়া হিসেবে এ দিনে সওম পালন
করেছেন। এ কারণে
আমরাও সওম পালন
করে থাকি। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ "তোমাদের চেয়ে আমরা মুছা
আ. এর অধিকতর ঘনিষ্ট ও নিকটবর্তী।" অতঃপর রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওম পালন করলেন ও অন্যদেরকে সওম পালনের নির্দেশ দিলেন। (বর্ণনায়ঃ বুখারী ও মুসলিম)
রসূলে কারীম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহুদীদের কথা বিশ্বাস করে সওম পালন করেছেন এমন নয়। সম্ভবত আল্লাহ তায়ালা অহীর
মাধ্যমে ইহুদীদের এ বক্তব্যের সত্যতা জানিয়েছিলেন অথবা
তিনি বিশ্বস্ত সূত্রে এর সত্যতা উপলদ্ধি করেছিলেন।
এ দিনে সওম পালনের ফজীলত সম্পর্কে হাদীসে আরো এসেছে
عن
أبي قتادة رضى الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم: سئل عن صيام يوم عاشوراء، فقال يكفر السنة الماضية. رواه مسلم والترمذي
আবু কাতাদাহ রা. থেকে
বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কে আশুরার সওম সম্পর্কে প্রশ্ন করা হল, তিনি
বললেনঃ " বিগত এক বছরের
গুনাহের কাফফারা হিসেবে গৃহীত হয়।" বর্ণনায় : মুসলিম, তিরমিজী
অন্য বর্ণনায় এসেছে
عن
أبي قتادة رضى الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : . . . . . صيام يوم عاشوراء أحتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله. رواه مسلم
" আবু কাতাদাহ রা. থেকে বর্ণিত যে রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ . . . . . . . . আশুরার দিনের সওমকে আল্লাহ তায়ালা বিগত এক বছরের গুনাহের কাফফারা হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন।" বর্ণনায় : মুসলিম
হাদীসে আরো এসেছে
من
صام عاشوراء غفر الله له سنة. رواه البزار وحسنه الألباني في صحيح الترغيب والترهيب
"যে আশুরার সওম পালন করবে আল্লাহ তার এক বছরের
গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।" বর্ণনায়ঃ বাযযার
ইমাম বায়হাকী (রহঃ) বলেনঃ
"এ হাদীসের ব্যাখ্যা হলঃ যে সওম পালনকারীর গুনাহ রয়েছে তার গুনাহের কাফফারা হবে আর যার গুনাহ নেই আশুরার সওম তার মর্যাদা বৃদ্ধি করবে।" (ফাযায়েলুল আওকাত:
বায়হাকী)
মোট কথা আশুরার দিনের
সওম হল এক বছরের সওমতুল্য।
রসূলে কারীম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ সওমকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে পালন করতেন। যেমন হাদীসে এসেছে
قال
ابن عباس رضى الله عنهما : ما رأيت النبي صلى الله عليه وسلم يتحرى صيام يوم فضله على غيره إلا هذا اليوم يوم عاشوراء وهذا الشهر يعني شهر رمضان. رواه البخاري و مسلم
ইবনে আব্বাস রা. বলেনঃ
"আমি রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এ সওম ছাড়া
অন্য কোন সওমকে
এত গুরুত্ব দিতে
দেখিনি। আর তা হল আশুরার সওম ও এই রমজান
মাসের সওম।" বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম
আমাদের সালফে সালেহীন এ সওমকে গুরুত্ব দিয়ে
পালন করতেন। এমনকি
সফরে থাকাকালীন সময়েও তারা এ সওমকে
পরিত্যাগ করতেন না। যেমন ইমাম ইবনে
রজব (রহঃ) বর্ণনা করেছেন যে, ইবনে
আব্বাস রা., আবু ইসহাক আস-সাবেয়ী, ইমাম যুহরী (রহঃ)
প্রমুখ বলতেনঃ "রমজানের সওম কোন কারণে
ছুটে গেলে অন্য
সময়ে আদায় করার
সুযোগ থাকে কিন্তু আশুরার সওম ছুটে
গেলে আর রাখা
যায় না।" (লাতায়েফুল মাআ'রিফ : ইবনে রজব)
তাই তারা সফরে থাকা
অবস্থায়ও আশুরার সওম আদায় করতেন। নেক কাজে অগ্রণী হওয়ার ব্যাপারে এই ছিল আমাদের পূর্বসূরী ওলামায়ে কেরামের আদর্শ।
আশুরার সওম ও তার বিধান :
ইসলামের সূচনা থেকে তার পরিপূর্ণতা লাভ পর্যন্ত আশুরার সওমের বিধান
এক ধরনের ছিলনা।
সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে
এর যে পরিবর্তন হয়েছে তা নিম্নে তুলে ধরা হল :
১. ইসলামের সূচনাতে মক্কায় থাকাকালীন অবস্থায় রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার সওম পালন
করতেন, কিন্তু অন্যকে এ সওম পালন
করতে হুকুম করেননি।
২. রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনাতে আগমন করলেন
তিনি ইহুদীদের সওম পালন করতে দেখলেন তখন তিনি সওম পালন করলেন অন্যদের সওম পালন করতে
নির্দেশ দিলেন। এমনকি
যারা আশুরার দিনে
আহার করেছিলেন তাদের দিনের বাকী সময়টা পানাহার থেকে বিরত
থাকতে নির্দেশ দিলেন। আর এটা ছিল হিজরতের দ্বিতীয় বছরে। কেননা তিনি হিজরতের প্রথম বছর মুহাররম মাস শেষ হওয়ার একমাস পর অর্থাৎ রবিউল আউয়াল মাসে
মদীনাতে আগমন করেছিলেন।
৩. হিজরতের দ্বিতীয় বছর যখন রমজান মাসের
সিয়াম ফরজ করা হল তখন আশুরার সওমের ফরজিয়্যত (অপরিহার্যতা) রহিত
হয়ে গেল এবং তা মুস্তাহাব হিসেবে গণ্য হতে লাগল। অতএব বলা যায়
এক বছরের জন্য
এ সওম পালনের ফরজ নির্দেশ জারী
হয়ে ছিল।
(ফতহুল বারী)
৪. আশুরার সওম পালন
সুন্নাত। আর তার সংখ্যা হবে দুটি। মুহাররম মাসের নবম ও দশম তারিখে অথবা দশম ও একাদশ তারিখে।
উপরে যে আশুরার সওমের
চারটি ইতিবৃত্ত আলোচনা করা হল তা বহু সংখ্যক সহীহ
হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
আশুরার সওমের ব্যাপারে ইহুদীদের বিরোধীতা করার নির্দেশ :
যে সকল বিষয়ে কোন শরয়ী হুকুম অবতীর্ণ হয়নি মদীনায় আসার
পর সে সকল বিষয়ে নবী কারীম
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) ইহুদীদের অনুরূপ আমল করা পছন্দ
করতেন। যেমন তিনি
মসজিদুল আকসাকে কিবলা
হিসেবে গ্রহণ করলেন। উদ্দেশ্য ছিল ইহুদীরা যেন ইসলামকে নিজেদের ধর্মের মতই মনে করে, ইসলামের প্রতি
আকৃষ্ট হয়ে ইসলাম
গ্রহণ করে। পরে যখন সত্য ধর্ম
ইসলাম গ্রহণের পরিবর্তে ইহুদীদের অবাধ্যতা, হিংসা, কপটতা, বিশ্বাসঘাতকতা,বর্ণবাদী নীতি ও চরম সাম্প্রদায়িকতা প্রকাশ পেল তখন সকল ব্যাপারে তাদের বিরোধীতা করার নির্দেশ দেয়া
হল এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ব্যাপারে তাদের
সাথে সাদৃশ্যতাপূর্ণ সকল আমল ও আচরণ করতে
নিষেধ করা হল।
তাই রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সংকল্প করলেন আশুরার দিনে
তিনি ইহুদীদের মত আর একটি করে সওম পালন করবেন
না। বরং এ সওমের সাথে মুহাররম মাসের নবম তারিখে একটি সওম বাড়িয়ে রাখার মাধ্যমে ইহুদীদের ধর্ম ও সাংস্কৃতির বিরোধীতা করবেন। এর প্রমাণ হিসেবে বহু হাদীস এসেছে।
যেমন
عن
ابن عباس رضى الله عنهما أنه قال: حين صام رسول الله صلى الله عليه وسلم يوم عاشوراء وأمر بصيامه، قالوا إنه يوم تعظمه اليهود والنصارى، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ( فإذا كان العام المقبل إن شاء الله صمنا اليوم التاسع)
قال
: فلم يأت العام المقبل حتى توفى رسول الله صلى الله عليه وسلم. رواه مسلم
ইবনে আব্বাস রা. বলেন,
যখন রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার সওম পালন করলেন
ও অন্যকে পালন
করার নির্দেশ দিলেন
তখন সাহাবায়ে কেরাম রা. বললেনঃ "এটা তো এমন এক দিন যাকে ইহুদী
ও খৃষ্টানরা সম্মান করে থাকে।" তখন রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ
"আগামী বছর আসলে
ইনশাআল্লাহ আমরা নবম তারিখে সওম পালন
করব।" ইবনে আব্বাস রা. বলেনঃ "পরবর্তী বছর আসার পূর্বেই রসূলে কারীম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তেকাল করলেন।" বর্ণনায়ঃ মুসলিম
এ হাদীস দেখে এ কথা বুঝে নেয়ার অবকাশ নেই যে, রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার সওমটা মুহাররম মাসের
দশ তারিখের পরিবর্তে নবম তারিখে পালনের সংকল্প করেছিলেন। বরং তিনি সংকল্প করেছিলেন নবম ও দশম দু দিন সওম পালন করার। কেননা
আশুরা হল দশম তারিখ। সেদিন বাদ দিয়ে সওম পালন
করলে তা আশুরার সওম বলে গণ্য
হয় কিভাবে?
হাদীসে এসেছে
أمر
رسول الله صلى الله عليه وسلم بصوم عاشوراء يوم العاشر. رواه الترمذي عن عبد الله ابن عباس
"রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার সওম পালন করতে
বলেছেন দশম তারিখে"
হাদীসে আরো এসেছে
قالت عائشة رضى الله عنها أن النبي صلى الله عليه وسلم أمر بصيام عاشوراء يوم العاشر. رواه الترمذي
আয়েশা রা. বলেনঃ নবী কারীম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহাররমের দশ তারিখে আশুরার সওম পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।" বর্ণনায়ঃ তিরমিজী
হাকাম ইবনুল আ'ওয়াজ
নামে এক ব্যক্তি ইবনে আব্বাস রা. কে আশুরার সওম সম্পর্কে প্রশ্ন করলে
তিনি উত্তরে বলেনঃ
إذا
رأيت هلال المحرم فاعدد وأصبح يوم التاسع صائما. رواه مسلم والترمذي
"যখন মুহাররম মাসের
চাঁদ দেখবে তখন থেকে হিসেব করবে
এবং নবম তারিখের সকাল থেকে সওম পালন করবে।" বর্ণনায়ঃ মুসলিম ও তিরমিজী
ইবনে আব্বাস রা. এর এ উত্তর থেকে
এ ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশংকা নেই যে, আশুরার সওম আসলে কোন দিন;
নবম না দশম তারিখে?
ইবনুল কায়্যিম (রহঃ) বলেন
: "কেহ যদি আশুরা
সম্পর্কিত ইবনে আব্বাস রা. এর বর্ণনা সমূহ একত্র করে পড়ে দেখে তা হলে তার সামনে
কোন বিভ্রান্তি বা অস্পষ্টতা থাকবেনা এবং সে ইবনে আব্বাস রা. এর ইলম ও প্রজ্ঞার গভীরতা উপলদ্ধি করতে পারবে। বর্ণিত হাদীসে প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেননি যে আশুরা নবম তারিখে। তিনি শুধু নবম তারিখে সওম আরম্ভ
করতে বলেছেন। (যাদুল
মাআ'দ)
হাদীসে এসেছে
عن
ابن عباس رضى الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : صوموا يوم عاشوراء وخالفوا فيه اليهود، وصوموا قبله يوما أو بعده يوما. رواه أحمد
ইবনে আব্বাস রা. থেকে
বর্ণিত তিনি বলেন
যে, রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ "তোমরা আশুরা দিবসে সওম পালন কর ও এ ক্ষেত্রে ইহুদীদের বিরোধীতা কর। তাই তোমরা
আশুরার একদিন পূর্বে অথবা একদিন পরে সওম পালন করবে। বর্ণনায় : আহমদ
এ হাদীসে কয়েকটি বিষয়
স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়ঃ
(১) রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার দিনে সওম পালন
করতে বলেছেন। তাই আশুরার দিনকে বাদ দিয়ে সওম পালন
করলে তা আশুরার সওম হবে না।
(২) আশুরার সওম পালনের ক্ষেত্রে ইহুদীদের বিরোধীতা করতে হবে। তাই ইহুদীদের মত দশম তারিখে একটি মাত্র
সওম পালন করা যাবে না।
(৩) আশুরার একদিন
পূর্বে সওম পালন
করতে হবে।
(৪) যদি আশুরার পূর্বের দিন সওম পালন করা কোন কারণে সম্ভব না হয় তাহলে আশুরা
ও তার পরের
দিন সওম পালন
করতে হবে।
কিভাবে পালন করবেন আশুরার সওম :
আশুরার সওম পালন সম্পর্কিত হাদীসসমূহ একত্র করলে
আশুরার সওম পালনের পদ্ধতি সম্পর্কে কয়েকটি সিদ্ধান্তে আসা যায়ঃ
(ক) মুহাররম মাসের
নবম ও দশম তারিখে সওম পালন
করা। এ পদ্ধতি অতি উত্তম। কারণ
রসূলে কারীম (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এভাবেই আশুরার সওম পালনের সংকল্প করেছিলেন। যেমন ইতিপূর্বে আলোচিত ইবনে আব্বাস রা. এর হাদীস এর প্রমাণ বহন করে।
(খ) মুহাররম মাসের
দশম ও একাদশ
দিবসে সওম পালন
করা। এ পদ্ধতিও হাদীস দ্বারা সমর্থিত।
(গ) শুধু মুহাররম মাসের দশম তারিখে সওম পালন করা। এ পদ্ধতি মাকরূহ। কারণ এটা ইহুদীদের আমলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
(ইকতেজাউ সিরাতিল মুস্তাকীম: ইমাম তাইমিয়া) ও (রদ্দুল মুহতার : ইবনে
আবেদীন)
কোন কোন আলেমের মতে আশুরা উপলক্ষে নবম,
দশম ও একাদশ
তারিখে মোট তিনটি
সওম পালন করা ভাল। এতে আশুরার ফজীলত লাভ করার
ক্ষেত্রে কোন সন্দেহ থাকে না।
তবে সর্বাবস্থায় এ রকম আমল করা ঠিক হবে না। এভাবে
আমল তখনই করা যেতে পারে যখন আশুরার তারিখ নিয়ে
সন্দেহ দেখা যায়।
যেমন মুহাম্মাদ বিন সীরিন
(রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, একবার
মুহাররমের তারিখ নিয়ে
বিভ্রান্তি দেখা দিলে
তিনি উপরোক্ত নিয়মে তিনটি সওম পালন
করেন।
(ফাতহুল বারী : ইবনে
হাজার) ও (যাদুল
মাআ'দ : ইবনুল
কায়্যিম)
উপরের হাদীসের আলোচনা থেকে
পরিষ্কার হলো যে আশুরার রোযা ২টি এবং তা পালন
করার উত্তম দিন হলো ৯ ও ১০ ই মহরম
তাই আসূণ আমরা
সবাই
এই ২দিন রোযা
রেখে ইমাম হাসান
ও ইমাম হুসাইনের শাহাদাতের স্মরণে জিকির
আসকার ওযাজ মাহফিল নাতে রাসূল দুরুদে সামা ও মিলাদ
কিয়াম করে কাটিয়ে দেয়...আল্লাহ আমিন....ইয়া হাসান ইয়া হুসাইন (রা:) ইসলাম জিন্দা হোতা হে হার কারবালাকি বাদ....প্রচারে...মোখলেছিয়া সূন্নী খানকা শরীফ।
No comments:
Post a Comment