Friday, September 11, 2015

(প্রসঙ্গ মহিলা পুরুষ উভয়েই রওযা যিয়ারত করতে পারবেন)





আসসলামু আলাইকুম ওয়া রাহমতুল্লাহি ওবারাকাতুহ
শরু করছি পরম করুণাময় সেই প্রেমময় জাল্লে জালালু আহাদময় অসীম দয়ালু আল্লাহ সুবাহানু তাআলা তার পেয়ারে নূরময় হাবীব শাফেয়ীন মুজনেবিন রাহমাতালাল্লিল আলামিন আহমদ মোস্তফা মুহাম্মদ মোস্তফা (সা:) উনার উপর দুরুদ পেশ করে এবং আমার দাদা হুজুর আক্তার উদ্দিন শাহ আমার মূর্শীদ কেবলা দয়াল মোখলেছ সাই এর সরণে...
 (প্রসঙ্গ মহিলা পুরুষ উভয়েই রওযা যিয়ারত করতে পারবেন)
নিয়ত করে মাযার শরীফ যিয়ারত করা খাস সূন্নতের অর্ন্তভুক্ত.কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশে কিছু বেখুব আছে যারা এই যিয়ারত করাটাকে হিন্দুদের পূজার সাথে তুলনা করে আর করবেই না বা কেন শয়তানের কাজতো শুধু ভাল কাজের মধ্যে শয়তানী করে সেই কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখা.কিন্তু যারা বুঝে না বুঝে এই ধরনের কাজ করেন এবং যারা টেলিভিশনে বসে ফতোয়া দেন যে এগুলি মাজাপু পুজা বা কবর পুজা শির্ক আমি বলব আপনারাই হলেন মুলত শির্ক কারী এবং কোরান হাদীস বিরোধী কোরান হাদীসে কোথাও আছে কি যে রওযা বা মাজার বা কবর যেয়ারত করা যাবে না পারলে একটি মাত্র হাদীস দেখান তাহলে আজীবেনর জন্য মেনে নিব আপনাদের ফতোয়া কিন্তু আপনারা যে ভন্ড তা আমি প্রকাশ করছি এই হাদীস গুলির মাধ্যমে দেখে নিন রওযা শরীফ বা মাজার শরীফ বা কবর যিয়ারত করা যায়েয-
সহীহ হাদীস শরীফের মধ্যে এরশাদ হয়েছে--

০১. হযরত ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এরশাদ করেছেন, যে ব্যাক্তি আমার কবর ( রওজা শরীফ) যিয়ারত করলো তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেল -"দলীল--
জামে ছগীর ১৭১ পৃষ্ঠা
শিফাউস সিকাম
ওফাউল ওফা ৩৯৪ পৃষ্ঠা
০২. হযরত বুরায়দা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, আমি তোমাদের কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, এখন তোমরা তা করতে পারো -দলীল-
মুসলিম শরীফ
মিশকাত শরীফ ১৬৭০ ( বাংলা অনুবাদ, সুবিধার জন্য হাদীস নম্বর বাংলা অনুবাদ কিতাব থেকে দেয়া হলো যাতে সবাই সহজেই খুজে পায় )
০৩. হযরত ইবনে মাসুদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, নিশ্চয়ই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, আমি তোমাদের কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম , এখন তোমরা তা করতে পারো | কেননা উহা দুনিয়ার আসক্তি কমায় এবং আখিরাতকে স্মরন করায় -দলীল-
ইবনে মাজাহ
মিশকাত শরীফ ১৬৭৭
04.হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, একদিন নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনা শরীফের কিছু কবরের নিকট গেলেন অতঃপর তাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, সালাম হোক তোমাদের প্রতি হে কবরবাসী !"দলীল-
তিরমীযি শরীফ
মিশকাত শরীফ ১৬৭৩
05.হাদীস শরীফে আরো এরশাদ হয়েছে--
হযরত ইবনে নোমান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ননা করেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি প্রত্যেক জুমুয়ার দিন নিজ পিতা-মাতা অথবা তাদের মধ্যে একজনের কবর যিয়ারত করবে তাকে মাফ করে দেয়া হবে -দলীল--
শুয়াইবিল ঈমান লিল বায়হাক্বী
মিশকাত ১৬৭৬এছাড়া আরো অসংখ্য সহীহ হাদীস শরীফে কবর যিয়ারত করার ব্যাপারে বলা হয়েছে | এসকল হাদীস শরীফের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত মুহাদ্দিস , হাফিযে হাদিস , আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
06. জেনে রাখুন পুরুষ মহিলাদের জন্য কবর যিয়ারত সকল হাদীসের রায় অনুযায়ী মোস্তাহাব প্রমানিত, তবে মহিলাদের ব্যাপারে মতানৈক্য আছে -দলীল-√ ফতহুল বারী ফি শরহে বোখারী ৩য় খন্ড ১১৮ পৃষ্ঠা |

বিখ্যাত ইমাম আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,

وبزيارة القبور اي لا با با ءس بهابل تندب

অর্থ- কবর যিয়ারত এতে কোন অসুবিধা নেই, বরং এটা মোস্তাহাব!

দলীল-√ ফতোয়ায়ে শামী /২৪২

06.শুধু তাই নয় ওহুদ যুদ্ধে শহীদ গনের মাজার শরীফ যিয়ারত করার জন্য স্বয়ং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই প্রতি বছর ওহুদ প্রঙ্গনে যেতেন !
যেটা বর্নিত আছে --
وفيه يستحب ان يزور شهداء جبل احد لماروي ابن ابي شيبة " ان النبي صلي الله عليه وسلم كان ياء تي قبور الشهداء باحد علي رأس كل حول فيقول السلا عليكم بما صبرتم فنعم عقبي الدار

অর্থ : ওহুদ পাহাড়ের শহীদগনের ( কবর) যিয়ারত করা মোস্তাহাব | ইবনে আবী শায়বা হতে বর্নিত আছে , হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি সরান্তে ওহুদের শহীদগনের কবর যিয়ারত করতে আসতেন | অতঃপর বলতেন, তোমাদের প্রতি সালাম , যেমন তোমরা ধৈর্য ধারন করেছিলে তেমনি পরকালে উত্তম বাস স্থান লাভ করেছ |"

দলীল--
ফতোয়ায়ে শামী ২য় খন্ড ২৩৪ পৃষ্ঠা !

সেটার ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে আবেদীন শামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,

ندب الزيارة وان بعد محلها

অর্থ : দূরবর্তী স্থানেও ( কবর) যিয়ারতের জন্য গমন মুস্তাহাব !"

দলীল-
শামী ২য় খন্ড ২৪২ পৃষ্ঠা !

শুধু তাই নয় শাফেয়া মাযহাবের ইমাম, ইমাম শাফেয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজে ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ যিয়ারত করার জন্য আসতেন !
যেটা ইমাম শাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি নিজেই বলেন--

اني لاتبرك بابي حنيفة واجءي الي قبره فاذا عرضت لي حاجة صليت ر كعتين و ساءلت الله تعالي عند قبره فتقضي سريعا

অর্থ : নিশ্চয়ই আমি ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে বরকত হাসিল করি |যখন আমার কোন সমস্যা দেখা দেয় তখন আমি উনার মাজার শরীফে এসে প্রথমে দুই রাকাত নামাজ আদায় করি | অতঃপর উনার উসীলা দিয়ে আল্লাহ পাকের নিকট সমস্যা সমাধানের জন্য প্রর্থনা করি | তা অতি তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে যায় |"

দলীল--
ফতোয়ায়ে শমী, মুকাদ্দিমা ১ম খন্ড ৫৫ পৃষ্ঠা !
এছাড়া আরো অসংখ্য দলীল রয়েছে , যার দ্বারা প্রমানিত হয় মাজার শরীফ বা কবর যিয়ারত করা সুন্নত !
এখন বর্তমানে কিছু মাজারে শরীয়ত বিরোধী কাজ দেখা যায় ! যেমন- গান-বাজনা, নারী পুরুষ অবাধ মেলামেশা ,বিভিন্ন নেশা করা ইত্যাদি !!
এগুলো মোটেই জায়িয নেই , এগুলা প্রতিরোধ করতে হবে |
কিন্তু তাইবলে যিয়ারত ত্যাগ করা যাবে না |
যেটা ইবনে হাজার আসকালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন--

" সেখানে যদি শরীয়ত বিরোধী কাজ পরিলক্ষিত হয়, যেমন মহিলা পুরুষ একত্র মিশ্রন, তথাপি কবর যিয়ারত ত্যাগ করা যাবে না |বরং মানুষের নব উদ্ভাবিত( বিদয়াত) কাজকে দূর করতে হবে |"

দলীল--
দুররুল মোখতার ২য় খন্ড ২৪২ পৃষ্ঠা !

আর মহিলাদের যিয়ারতের ব্যাপারে বিভিন্ন মত আছে | যেহেতু মহিলাদের ব্যাপারে বেপর্দা হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে , এছাড়া তাদের দ্বারা বিভিন্ন বিলাপ , ক্রন্দন ইত্যাদি হয়ে থাকে তাই এদের ব্যাপারে ইমাম মুস্তাহিদ গন মাকরুহ ফতোয়া দিয়েছেন !
তবে যদি পর্দার খেলাপ না হয় এবং অন্যান্য শরীয়তের খিলাপ কিছু না হয় তবে মহিলারাও যিয়ারত করতে পারবে !দলীল--√ শামীমারাকিউ ফালাহশরহে সুন্নাহ

উপরোক্ত দলীল  দ্বারা যিয়ারত সুন্নাত প্রমান হলো এবং মহিলা পুরুষ উভয়েই যিয়ারত করতে পারবে তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে| এখন এই সুন্নতকে যারা পূজা বলে কটাক্ষ করবে নিঃসন্দেহে সেটা কুফরী হবে ! কারন সুন্নতকে অবজ্ঞা করা কুফরী !
-প্রচারে-মোখলেছিয়া সূন্নী খানকা শরীফ

No comments:

Post a Comment