Monday, September 14, 2015

(প্রসঙ্গ নবী এবং ওলী আওলিয়াদের নিকট রুহাণী সাহায্য চাওয়া যাবে কি না)


আসসলামু আলাইকুম ওয়া রাহমতুল্লাহি ওবারাকাতুহ
শরু করছি পরম করুণাময় সেই প্রেমময় জাল্লে জালালু আহাদময় অসীম দয়ালু আল্লাহ সুবাহানু তাআলা তার পেয়ারে নূরময় হাবীব শাফেয়ীন মুজনেবিন রাহমাতালাল্লিল আলামিন আহমদ মোস্তফা মুহাম্মদ মোস্তফা (সা:) উনার উপর দুরুদ পেশ করে এবং আমার দাদা হুজুর আক্তার উদ্দিন শাহ আমার মূর্শীদ কেবলা দয়াল মোখলেছ সাই এর সরণে... (প্রসঙ্গ নবী এবং ওলী আওলিয়াদের নিকট রুহাণী সাহায্য চাওয়া যাবে কি না)
আমি প্রথমে একটি কথা বলতে চায় তা হলো আল্লাহ নিজেই কোরানে বলেছেন, যে আমার রাসূল কে অনুসরণ করে সে যেন আমাকে অনুসরণ করে আর যে আমার রাসূলের হাতে বায়াত হয় সে যেন আমি আল্লাহর হাতে বায়াত হয় পাঠকগন দেখুন আল্লাহ নিজেই কত সুন্দর উপমা দিয়েছেন আমার রাসূল সম্পর্কে সুতরাং এই আয়াত থেকে প্রমান হয় যে আল্লাহ কে আগে ভালবাসার কথা না বলে আল্লাহ নিজেই বলেছেন তার রাসূল কে ভালবাসতে তাই থেকে বুঝা যায় শূধু আল্লাহকে মানলেই হবে না আল্লাহ ভালবাসলেই রাসূল কে ভালবাসা হয় না রাসূল কে ভালবাসলে আল্লাহ কে ভালবাসা হয় এটাই আল্লাহ কত সুন্দর বুঝিয়েছেন পাক কোরানে কিন্তু আমরা নির্বোধ তা অস্কীকার করে কোরানের ব্যখ্যাকে ভূল বুঝিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছি এটা কি মহাপাপ নয়, আসূন এবার +
আমার প্রসঙ্গে যাই আমরা দৈনন্দিন জীবনের প্রতি মুহূর্তে অন্যের অর্থা, গায়রুল্লাহ- সাহায্য প্রার্থী হয়ে থাকি যেমন - সন্তান পিতা-মাতার নিকট, প্রজা বাদশাহ বা সরকারের নিকট, মাদ্রাসা মসজিদের চাঁদার জন্য জনসাধারনের নিকট সাহায্য প্রার্থী হইএটা শিরক্ নয় এরা সবাই গায়রুল্লাহ্ বস্তুত তার কাছেই চাওয়া যায় যিনি দেয়ার বা দান করার ক্ষমতা রাখেনক্ষমতা দুই প্রকার - ‘জাতিগত বা স্বত্ত্বাগত যা একমাত্র আল্লাহ্পাকের জন্য খাস এবংআতাই বা আল্লাহ্ কর্তৃক প্রদত্ত -যা আল্লাহ্ পাক তাঁর সকল বান্দাকে প্রদান করে থাকেন এটা আবার দুপ্রকার - ‘সাধারণ ক্ষমতা - যা সকল বান্দাকে আল্লাহ্পাক কমবেশী দিয়ে থাকেন, এবং বিশেষ ক্ষমতা (রুহানী) - যা আল্লাহ্পাক তাঁর খাস বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা দিয়ে থাকেন যেমন - ‘নবী ওলীআল্লাহ্গণ কারণ আল্রাহ নিজেই বলেছেন যে ব্যক্তি আমার ওলির বিরুদ্ধে কটুক্তি করে আমি আল্রাহ তার বিরুদদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করি তাই সাবধান তাছাড়া আল্লাহ আরো এরশাদ করেন- অর্থা, “তিনি (আল্লাহ্) নিজ অনুগ্রহ প্রদানের জন্য যাকে ইচ্ছা বেছে নেন (সূরা - আল্-বাক্বারাহ : আয়াত - ১০৫)আরো এরশাদ হচ্ছেঃ অর্থা, “আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা স্বীয় ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব বা প্রভুত্ব দান করে থাকেন আল্লাহ্ প্রাচুর্যময় প্রজ্ঞাময় (বলতে প্রভুত্ব, কর্তৃত্ব মালিকানা ইত্যাদি বুঝায়) (সূরা - আল্-বাক্বারাহ : আয়াত - ২৪৭)
পাঠকগণ দেখেন আল্লাহ সুবাহানু তাআলা উপরের আয়াতে বলেছেন ওনার যাকে ইচ্ছা তাকে উনার ক্ষমতা দান করেন তো আমি আর আপনি কেন মাঝখান থেকে অহেতুক মাতাব্বরি করি আর আল্লাহ যাকে তার ক্ষমতা দান করেন নবী রাসূলের পরে ওলি আওলিয়ারাই একমাত্র সেই ক্ষমতার উত্তরাধিকারী চাই জীবীত হোক বা উফাতের বেলায় হোক বরং উফাতের পর তাদের ক্ষমতা আল্লাহ আরো বাড়িয়ে দেন বিভিন্ন হাদীস এবং ফতোয়ার কিতাবে পাওয়া যায় কারণ আল্লাহ পাক কোরানে বলেছেনযদি কখনও তারা নিজেদের আত্নার প্রতি জুলুম করে হে মাহবুব আপনার দরবারে হাজির হয় অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে আর রাসুল সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের পক্ষে সুপারিশ করেন, তবে অবশ্যই তারা আল্লাহকে তাওবা কবুলকারী দয়ালু পাবে(সূরা আন নিসা, আয়াত ৬৪ )
ইমাম কুরতুবী (রহ:) হযরত আবূ সাদেক (রা:) থেকে বর্ণনা করেন যে ইমাম আলী (:) বলেন, “মহানবী (:)-এর বেসালের (পরলোকে আল্লাহর সাথে মিলিত হবার) তিন দিন পর জনৈক আরব এসে তাঁর রওযা মোবারকের ওপর পড়ে যান এবং তা থেকে মাটি নিয়ে মাথায় মাখতে থাকেন তিনি আরয করেন, ‘এয়া রাসূলাল্লাহ (:)! আপনি বলেছিলেন আর আমরাও শুনেছিলাম, আপনি আল্লাহর কাছ থেকে জেনেছিলেন আর আমরাও আপনার কাছ থেকে জেনেছিলাম; আমি একজন পাপী, আর এক্ষণে আপনার- দরবারে আগত, যাতে আপনার সুপারিশ আমি পেতে পারি এই আরযির পরিপ্রেক্ষিতে রওযা মোবারক থেকে জবাব এলো, ‘কোনো সন্দেহ- নেই তুমি ক্ষমাপ্রাপ্ত!’ [তাফসীরে কুরতুবী, আল-জামে লি আহকাম-ইল কুরআন, ৬ষ্ঠ খণ্ড, উক্ত আল-কুরআনের :৬৪-এর তাফসীর] এবং তাফসীরে্ ইবনে কাছীরের উক্ত আয়াতের তাফসীরে উপরের বিষয়টি এসেছে
পাঠকগণ দেখুন আল্লাহ তাআলা নিজেই কোরানে বলেছেন উফাতের পর রাসূল (সা:)উনার দরবারে হাজির হয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে এবং সেটা প্রথমে রাসূল (সা:)ওনার কাছে এবং রাসূল (সা:) যদি সূপারিশ করে তাহলে আল্লাহ তাআলা তা গ্রহণ করবেন থেকে কি প্রমান হয় না যে নবী রাসূলদের কাছে চাওয়া বৈধ তারপরে যদি কেউ বুঝে না বুঝার ভান করেন তাহলে আপনি জাহান্নামী ছাড়া কিছুই না কারণ কোরানের একটি বাণী অস্বীকার করলে কি হয় সেটা সবাই ভাল জানেন এবার আসূন হাদীসের আলোকে যাই
হযরত ওক্ববাহ রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, হুযূর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন-
নিশ্চয় আমাকে পৃথিবীর সমস্ত ধনভাণ্ডারের চাবিগুচ্ছ দেওয়া হয়েছেবোখারী শরীফ ২য় খণ্ড ৫৫৮ পৃঃ, মুসলিম শরীফ ২য় খণ্ড ২৫০
আবূ এসহাক আল-কারশী (রা:) বর্ণনা করেন, মদীনা মোনাওয়ারায় আমাদের সাথে এক ব্যক্তি ছিলেন, যিনি যখন- এমন কোনো খারাপ কাজ সংঘটিত হতে দেখতেন যাকে তিনি বাধা দিতে অক্ষম, ক্ষণা তিনি মহানবী (:)-এর মোবারক রওযায় যেতেন এবং আরয করতেন, ‘হে মাযারের অধিবাসীবৃন্দ (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এবং শায়খাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) এবং আমাদের সাহায্যকারী মণ্ডলী! আমাদের অবস্থার দিকে কৃপাদৃষ্টি করুন .... [* [ইমাম বায়হাকী, বায়হাকীকী শরীফ, হাদীস নং- ৩৮৭৯]
*# হযরত ওমর রঃ এর সময় একদা অনাবৃষ্টির কারণে মানুষের উপর দুর্ভিক্ষ পতিত হল তখন এক সাহাবী হযরত বেলাল বিন হারেস রঃ রাসূল দঃ এর রওযা মোবারকে এসে আবেদন করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ দঃ আপনার উম্মত ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে আপনি আল্লাহর দরবারে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করুন সে সাহাবিকে স্বপ্নযোগে বলা হল , হযরত ওমর রঃ কে গিয়ে সালাম বল এবং তাকে বল যে তোমাদেরকে বৃষ্টি দান করা হবে সুবহানাল্লাহ !
আল মুসান্নাফ ,ইবনে আবি শায়বাহ (খন্ড ১২ ,পৃঃ৩২ হাদিস নং ১২০৫১.) *হযরত ইবনে হাজর আসকালানী রহঃ, ফতহুল বারী শরহে বুখারী , (খন্ড পৃঃ ৪৯৫ ৪১২)
পাঠকগণ উপরের হাদীস গুলি থেকে দিবালোকের মত পরিষ্কার যে নবী রাসূলদের পরে ওলি আওলিয়াদের কাছে চাওয়া সম্পুর্ণ যায়েয কারণ আল্রাহ তাআলা নিজেই ভালবেসে উনাদের কাছে ক্ষমতা অর্পন করেছেন তাই কোরান মতে ওনাদের কাছে চাওয়া অস্বীকার করা সম্পূর্ণ ভিত্তিহিন-প্রচারে-মোখলেছিয়া সূন্নী খানকা শরীফ

No comments:

Post a Comment