Friday, September 11, 2015

রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم এর ইলমে গায়েব (১ম পর্ব) :-

রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم এর ইলমে গায়েব (১ম পর্ব) :-



ইমাম কাজী ইউসুফ নাবহানী (রহ:) বলেন:

প্রথমত আপনাদের জানতে হবে যে এলমে গায়ব তথা অদৃশ্য জ্ঞান মহান আল্লাহর অধিকারে; আর মহানবী (দ:) বা অন্যান্যদের মোবারক জিহ্বায় এর আবির্ভাব ঘটে থাকে তাঁরই তরফ থেকে হয় ওহী (ঐশী বাণী) মারফত, নয়তো এলহাম (ঐশী প্রত্যাদেশ) দ্বারা। হুযূর পূর নূর (দ:) একটি হাদীসে এরশাদ ফরমান, “আমি আল্লাহর নামে কসম করছি, নিশ্চয় আমি কিছুই জানি না কেবল আমার প্রভু যা আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন তা ছাড়া।”

[নোট-১: তাবুকের যুদ্ধের সময় যখন রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর উট হারিয়ে গিয়েছিল, তখন তিনি মানুষদের কাছে ওর খোঁজ জানতে চান, যার প্রেক্ষিতে জনৈক মোনাফেক (যায়দ ইবনে আল-লাসিত আল-কায়নুকাঈ) বলেছিল, “এই হলেন মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) যাঁর কাছে ওহী এসেছে আসমান থেকে, অথচ তিনি জানেন না তাঁর উট কোথায়।” এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে নূরনবী (দ:) আল্লাহর প্রশংসা করে বলেন, ”অমুক লোক (মোনাফেক) এ কথা বলেছে। নিশ্চয় আমি কিছুই জানি না শুধু আমার প্রভু খোদাতা’লা যা আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন তা ছাড়া। আর তিনি আমাকে জানিয়েছেন যে ওই উট অমুক উপত্যকায় একটি গাছের সাথে লাগাম জড়িয়ে গিয়ে আটকে আছে।” মানুষেরা তখনি ওখানে দৌড়ে গিয়ে (ওই অবস্থায়) উটটিকে পায়।
যা একটি দীর্ঘতর বর্ণনার অংশ (মুনাফিকরা রাসুল(সা) এর ইলমে গায়েব নিয়ে কটু কথা বললে রাসুস (সা) তাদের জবাব দেন] এবং যা’তে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে নিম্নের কথাগুলো:
“তুমি এখানে আমাকে কী জিজ্ঞেস করতে এসেছ তা তোমার বলার আগেই আমি বলতে পারি; আর যদি তুমি চাও, তবে তুমি আগে জিজ্ঞেস করতে পারো, আমি এরপর উত্তর দেবো.......তুমি এখানে এসেছ আমাকে যুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে।” মহানবী (দ:)-এর উট একইভাবে হোদায়বিয়ার অভিযানেও হারিয়েছিল এবং পাওয়া গিয়েছিল] অতএব, আমাদের কাছে তাঁর কাছ থেকে যা কিছু অদৃশ্য জ্ঞান হিসেবে এসেছে, তার সবই হলো ঐশী প্রত্যাদেশ যা তাঁর নবুয়্যতের সত্যতার একটি প্রামাণ্য দলিল।
♦Reference :-
★এই বর্ণনা দু’জন সাহাবী হযরত মাহমুদ ইবনে লাবিদ (রা:) ও হযরত উমারা ইবনে হাযেম (রা:) কর্তৃক প্রদত্ত

♦‘আল-মাগাযী’ পুস্তকে ইবনে এসহাক কর্তৃক লিপিবদ্ধ বলে
♦ইবনে হিশাম তাঁর ’সীরাহ’ (৫:২০৩) ও
♦আত-তাবারী তাঁর ‘তারিখ’ (২:১৮৪) গ্রন্থ
♦ইবনে হাযম নিজ ’আল-মুহাল্লা’ (১১:২২২)
♦ইবনে হাজর তাঁর ‘ফাতহুল বারী’ (১৩:৩৬৪, ১৯৫৯ সংস্করণ)
♦ইবনে হাজর তার ‘আল-ইসাবা’ (২:৬১৯) গ্রন্থে
♦ইবনে হিব্বান স্বরচিত ‘আল-সিকাত‘ (২:৯৩)
♦ইবনে কুতায়বা (রা:)-কে উদ্ধৃত করে ‘দালাইল আন্ নবুওয়াহ’ (১৩৭ পৃষ্ঠা)
কিতাবে আল-তায়মী এটি বর্ণনা করেন।
♦ইমাম নাবহানীর উদ্ধৃত অংশটি হযরত উকবা ইবনে আমির (রা:) হতে আবু আল-শায়খ তাঁর ‘আল-আ’যামা’ (৪:১৪৬৮-১৪৬৯ #৯৬৭১৪) পুস্তকে বর্ণনা করেন।

আরেক কথায়, ইমাম আহমদ রেযা খানের বিস্তারিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মহানবী (দ:)-এর এলমে গায়ব হচ্ছে আংশিক (’জুয’ই), অসম্পূর্ণ (গায়র এহাতী), মন্ঞ্জুরীকৃত (আতায়ী), এবং স্বকীয় নয় (গায়র এসতেকলালী), যা কুরআন মজীদে সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত হয়েছে নিচে: “অদৃশ্যের জ্ঞাতা আল্লাহই, সুতরাং আপন অদৃশ্যের ওপর কাউকে ক্ষমতাবান করেন না আপন মনোনীত রাসূলগণ ছাড়া” (সূরা জিন, ২৬-২৭ আয়াত)।

♦ইমাম নাবহানী (রহ:) বলেন: মো’জেযাগুলোর অধিক সংখ্যার কারণে এই অধ্যায়ে সবগুলো তালিকাবদ্ধ করা অসম্ভব; আর বাস্তবতা হলো এই যে এগুলোর সবই তাঁর মোবারক হাতে সংঘটিত হয়েছে, তাঁর অধিকাংশ হালতে (অবস্থায়), কেউ তাঁকে প্রশ্ন করুক বা না-ই করুক, (কিংবা) পরিস্থিতি যা-ই দাবি করেছিল (তার পরিপ্রেক্ষিতে)। এগুলো তাঁর হতবাক করা সর্বাধিক সংখ্যক মো’জেযা (অলৌকিকত্ব)।

♦ইমাম কাজী আয়ায (রহ:) নিজ ’আশ-শেফা’ গ্রন্থে বলেন: “মহানবী (দ:)-এর এলমে গায়ব (অদৃশ্য জ্ঞান) এই সকল মো’জেযার অন্তর্ভুক্ত যা স্পষ্ট ও নিশ্চিতভাবে আমাদের জ্ঞাত হয়েছে বিপুল সংখ্যক বর্ণনাকারীর সাদৃশ্যপূর্ণ অসংখ্য বর্ণনার মানে দ্বারা।”

♦Reference :-
 ইমাম কাজী আয়ায কৃত ‘শেফা শরীফ’ (৪১৩-৪১৪ পৃষ্ঠা): “

♦ঈমানদার ও অবিশ্বাসীদের মাঝে গায়েবি এলমের সাথে রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর পরিচিতি ও তা জানার বিষয়টি এমনই সর্বজনবিদিত এবং সাধারণভাবে স্বীকৃত ছিল যে তাঁরা একে অপরকে বলতেন,

 “চুপ! আল্লাহর শপথ, তাঁকে জানানোর জন্যে যদি আমাদের মধ্যে কেউ না-ও থাকে, তবুও পাথর ও নুড়ি-ই তাঁকে তা জানিয়ে দেবে।” [এটা মক্কা বিজয়ের সময় নবী পাক (দ:) ও হযরত বেলাল (রা:) কাবা শরীফের অভ্যন্তরে প্রবেশ করার পর ‘আত্তাব ইবনে উসায়দ এবং হারিস ইবনে হিশামকে আবু সুফিয়ান ইবনে হারব এ কথা বলেন।]

♦Reference :-
♦আল-কিলাঈ নিজ ‘একতেফা’ (২:২৩০) পুস্তকে উদ্ধৃত করেন।
♦আল-মাওয়ার্দী তাঁর ‘আলম আল-নবুওয়া’ (১৬৫ পৃষ্ঠা) কেতাবেও এটি বর্ণনা করেছেন।]

♦আল-বুখারী (রহ:) হযরত ইবনে উমর (রা:) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: 
“আমরা আমাদের স্ত্রীদের সাথে কথাবার্তা ও অবকাশকালীন আলাপ থেকে দূরে থাকতাম পাছে আমাদের ব্যাপারে কোনো ওহী নাযেল না হয়ে যায় (এই আশংকায়)। হুযূর পাক (দ:) বেসাল (খোদার সাথে পরলোকে মিলন)-প্রাপ্ত হবার পর আমরা একটু খোলাখুলি আলাপ করতাম।” 
♦Reference :-
♦ আল-বুখারী (রহ:), 
♦ইবনে মাজাহ (রহ:) ও
♦ ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ:) এটি বর্ণনা করেন।] 
♦সাহল ইবনে সায়াদ আল-সাঈদী থেকে আল-বায়হাকী বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: 
“আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি যে আমাদের মধ্যে কেউ কেউ নিজের স্ত্রীর সাথে একই চাদরের নিচে শুয়ে থাকা সত্ত্বেও কোনো কিছু করা থেকে বিরত ছিলেন এই ভয়ে যে তাঁদের সম্পর্কে কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হতে পারে।” 
♦Reference :-
♦তাবারানী নিজ ’আল-কবীর’ গ্রন্থে (৬:১৯৬ #৫৯৮৫) এটা বর্ণনা করেন; 
♦সহীহ সনদে ইমাম হায়তামীও বর্ণনা করেন (১০:২৮৪)]
♦হযরত আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা:) বলেন:
আমাদের মাঝে আছেন আল্লাহর নবী, যিনি কেতাব তেলাওয়াতরত,
যেমন উজ্জ্বল প্রভা ভোরের আকাশকে করে থাকে আলোকিত,
তিনি আমাদের পথপ্রদর্শন করেছেন অন্ধত্ব থেকে করে মুক্ত,
আর তাই আমাদের অন্তর নিশ্চিত জানে তিনি যা বলেন তা ঘটবে সত্য ।। 
♦Reference :-
♦হযরত আবু হুরায়রা (রা:) হতে ইমাম বুখারী (রহ:) এটি বর্ণনা করেন তাঁর ‘আল-তারিখ আল-সগীর’ (১:২৩) 
♦ আত-তাবারানী নিজ ‘আল-আহাদ আল-মাসানী’ (৪:৩৮) গ্রন্থে
♦আল-কুরতুবী (১৪:১০০) ও 
♦ইবনে কাসির (৩:৪৬০) তাঁদের তাফসীর কেতাবগুলোতে এই বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছেন।]

♦আর হযরত হাসান ইবনে সাবেত (রা:) বলেন:
(ইয়া রাসুলাল্লাহ আপনি এমন) এক নবী যিনি তাঁর চারপাশে প্রত্যক্ষ করেন যা অন্যরা দেখতে পায় না,
প্রতিটি সমাবেশে যিনি আল্লাহর কেতাব করেন বর্ণনা,
তিনি যদি আগাম বলেন অনাগত কোনো দিনের ঘটনা,
তবে তা সত্য হবে পরদিন নয়তো তারও পরের দিন, সন্দেহ বিনা ।।
Reference :-
♦হিশাম ইবনে হুবাইশ থেকে গ্রহণ করে এটি বর্ণনা করেছেন আত-তাবারানী নিজ ‘আল-কবীর’ (৪:৪৮-৫০) গ্রন্থে; 
♦এই সনদকে সহীহ ঘোষণা করে আল-হাকিম (৩:৯-১০); 
♦ইবনে আবদ আল-বারর তাঁর ’আল-এসতিয়াব’ (৪:১৯৫৮-১৯৬২) 
♦আল-তায়মী নিজ ‘দালাইল আল-নবুওয়াহ’ (পৃষ্ঠা ৫৯-৬০) গ্রন্থে; এবং আল-লালিকাঈ তাঁর শরাহ-এ। 
♦উসূলে এ’তেকাদে আহলে সুন্নাহ’ (৪:৭৮০) পুস্তকে।
♦আত-তাবারীর ‘তাফসীরে তাবারী’ (১:৪৪৭-৪৪৮),
♦ইবনে হিব্বানের ‘আল-সিকাত’ (১:১২৮) ও 
♦আল-কিলাঈ-এর ‘আল-একতেফা’ (১:৩৪৩) 
♦ আবু মা’আদ আল-খুযযা হতে ইবনে সায়াদ (১:২৩০-২৩২)-ও এটি বর্ণনা করেন
♦ আবু মা’আদ একজন তাবেয়ী, যা ইমাম ইবনে হাজর স্বরচিত ’আল-এসাবা’ (#১০৫৪৫) গ্রন্থে ব্যক্ত করেছেন।]  
♦‘তাকভিয়াতুল ঈমান’ বইটির লেখক দাবি করেছিল মহানবী (দ:) পরের দিন কী ঘটবে তা জানতেন না, কেননা তিনি এক মেয়েকে থামিয়ে দিয়েছিলেন এ কথা বলে “এই বিষয়টি বাদ দাও” যখনই সে আবৃত্তি করেছিল “আমাদের মাঝে এক নবী (দ:) আছেন যিনি আগামীকাল কী হবে তা জানেন”; ওই লেখকের এই অদ্ভূত দাবিকে ওপরে উল্লেখিত ৪ লাইনের পদ্য দুটো নাকচ করে দিয়েছে। 

 ♦হুযূর পাক (দ:)-এর ওই মেয়েকে নিষেধ করার মানে এই নয় যে তিনি গায়ব জানতেন না, বরং এ বিষয়টি সাবেত বা প্রমাণিত যে আল্লাহ “অদৃশ্যের জ্ঞাতা, সুতরাং আপন অদৃশ্যের ওপর কাউকে ক্ষমতাবান করেন না আপন মনোনীত রাসূলগণ ছাড়া” (সূরা জ্বিন, ২৬-২৭ আয়াত)
এবং তিনি রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর কাছে শেষ বিচার দিবস অবধি এবং তারও পরের ঘটনাগুলোর ভবিষ্যত জ্ঞান প্রকাশ করেছেন। আসলে নবী পাক (দ:) ওই মেয়েকে এ কখা বলাতে বাদ সেধেছিলেন এই কারণে যে এলমে গায়ব তাঁর প্রতি স্বকীয় পর্যায়ে আরোপ করা হয়েছিল, আর এই স্বকীয়তা একমাত্র আল্লাহরই। 
Reference :-
♦রুবাইয়্যে বিনতে মুওয়াব্বেয (রা:) হতে আল-বুখারী; এবং সুনান ও ইমাম আহমদ বর্ণিত। ইমাম ইবনে হাজর (রহ:)-এর ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থে উদ্ধৃত তাঁর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য
♦ওই মেয়ে এমনই ছোট ছিল যে তার নামায পড়ার বয়সও হয় নি। 
Reference :-
♦আবু দাউদের ‘সুনান’-এর ওপর ইবনুল কাইয়েমের হাশিয়া বা টীকা দ্রষ্টব্য] 
♦তার কাছ থেকে এ রকম দাবি করাটা (ওই সময়কার) জনপ্রিয় বিশ্বাসের ইঙ্গিতবহ ছিল, যা নবী (দ:)-এর জন্যে বেমানান হলেও দৈবজ্ঞ, জ্যোতিষী, গণক গনদের এ মর্মে মিথ্যা দাবির প্রতিনিধিত্বকারী ছিল যে তারা নিজেদের ক্ষমতাবলে ভবিষ্যত জানতে পারতো; এরই পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহতা’লা ঘোষণা করেছেন: “কোনো আত্মা জানে না যে কাল কী উপার্জন করবে” (সূরা লোকমান, ৩৪ আয়াত)। তাই মহানবী (দ:) একটি বর্ণনায় আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, “শুধু আল্লাহ-ই জানেন আগামীকাল কী ঘটবে।” 
Reference :-
♦ইবনে মাজাহ বিশুদ্ধ সনদে অর্থাৎ, তিনি স্বকীয় এবং পরিপূর্ণভাবে জানেন।


♦ইমাম আহমদ (রহ:) ও আত্ তাবারানী (রহ:) হযরত আবু যর গিফারী (রা:) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “মহানবী (দ:) যখন আমাদের ছেড়ে যান (পরলোক গমন করেন), তখন উড়তে সক্ষম এমন কোনো পাখি ছিল না যার সম্পর্কে তিনি আমাদের জানান নি।”
 Reference :
♦এটি বর্ণনা করেছেন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী হতে আত্ তাবারানী নিজ আল-কবীর (২:১৫৫ #১৬৪৭) কেতাবে,
♦ইমাম ইবনে হাজর হায়তামী (৮:২৬৩-২৬৪); এছাড়াও
♦ইমাম আহমদ (রহ:), 
♦আবু দাউদ (রহ:), 
♦আত্ তায়ালিসী, 
♦ইবনে সা’আদ তাঁর ’তাবাকাত’ (২:৩৫৪) পুস্তকে,
♦আল-বাযযার নিজ ‘মুসনাদ’ (৯:৩৪১ #৩৮৯৭) গ্রন্থে,
♦আত্ তাবারী স্বরচিত তাফসীর কেতাবে (৭:১৮৯),
♦ইবনে আবদ আল-বারর তাঁর ‘আল-এসতিয়াব’ পুস্তকে (৪:১৬৫৫), 
♦ইবনে হিব্বান (১:২৬৭ #৬৫ এসনাদ সহীহ),
♦আদ্ দারু কুতনী নিজ ‘এলাল’ কেতাবে (৬:২৯০ #১১৪৮)
♦আল্ হায়তামী (রহ:), ‘মাওয়ারিদ আল-যামান’ (৪৭ পৃষ্ঠা) গ্রন্থে। 
♦এটি হযরত আবু আল-দারদা (রা:) হতে বর্ণনা করেছেন আবু এয়ালা তাঁর ‘মুসনাদ’ পুস্তকে (৯:৪৬ #৫১০৯ এসনাদ সহীহ)।]
♦ইমাম মুসলিম (রহ:) হযরত ‘আমর ইবনে আখতাব (আবু যায়দ) আল-আনসারী (রা:) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: 
“মহানবী (দ:) আমাদের সাথে ফজরের নামায আদায় করেন; অতঃপর তিনি মিম্বরে আরোহণ করেন এবং আমাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন, যতোক্ষণ না যোহরের নামাযের সময় হয়; তিনি মিম্বর হতে অবতরণ করে নামায আদায় করেন এবং নামাযশেষে আবার তাতে উঠে আমাদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন। ইতোমধ্যে আসরের নামাযের সময় হয় এবং তিনি মিম্বর হতে অবতরণ করে নামায আদায় করেন; অতঃপর তিনি নামাযশেষে আবারও মিম্বরে আরোহণ করেন এবং সূর্যাস্ত পর্যন্ত তাঁর বয়ান রাখেন। পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত যা যা ঘটবে, তার সবই তিনি আমাদের বলেন। আমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি-ই সবচেয়ে জ্ঞানী যিনি এর অধিকাংশ মনে রাখতে পেরেছিলেন।” 
Reference :
♦ইমাম মুসলিম 
♦ইমাম আহমদ


♦আল-বুখারী ও মুসলিম হযরত হুযায়ফা ইবনে ইয়ামান (রা:) হতে রওয়ায়াত করেন, তিনি বলেন:
 “রাসূলুল্লাহ (দ:) আমদের মাঝে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে (কথা বল)-ছিলেন; আর তিনি ওই সময় থেকে (পৃথিবীর) শেষ সময় পর্যন্ত যা যা ঘটবে তার কোনোটাই বাদ দেন নি, সবই আমাদের বলেছেন। যাঁরা তা মনে রাখতে পেরেছেন, মনে রেখেছেন এবং যাঁরা ভুলে গিয়েছেন, তাঁরা ভুলেই গিয়েছেন। যাঁরা ওখানে উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা সবাই এটা জানেন। আমি হয়তো ওর কিছু কিছু ভুলে গিয়ে থাকতে পারি; কিন্তু যখনই তা ঘটে তখনই আমার মনে পড়ে যায়, যেমনিভাবে কেউ এমন কোনো ব্যক্তিকে মনে রাখেন যিনি দূরে কোথাও ছিলেন, অথচ তিনি ফিরে আসার পরপরই তাঁকে চেনতে পারেন।” 
Reference :
♦ হযরত হুযায়ফা (রা:) হতে ইমাম আল-বুখারী, 
♦ইমাম মুসলিম, 
♦ইমাম আবু দাউদ ও 
♦ইমাম আহমদ বর্ণিত; 
♦হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা:) হতে ইমাম তিরমিযী ও ইমাম আহমদও বর্ণনা করেছেন এটি। 
♦আল-বুখারী হযরত উমর (রা:) হতেও অনুরূপ একটি বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছেন।]
♦ইমাম মুসলিম হযরত হুযায়ফা (রা:)-এর কথা উদ্ধৃত করেন, যিনি বলেন: “রাসূলে খোদা (দ:) আমাকে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত যা যা ঘটবে, তার সবই বলেছেন এবং এমন কোনো কিছু বাকি ছিল না যে সম্পর্কে আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করি নি; শুধু আমি এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করি ‍নি মদীনাবাসীর মদীনা থেকে বের হবার কারণ কী হবে?” 
Reference :
♦ হযরত হুযায়ফা (রা:) হতে ইমাম মুসলিম ও ইমাম আহমদ বর্ণিত যা’তে নিম্নের বাক্যটি সংযুক্ত - “শেষ মুহূর্ত অবধি”।]



♦আবু দাউদ (রহ:) হযরত হুযায়ফা (রা:) থেকে আরও বর্ণনা করেন যে তিনি বলেন: “আল্লাহর শপথ! আমি জানি না আমার সাথীবৃন্দ (অন্যান্য সাহাবী) ভুলে গিয়েছেন না ভুলে যাওয়ার ভান করছেন!
♦ফিতনা প্রতিরোধের বিষয়টি; মোল্লা কারী নিজ ‘শরহে শেফা’ পুস্তকে বলেন: ‘আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নজর দেয়ার ব্যাপারটি], কিন্তু রাসূলুল্লাহ (দ:) দুনিয়ার শেষ সময় অবধি যতো ফিতনা সংঘটনকারীর আবির্ভাব হবে তাদের কারোর নামই বাদ দেন নি; এদের প্রত্যেকেরই ন্যূনতম তিন’শ অনুসারী হবে। মহানবী (দ:) তাদের প্রত্যেকের নাম, তাদের বাবার নাম ও গোত্রের নাম আমাদের জানিয়েছেন।”
Reference :
♦হযরত হুযায়ফা হতে আবু দাউদ বর্ণিত।
♦হযরত আনাস (রা:) হতে আবু ইয়ালা সহীহ সনদে রেওয়ায়াত করেন যে তিনি বলেন: “মহানবী (দ:) না-রাজি হালতে বের হয়ে এলেন এবং সবার উদ্দেশ্যে বল্লেন, ‘আজ তোমরা আমাকে কোনো বিষয়ে জিজ্ঞেস করবে না, শুধু আমি তোমাদের এই ব্যাপারে বলবো;’ আর আমরা দৃঢ় প্রত্যয় পোষণ করছিলাম যে জিবরীল (আ:) তাঁর সাথেই ছিলেন। এমতাবস্থায় হযরত উমর (রা:) বল্লেন, ‘এয়া রাসূলাল্লাহ (দ:)! এই কিছু দিন আগেও আমরা অজ্ঞতার যুগে বসবাস করতাম। আপনার কাছে মাফ চাই, আপনি আমাদের (অজ্ঞতা প্রকাশ করে) বে-ইজ্জতীতে ফেলবেন না। আমাদের ক্ষমা করুন, আর আল্লাহতা’লাও আপনাকে ক্ষমা করুন’।” 

Reference :
♦ হযরত আনাস (রা:) হতে আবু্ এয়ালা নিজ ’মুসনাদ’ গ্রন্থে (৬:৩৬০ #৩৬৮৯) বর্ণনা করেছেন।
♦ ইমাম হায়তামীর (৭:১৮৮) মতে, এর বর্ণনাকারীরা আল-বুখারী ও মুসলিমেরই বর্ণনাকারী। এই দুই ইমামের ’সহিহাইনে’ একটি দীর্ঘতর বর্ণনা সংযুক্ত রয়েছে। ‘আর আল্লাহতা’লাও আপনাকে মাফ করুন’, হযরত উমর (রা:)-এর এই বাক্যটি কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা ব্যক্ত করে।]

♦হযরত উমর (রা:) থেকে আবু এয়ালা গ্রহণযোগ্য সনদে রওয়ায়াত করেন; তিনি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ (দ:)-কে বলতে শুনেছি, ‘কুরাইশের এই গোত্র (হাই্য) ততোক্ষণ নিরাপদ থাকবে যতোক্ষণ না তারা ধর্ম থেকে সরে মুরতাদ হয়ে যাবে।’ এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলে, ‘এয়া রাসূলাল্লাহ (দ:)! আমি কি জান্নাতে যাবো, না জাহান্নামে?’ হুযূর পূর নূর (দ:) বলেন, ‘বেহেশ্তে।’ আরেক ব্যক্তি উঠে একই প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দেন, ‘দোযখে।’ অতঃপর তিনি এরশাদ ফরমান, ‘আমি তোমাদের কিছু না বলা পর্যন্ত তোমরা আমাকে কিছু বলো না। ভয়-ভীতির কারণ না হলে তোমরা একে অপরের দাফন বন্ধ করে দিতে (লাওলা আন লা তাদাফানূ); আমার অবশ্যই তোমাদেরকে বলা উচিত যে বিপুল সংখ্যক লোক জাহান্নামে যাবে এবং তারা কারা তা তোমরা জানবে। আমাকে যদি এ ব্যাপারে আদেশ দেয়া হয়, তবে আমি তা নিশ্চয় পালন করবো’।”

Reference :
♦হযরত ইবনে উমর (রা:) হতে আবু এয়ালা এটা বর্ণনা করেছেন তাঁর ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে (১০:৬৬ #৫৭০২); এবং
♦দীর্ঘতর বর্ণনায় লিপিবদ্ধ করেছেন ইবনে আবি হাতিম নিজ ‘এলাল’ পুস্তকে (২:২৫৬ #২২৬২)।]



মহানবী (দ:)-এর কতিপয় সাহাবীর ব্যাপারে তাঁর ব্যক্ত এলমে গায়ব:-
♦হযরত আবু বকর (রা:) :-
♦আল-বুখারী (রহ:) ও মুসলিম (রহ:) হযরত আয়েশা (রা:) থেকে বর্ণনা করেন যে হুযূর পূর নূর (দ:) তাঁকে বলেন: “তোমার বাবা ও ভাই (আবদুর রহমান)-কে এখানে ডাকো যাতে আমি কিছু একটা লিখে দিতে পারি, কেননা, আমি আশংকা করি যে কেউ হয়তো কোনো দাবি উত্থাপন অথবা কোনো উচ্চাভিলাষ পোষণ করতে পারে; আর যাতে (ওই লেখার দরুণ) আল্লাহ ও ঈমানদাররা আবু বকর (রা:) ছাড়া অন্য কাউকে প্রত্যাখ্যান করতে পারেন।” 
Reference :-
নোট:- মহানবী (দ:)-এর পবিত্র হায়াতে জিন্দেগীর শেষ দিনগুলোতে ব্যক্ত হাদীস। এটি হযরত আয়েশা (রা:)-এর কাছ থেকে :-
♦ইমাম মুসলিম (রহ:), 
♦ইমাম আবু দাউদ (রহ:) ও 
♦ইমাম আহমদ (রহ:) বর্ণনা করেছেন।]
♦আল-হাকিম সহীহ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে হযরত ইবনে মাসউদ (রা:) থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (দ:) এরশাদ ফরমান: “জান্নাতের বাসিন্দা এক ব্যক্তি এখনি তোমাদের সামনে দৃশ্যমান হতে যাচ্ছেন।” অতঃপর হযরত আবু বকর (রা:) আগমন করেন এবং তাঁদের মাঝে বসেন। 
Reference :-
♦হযরত ইবনে মাসউদ (রা:) থেকে ইমাম তিরমিযী (গরিব হিসেবে) 
♦আল-হাকিম (৩:১৩৬=১৯৯০ সংস্করণ ৩:১৪৬) এটাকে সহীহ সনদ ঘোষণা করে বর্ণনা করেছেন। অনুরূপ বর্ণনায় এর সমর্থন পাওয়া যায় - 
(১) হযরত জাবের (রা:) হতে :-
♦চারটি সহীহ সনদে ইমাম আহমদ (রহ:); 
♦ইমাম তাবারানী - দেখুন আল-হায়তামী (৯:৫৭-৫৮; ৯:১১৬-১১৭);


♦বেশ কয়েকটি সনদে ’আল-আওসাত’ পুস্তকে (৭:১১০ #৭০০২; ৮:৪১ #৭৮৯৭); 
♦‘মুসনাদ আল-শামিয়্যীন’ (১:৩৭৫ #৬৫১); 
♦‘আল-মু’জাম আল-কবীর’ (১০:১৬৭ #১০৩৪৩);
♦আল-হারিস নিজ ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে (২:৮৮৯ #৯৬১);
♦আল-তায়ালিসী তাঁর ‘মুসনাদ’ কেতাবে (পৃষ্ঠা ২৩৪ #১৬৭৪); 
♦ইবনে আবি আসিম নিজ ‘আল-সুন্নাহ’ পুস্তকে (২:৬২৪ #১৪৫৩); 
♦ইমাম আহমদ (রহ:) স্বরচিত ‘ফাযাইলুস্ সাহাবা’ বইয়ে (১:২০৯ #২৩৩; ২:৫৭৭ #৯৭৭) এবং 
♦আল-মুহিব্বুল তাবারী তাঁর ’আল-রিয়াদুন্ নাদিরা’ গ্রন্থে (১:৩০১ #১৪৬); 
(২) হযরত আবু মাসউদ (রা:) হতে :-
♦ইমাম তাবারানী আপন ‘আল-মু’জামুল কবীর’ কেতাবে (১৭:২৫০ #৬৯৫); এবং 
(৩) হযরত ইবনে মাসউদ (রা:) থেকে :-
♦ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ:) তাঁর ‘ফযাইলুস্ সাহাবা’ গ্রন্থে (১:১০৪ #৭৬)। 
♦তিরমিজিতে আরও বর্ণিত আছে, “অতঃপর মহানবী (দ:) ওই একই কথা আবার বলেন এবং হযরত উমর (রা:) আগমন করেন; সকল বর্ণনাকারী এই ক্রমানুসারে হযরত আলী (ক:)-কে তৃতীয় আগমনকারী বল্লেও ইমাম তাবারানী একটি বর্ণনায় হযরত উসমান (রা:)-এর নাম উল্লেখ করেছেন, যদিও তাঁর অন্যান্য সব বর্ণনায় শুধু হযরত আলী (ক:)-এর নামই এসেছে; দেখুন - 
♦হযরত ইবনে মাসউদ (রা:)-এর সূত্রে ‘আল-মু’জামুল কবীর’ (১০:১৬৬-১৬৭ #১০৩৪২, #১০৩৪৪), 
♦উম্মে মারসাদ হতে ‘আল-আহাদ ওয়াল মাসানী (৬:২৩৪ #৩৪৬৭) এবং 
♦’আল-কবীর’ (২৪:৩০১ #৭৬৪); 
♦ইবনে আব্দিল বারর, ’আল-এস্তিয়াব’ (৪:১৯৫৭ #৪২০৯), এবং 
♦হযরত জাবের (রা:) থেকে ইমাম আহমদ (রহ:)-এর ‘ফযাইলে সাহাবা’ (২:৬০৮ #১০৩৮); শেষোক্ত বইয়ে (১:৪৫৪ #৭৩২)
♦হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে একটি বর্ণনায় শুধু হযরত উসমান (রা:)-এর নাম উল্লেখিত হয়েছে, দেখুন-‘কানযুল উম্মাল’ (#৩৬২১১)।


♦নবী পাক (দ:) বেহেশতী হিসেবে আরও যাঁদের নাম উল্লেখ করেছেন তাঁরা হলেন, দশ জন বেহেশতী সাহাবী; হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা:); বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবাবৃন্দ; সুনির্দিষ্ট কয়েকজন যেমন হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসের (রা:); হোদায়বিয়াতে প্রতিশ্রুতি প্রদানকারীগণ; হযরত জাফর ইবনে তাইয়ার (রা:); হযরত বেলাল ইবনে রাবাহ (রা:); ইসলামের পাঁচ স্তম্ভে কোনো কিছু যোগ না করার বা তা থেকে কোনো কিছু বাদ না দেয়ার অঙ্গীকারকারী এক বেদুঈন; হিংসা থেকে মুক্ত আনসার সাহাবী; ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (রা:) ও তাঁর ভাই ইমাম হাসান (রা:); হযরত সাবেত ইবনে কায়েস (রা:); হযরত মালেক (রা:); হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রহ:)-এর সম্মানিত পিতা; হযরত মুআবিয়া
Reference :-
♦’আল-ফেরদৌস’ ৫:৪৮২ #৮৮৩০ এবং
♦মিযানুল এ’তেদাল’ ২:২৪৩, ৪:৩৫৯);
♦হযরত হেলাল হাবাশী (মওলা আল-মুগিরাহ ইবনে শু’বা হতে ‘আল-এসাবা’ ৬:৫৫০ #৮৯৯৬, ‘
♦নওয়াদিরুল উসূল’ #১২৩ এবং
♦‘হিলইয়াত আল-আউলিয়া’ ১৯৮৫ সংস্করণ ২:৮১, শেষোক্ত বইয়ে হযরত উয়াইস করনীর নামও উল্লেখিত হয়েছে);
♦হযরত জারির (’নওয়াদির’ #১২৮);
♦হযরত শারিক ইবনে খুবাশা আল-নুমাইরী (এসাবা ৩:৩৮৪ #৩৯৮৭); এবং
♦আল-দাহহাক ইবনে খলীফা আল-আনসারী (প্রাগুক্ত ’নওয়াদির’ ৩:৪৭৫ #৪১৬৬)।]

♦এ ঘটনার আগে মহানবী (দ:) ইতোমধ্যেই হযরত আবু বকর (রা:)-কে বেহেশতী হবার সুসংবাদ দিয়েছিলেন যখন তিনি এরশাদ করেছিলেন:
“আবু বকর জান্নাতী,
উমরও তাই,
উসমানও,
আলীও;
তালহা,
যুবাইর (ইবনে আওয়াম),
আবদুর রহমান ইবনে আউফ,
সা’আদ (ইবনে আবি ওয়াক্কাস),
সাঈদ (ইবনে যায়দ ইবনে আমর) এবং
আবু উবায়দা ইবনে জাররাহ সবাই জান্নাতী।”
Reference :-
♦হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রহ:) ও হযরত সাঈদ ইবনে যায়দ (রা:) হতে ’সুনান’ ও ইমাম আহমদে বর্ণিত।]

হযরত আবু বকর (রা:) ও হযরত উমর (রা:) :-

♦হযরত হুযায়ফা ইবনে ইয়ামান (রা:) থেকে ইমাম ইবনে মাজাহ (রহ:) ও আল-হাকিম বর্ণনা করেন যে রাসূলে খোদা (দ:) এরশাদ ফরমান: “আমার (প্রকাশ্য জিন্দেগীর) পরে আসা দু’জন - আবু বকর ও উমরকে তোমরা তোমাদের খলীফা হিসেবে মান্য করবে।”
Reference :-
♦এটা একটা দীর্ঘতর হাদীসের অংশ যা হযরত হুযায়ফা (রা:) থেকে ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেছেন (হাসান গরিব হিসেবে);
♦ইমাম আহমদ তাঁর কৃত ’মুসনাদ’ কেতাবে যা আল-যাইনের মতে সহীহ সনদে (১৬:৬১১ #২৩২৭৯), এবং ♦ইমাম আহমদের ’ফযাইলে সাহাবা’ গ্রন্থেও (১:১৮৭);
♦বেশ কয়েকটি সহীহ ও নির্ভরযোগ্য সনদে ইমাম তাহাভী এটা বর্ণনা করেছেন যা উদ্ধৃত হয়েছে আল-আরনা’ওত-এর ‘শরহে মুশকিল আল-আসার’ পুস্তকে (৩:২৫৬-২৫৭ #১২২৪-১২২৬, ৩:২৫৯ #১২৩৩); ♦ইবনে আবি শায়বা (১২:১১);
♦আল-হাকিম (৩:৭৫-৭৬=১১৯০ সংস্করণ ৩:৭৯-৮০)
♦তিনটি সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন যা তাঁর দ্বারা এবং আল-যাহাবী কর্তৃক নির্ভরযোগ্য বলে সমর্থিত; আর ওই তিনটি রওয়ায়াতের সমর্থন রয়েছে :----
♦আল-বায়হাকীর ’সুনানে কুবরা’ (৮:১৫৩ #১৬৩৫২),
♦’আল-মাদখাল’ (১২২ পৃষ্ঠা) এবং
♦‘আল-এ’তেকাদ’ (৩৪০-৩৪১) গ্রন্থগুলোতে।
♦ইমাম ইবনে হাজর নিজ ’তালখিস আল-হাবির’ পুস্তকে (৪:১৯০) এই হাদীসের সনদগুলোকে নির্ভুল ও নির্ভরযোগ্য হিসেবে স্বীকৃত বলে জানিয়েছেন।]




♦আল-বায়হাকী ও আবু নুয়াইম হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আল-’আস (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ (দ:)-কে বলতে শুনেছি - ‘তোমাদের মধ্যে বারো জন খলীফা হবেন। আবু বকর সিদ্দিক আমার (বেসালের) পরে বেশি দিন (শাসনে) থাকবেন না, অল্প সময় থাকবেন; কিন্তু আরবদের গুরু নিষ্কলুষ জীবন যাপন করবেন এবং শাহাদাত বরণ করবেন।’ এমতাবস্থায় কেউ একজন জিজ্ঞেস করেন, ‘এয়া রাসূলাল্লাহ (দ:)! তিনি কে?’ মহানবী (দ:) জবাব দেন, ‘উমর ইবনে খাত্তাব।’ অতঃপর তিনি হযরত উসমান (রা:)-এর দিকে ফিরে বলেন, ‘আর তোমার ক্ষেত্রে, তারা (মোনাফেকরা) বলবে তোমার ওই জামাটি ছুড়ে ফেলে দিতে যেটা আল্লাহতা’লা তোমার কাছে আমানত রেখেছেন। সেই মহান সত্তার শপথ যিনি আমাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন! অবশ্যঅবশ্যই তুমি তা ছুড়ে ফেল্লে বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতোক্ষণ না সূঁচের ছিদ্র দিয়ে উট পার হতে পারে’।”
Reference :-
♦ এটা বর্ণনা করেছেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা:) হতে আল-বায়হাকী এবং
♦আত্ তাবারানী নিজ ‘আল-আওসাত’ (৮:৩১৯ #৮৭৪৯) ও ‘
♦আল-কবীর’ (১:৫৪ #১২, ১:৯০ #১৪২)
♦আল-হায়তামী (৫:১৭৮); এ ছাড়া ভিন্ন এসনাদে (বর্ণনানুক্রমে) লিপিবদ্ধ হয়েছে ‘
♦আল-আহাদ ওয়াল মাসানী’ পুস্তকে (১:৯৬ #৬৭) যা’তে হযরত উসমান (রা:)-এর উল্লেখ নেই;
♦একই ভাবে লেখা আছে ইবনে আবি আ’সিমের ‘আল-সুন্নাহ’ গ্রন্থে (২:৫৫৮);
♦‘আবু বকর সিদ্দিক আমার (বেসালের) পরে বেশি দিন (শাসনে) থাকবেন না, অল্প সময় থাকবেন’, এই অংশটিসহ ‘আল-আহাদ ওয়াল মাসানী’ পুস্তকে (১:৭৩-৭৪ #১৩),
♦ইবনে আবি আসিম (২:৫৪৮),
♦ইবনে আল-জাওযী নিজ ‘সিফাতুস্ সাফওয়া’ গ্রন্থে (১:২৩৫-২৩৬),
♦ আর তাঁর কাছ থেকে আল-মুহিব্বু আত্ তাবারী ইমাম আয্ যুহরীর বরাতে মুরসাল হিসেবে তাঁর ’আল-রিয়াদ আল-নাদিরা’ কেতাবে (১:৪০৮ #৩২৯)।
♦আয্ যাহাবী এটাকে ’সম্পূর্ণ ত্রুটিযুক্ত’ (ওয়াহিন) বলেছেন তাঁর ’সিয়ার’ গ্রন্থে (৯:১৩৩=আল্ আরনাওত সংস্করণের ১০:৪১১) এবং ‘বাতিল’ (শূন্য) বলেছেন নিজ ‘মিযান’ পুস্তকে (৪:৪৪৩),
♦ইবনে আদি কৃত ‘কামিল’ (৪:২০৭),
♦ইবনে হিব্বান প্রণীত ‘আল-মাজরুহিন’ (২:৪২), এবং
♦ইবনে আল-কায়সারানী রচিত ‘তাযকিরাত আল-মাওদু’আত’ (#১০৩২)।
♦ শুধু নিচের বর্ণনাটি সহীহ যা’তে বলা হয়েছে: “ওহে উসমান! আল্লাহতা’লা হয়তো তোমাকে একটি জামা আমানতস্বরূপ দিতে পারেন। মোনাফেকরা সেটা অপসারণ করতে বল্লে তা সরাবে না।” হযূর পাক (দ:) তিনবার এ কথা বলেছিলেন। বিশুদ্ধ রওয়ায়াতে হযরত আয়েশা (রা:) থেকে এই হাদীস লিপিবদ্ধ করেছেন আত্ তিরমিযী (হাসান গরিব), ইবনে হিব্বান, ইমাম আহমদ, ইবনে মাজাহ ও আল-হাকিম।]



♦ইমাম বুখারী ও মুসলিম হযরত আবু মূসা আশ’আরী (রা:) থেকে বর্ণনা করেন যে নবী করীম (দ:) আরিস কুয়োর (বাগানের) অভ্যন্তরে অবস্থান করছিলেন এবং কুয়োর প্রস্তরনির্মিত সীমায় বসেছিলেন; তাঁর পরণের জামা পায়ের গোড়ালির ওপরে ওঠানো ছিল। “আমি (মূসা আশআরী) নিজ মনে বল্লাম, আজ আমি-ই হবো মহানবী (দ:)-এর দরজা রক্ষক। এমতাবস্থায় হযরত আবু বকর (রা:) ওখানে উপস্থিত হলে আমি তাঁকে ‘অপেক্ষা করুন’ বলে হুযূর পূর নূর (দ:)-কে জানালাম, ‘হযরত আবু বকর (রা:) প্রবেশের অনুমতি চাইছেন।’ তিনি উত্তরে বল্লেন, ‘তাঁকে (প্রবেশের) অনুমতি ও বেহেশতের সুসংবাদ দাও।’ অতঃপর হযরত আবু বকর (রা:) (বাগানে) প্রবেশ করলেন এবং রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর পাশে গিয়ে কুয়োর ধারে বসে পা দুটো ঝুলিয়ে দিলেন। এরপর হযরত উমর (রা:) ওইখানে এলেন এবং আমি আবারো আরয করলাম, ‘এবার হযরত উমর (রা:) প্রবেশের অনুমতি চাচ্ছেন।’ রাসূলে খোদা (দ:) বল্লেন, ‘তাঁকেও অনুমতি ও বেহেশতের খোশ-খবরী দাও।’ ফলে তিনিও প্রবেশ করে মহানবী (দ:) ও হযরত আবু বকর (রা:)-এর পাশে কুয়োর ধারে গিয়ে বসলেন এবং পা ঝুলিয়ে দিলেন। এবার এলেন হযরত উসমান (রা:) যার পরিপ্রেক্ষিতে আমি আবার আরয করলাম, ‘হযরত উসমান (রা:) (প্রবেশের) অনুমতি চাইছেন।’
মহানবী (দ:) উত্তর দিলেন, ‘তাকে অনুমতি দাও এবং বলো যে একটি পরীক্ষাশেষে তার জন্যে বেহেশতের সুসংবাদ রয়েছে।’ হযরত উসমান প্রবেশ করে কুয়োর ধারে তাঁদের পাশে বসার কোনো জায়গা না পেয়ে ওই কুয়োর বিপরীত কিনারে গিয়ে বসলেন এবং পা ঝুলিয়ে দিলেন।” সাঈদ ইবনে মুসাইয়েব (রহ:) বলেন, “আমি এই ঘটনায় তাঁদের রওযা শরীফগুলোর একটি ইশারা পাই।”
Reference :-
♦ইমাম বুখারী ও মুসলিম রওয়ায়াতকৃত এবং (ইবনে মুসাইয়েবের মন্তব্য ছাড়া) 
♦আত্ তিরমিযী ও ইমাম আহমদও এটি বর্ণনা করেছেন। ইমাম আহমদ (রহ:)-এর ভাষ্যগুলোর একটিতে বিবৃত হয়েছে যে হযরত উসমান (রা:) তাঁর আসনের দিকে হেঁটে যাবার সময় পড়ছিলেন -
আল্লাহুম্মা সাবরান।

♦আত্ তাবারানী ও আল-বায়হাকী হযরত যায়দ ইবনে আরকাম (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন: “নবী পাক (দ:) আমাকে বাইরে পাঠালেন এ কথা বলে, ‘আবু বকর (রা:)-এর সাথে গিয়ে সাক্ষাৎ করো। তুমি তাকে পাবে নিজ ঘরে কাপড় মুড়িয়ে পা গুটিয়ে (মোহতাবইয়ান) বসে থাকতে। তাঁকে বেহেশতের সুসংবাদ দেবে। এরপর পাহাড়ে যাবে যতোক্ষণ না তুমি উমর (রা:)-কে খুঁজে পাও খচ্চরের পিঠে এবং তাঁর দীর্ঘকায় শরীর দূর থেকে দেখা না যায়। তাঁকেও বেহেশতের সুসংবাদ দেবে। অতঃপর উসমানের কাছে যাবে, যাকে তুমি পাবে বাজারে কেনা-বেচা করতে; তাকেও বেহেশতের খোশ-খবরী দেবে যা একটি মহা ক্লেশের পরে অর্জিত হবে।’ আমি মহানবী (দ:) যেভাবে বলেছিলেন ঠিক সেই অবস্থাতে তাঁদের সবাইকে পাই এবং সংবাদ পৌঁছে দেই।”
Reference :-
♦ আরেকটি বিশদ বর্ণনার অংশ হিসেবে হযরত যায়দ ইবনে আরকাম থেকে আত্ তাবারানী রওয়ায়াত করেছেন নিজ ‘আল-আওসাত’ পুস্তকে (১:২৬৬-২৬৭ #৮৬৮);
♦বায়হাকী তাঁর ‘দালাইল’ কেতাবে এবং আয-যাহাবী নিজ ‘সিয়ার’ বইয়ে এর দুর্বলতা উল্লেখ করেন। যদি এটা সত্য হয়, তবে এই ঘটনা সম্ভবত হযরত আবু মূসা আশআরী (রহ:)-এর বর্ণিত ঘটনার আগের।
♦আল-হায়তামী (৯:৫৫-৫৬) এবং
♦ইবনে কাসীর, আল-বেদায়া গ্রন্থের দালাইলুন্ নবুওয়ত অনুচ্ছেদ, ‘মহানবী (দ:)-এর অদৃশ্য ভবিষ্যত জ্ঞান’ শীর্ষক অধ্যায়’।]

♦হযরত আবু বকর (রা:), হযরত উমর (রা:) ও হযরত আলী (ক:)
♦আল-হাকিম সহীহ হিসেবে ঘোষণা করে হযরত জাবের (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন: “আমি মহানবী (দ:)-এর সাথে হেঁটে এক মহিলার বাড়িতে যাই যিনি আমাদের জন্যে একটি ভেড়া জবাই করেন। ওই সময় হুযূর পাক (দ:) বলেন, ‘দেখো, বেহেশতীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন প্রবেশ করবেন।’ এমতাবস্থায় হযরত আবু বকর (রা:) সেখানে প্রবেশ করেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (দ:) আবার এরশাদ ফরমান, ‘দেখো, বেহেশতীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন প্রবেশ করবেন।’ এবার হযরত উমর (রা:) প্রবেশ করেন। নবী পাক (দ:) আবারও বলেন, ‘দেখো, বেহেশতীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন প্রবেশ করবেন। এয়া আল্লাহ, আপনি যদি চান, তবে এ যেন আলী হয়।’ অতঃপর হযরত আলী (ক:) প্রবেশ করেন।” 
হযরত আবু বকর, হযরত উমর, হযরত উসমান ও হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুম
♦ইমাম আহমদ, আল-বাযযার ও আত্ তাবারানী নিজ ‘আল-আওসাত’ কেতাবে হযরত জাবের (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, ‍যিনি বলেন: “রাসূলে পাক (দ:) হযরত সা’আদ ইবনে আল-রাবী’ (রা:)-কে দেখতে বের হন। (সেখানে) তিনি বসেন এবং আমরাও বসে পড়ি। অতঃপর তিনি বলেন, ‘বেহেশতে বসবাসকারীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন তোমাদের দৃষ্টিগোচর হবেন।’ এমতাবস্থায় হযরত আবু বকর (রা:) তাশরীফ আনেন। এরপর মহানবী (দ:) বলেন, ‘বেহেশতে বসবাসকারীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন তোমাদের দৃষ্টিগোচর হবেন।’ এবার হযরত উমর ফারুক (রা:) এলেন। তিনি আবার বল্লেন, ‘বেহেশতে বসবাসকারীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন তোমাদের দৃষ্টিগোচর হবে।’ অতঃপর হযরত উসমান (রা:) এলেন। মহানবী (দ:) আবারও বল্লেন, ‘বেহেশতে বসবাসকারীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন তোমাদের দৃষ্টিগোচর হবে। এয়া আল্লাহ, আপনি চাইলে সে যেন আলী হয়।’ এমতাবস্থায় হযরত আলী (ক:) সেখানে এলেন।” 
Reference :-
♦হযরত জাবের (রা:) থেকে আত্ তাবারানী নিজ ‘আল-আওসাত’ গ্রন্থে (৭:১১০ #৭০০২) যা’তে হযরত আলী (ক:)-এর উল্লেখ নেই; 
♦আল-হায়তামী  (৯:৫৭); 
♦হযরত উসমান (রা:)-এর উল্লেখ ছাড়া ‘মুসনাদ আল-শামিয়্যীন’ পুস্তকে (১:৩৭৫ #৬৫১)।


♦আল-বাযযার, আত্ তাবারানী ও আবু নুয়াইম হযরত উসমান ইবনে মাযউন (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ (দ:)-কে হযরত উমর (রা:) প্রসঙ্গে বলতে শুনেছি, ‘এটা গালক্কু আল-ফিতনা (বিবাদ-বিসম্বাদের বজ্র)। এই ব্যক্তি (অর্থাৎ, হযরত উমর) যতোক্ষণ তোমাদের মাঝে জীবিত থাকবেন, ততোক্ষণ তোমাদের এবং ফিতনার মাঝখানে একটি দরজা শক্তভাবে বন্ধ থাকবে’।” 
Reference :-
♦এই হাদীস বর্ণনা করেছেন আত্ তাবারানী তাঁর ‘আল-কবীর’ গ্রন্থে (৯:৩৮ #৮৩২১), 
♦আল-বাযযার, আল-ওয়াসিতী নিজ ‘তারিখে ওয়াসিত’ বইয়ে (পৃষ্ঠা ২৪৪-৪৫), এবং 
♦দুর্বল সনদে ইবনে কানী’ তাঁর ‘মু’জাম আল-সাহাবা’ কেতাবে (২:২৫৮ #৭৭৪);
♦আল-হায়তামী (৯:৭২); তবে এই রওয়ায়াতের বিশুদ্ধতা সমর্থিত হয়েছে আত্ তাবারানীর ‘আল-আওসাত’ পুস্তকে বিধৃত বর্ণনায়, যেখানে 
♦ইবনে হাজর (রহ:)-এর ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থে (১৯৫৯ সংস্করণের ৬:৬০৬) উদ্ধৃত তাঁরই মতানুযায়ী নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীদের সূত্রে হযরত আবু যর গিফারী (রা:) হযরত উমর (রা:)-কে ‘ক্কুফল আল-ফিতনা’ তথা ’বিবাদের জন্যে তালা’ বলেছেন; 
♦আল-হায়তামী (৯:৭৩) অবশ্য এর ব্যতিক্রমস্বরূপ সন্দেহ করেন যে হযরত হাসান বসরী (রা:) ও হযরত আবু যর (রা:)-এর মধ্যে কোনো বর্ণনাকারীর ছেদ পড়েছে।
♦একই বর্ণনা হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) হতে আদ্ দায়লামী নিজ ’আল-ফেরদৌস’ কেতাবে (১:৪৩৮ #১৭৮৫) উদ্ধৃত করেছেন।]

♦ইমাম বুখারী ও মুসলিম রওয়ায়াত করেন যে হযরত উমর ইবনে আল-খাত্তাব (রা:) একদিন জিজ্ঞেস করেন: “তোমাদের মধ্যে কে কে স্মরণ করতে পারো রাসূলে পাক (দ:) সেই ফিতনা সম্পর্কে কী বলেছিলেন যা সাগরের ঢেউয়ের মতো উত্তাল হবে?” হযরত হুযায়ফা (রা:) বলেন, “এয়া আমিরাল মোমেনীন, আপনার এ সম্পর্কে চিন্তা করা লাগবে না। কেননা, আপনার এবং ওই ফিতনার মাঝে একটি দরজা আছে যা বন্ধ।” আতঃপর হযরত উমর (রা:) বলেন, “ওই দরজা কি খোলা হবে, না ভেঙ্গে ফেলা হবে?” হযরত হুযায়ফা (রা:) উত্তর দেন: “ভাঙ্গা হবে।” এমতাবস্থায় হযরত উমর (রা:) জবাব দেন: “দরজা খুলে দেয়ার চেয়ে ওটাই বেশি যথাযথ।” পরবর্তীকালে হযরত হুযায়ফা (রা:)-কে জিজ্ঞেস করা হয় ওই দরজা বা ফটক কে, আর তিনি উত্তর দেন, “ওই ফটক-ই হযরত উমর (রা:)।” তাঁকে মানুষেরা আবারো জিজ্ঞেস করে, “তিনি কি এটা জানতেন?” উত্তরে হযরত হুযায়ফা (রা:) বলেন, “হাঁ, অবশ্যঅবশ্যই দিনের আগে যেমন রাত অতিক্রান্ত হয়, (তেমনি) আমিও তাঁর সাথে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় কখা বলছিলাম।” 
Reference :
♦হযরত আবু ওয়াইল শাকীক ইবনে সালামা থেকে ইমাম বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেন এটি।]



♦আত্ তাবারানী হযরত আবু যর (রা:) হতে আরও বর্ণনা করেন যে নবী পাক (দ:) বলেন: “তোমাদেরকে কোনো ফিতনা-ই ছুঁতে পারবে না যতোক্ষণ এই ব্যক্তি (উমর ফারুক) তোমাদের মাঝে আছেন।” 
Reference :-
♦ক্কুফল বর্ণনার একই সনদে আত্ তাবারানী এটি বর্ণনা করেছেন তাঁর ‘আল-আওসাত’ পুস্তকে (২:২৬৭-২৬৮ #১৯৪৫)।]
♦একদিন হযরত খালেদ বিন ওয়ালিদ (রা:) শাম (সিরিয়া) দেশে মানুষের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখছিলেন; এমতাবস্থায় এক লোক তাঁকে বলে, “ফিতনা আবির্ভূত হয়েছে!” হযরত খালেদ (রা:) উত্তর দেন, “যতোদিন ইবনে আল-খাত্তাব জীবিত আছেন, ততোদিন নয়। তা শুধু তাঁর সময়ের পরেই হবে।” 
Reference :-
♦ইমাম আহমদ, 
♦আত্ তাবারানী নিজ ‘আল-কবীর’ কেতাবে (৪:১১৬ #৩৮৪১), 
♦নুয়াইম ইবনে হাম্মাদ তাঁর ‘আল-ফিতান’ গ্রন্থে (১:৪৫, ১:২৮১ #৮১৯) বর্ণনা করেছেন; এঁদের সবাই সনদের মধ্যে কায়স ইবনে খালেদ আল-বাজালী নামের এক অপরিচিত তাবেঈর সূত্রে এটি বর্ণনা করেন। তবে এই নিষ্কলুষ তাবেঈ গ্রহণযোগ্য বিধায়
♦ ইবনে হাজর তাঁর ’ফাতহুল বারী’ বইয়ে (১৯৫৯ সংস্করণের ১৩:১৫) এই এসনাদকে ‘হাসান’ (নির্ভরযোগ্য) হিসেবে চিহ্নিত করেন!
♦ আল-হায়তামী (৭:৩০৭-৩০৮) এবং 
♦আল-মোবারকপুরী প্রণীত ‘তোহফাত আল-আহওয়াযী’ (৬:৩৬৮)।
♦হযরত খালেদ বিন ওয়ালিদ (রা:) নিজ মতামত এভাবে ব্যক্ত করার কথা না; অতএব, দৃশ্যতঃ তিনি মহানবী (দ:) থেকে এটা শুনেছিলেন, নতুবা এমন কারো কাছ থেকে শুনেছিলেন যিনি স্বয়ং মহানবী (দ:) থেকে শুনেছিলেন।
♦হযরত উসমান (রা:)
♦আত্ তাবারানী হযরত যায়দ ইবনে সাবেত (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন যে মহানবী (দ:)-কে তিনি বলতে শুনেছেন: “উসমান আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল যখন একজন ফেরেশতা আমার সাথে ছিল। ওই ফেরেশতা বল্লো, ‘ইনি একজন শহীদ; তাঁর লোকেরা তাঁকে হত্যা করবে। সত্যি, তিনি (মহত্ত্বে) আমাদেরকে (অর্থাৎ, ফেরেশতাকুলকে) লজ্জায় ফেলে দিয়েছেন’।” 
Reference :-
♦হযরত যায়দ (রা:) থেকে আত্ তাবারানী তাঁর ‘আল-কবীর’ পুস্তকে (৫:১৫৯) বর্ণনা করেছেন
♦আল-বায়হাকী হযরত আবু হোরায়রা (রা:) থেকে একটি বর্ণনা, যেটিকে আল-হাকিম বিশুদ্ধ বলেছেন, তা রওয়ায়াত করেন, যা’তে হযরত উসমান (রা:) যখন তাঁর ঘরে অবরুদ্ধ ছিলেন তখন হযরত আবু হোরায়রা (রা:) বলেন: “আমি মহানবী (দ:)-কে বলতে শুনেছি: ‘একটি ফিতনা-ফাসাদ (ভবিষ্যতে) হবে।’ আমরা বল্লাম, ‘এয়া রাসূলাল্লাহ (দ:)! আমরা তখন কী করবো বলে আপনি হুকুম দেন?’ তিনি হযরত উসমান (রা:)-এর দিকে ইঙ্গিত করে উত্তর দিলেন, ‘(তোমাদের) খলীফা ও তার বন্ধুদের সাথে থাকবে’।” 
Reference :-
♦হযরত আবু হোরায়রা (রা:) থেকে এটি বর্ণনা করেছেন আল-হাকিম (৩:৯৯=১৯৯০ সংস্করণের ৩:১০৫; ৪:৪৩৪=৪:৪৮০) এবং 
♦আয্ যাহাবী একে বিশুদ্ধ বলেছেন; এটি আরও বর্ণনা করেন ইবনে আবি শায়বা (১০:৩৬৩ #৩২০৪৯), 
♦আত্ তাবারানী নিজ ‘আল-আওসাত’গ্রন্থে (৯:১৭৫ #৯৪৫৭), 
♦ইবনে আবি আসিম তাঁর ‘আস্ সুন্নাহ’ বইয়ে (২:৫৮৭ #১২৭৮) এবং
♦ বায়হাকী স্বরচিত ‘আল-এ’তেকাদ’ কেতাবে (পৃষ্ঠা ৩৬৮)।]


♦ইবনে মাজাহ, আল-হাকিম বিশুদ্ধ হিসেবে, আল-বায়হাকী ও আবু নুয়াইম হযরত আয়েশাহ (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “রাসূলুল্লাহ (দ:) হযরত উসমান (রা:)-কে ডেকে একান্তে আলাপ করেন, যার দরুণ তাঁর চেহারায় পরিবর্তন আসে। (পরবর্তীকালে) ঘরে অবরুদ্ধ হবার দিন আমরা তাঁকে জিজ্ঞেস করি, ‘আপনি কি এর বিরুদ্ধে লড়বেন না?’ খলীফা বল্লেন, ‘না! রাসূলে পাক (দ:) আমার কাছ থেকে ওয়াদা নিয়েছেন (যেন আমার শাহাদাতের সময় আমি না লড়ি); আমি ওয়াদা (প্রতিশ্রুতি) ওয়াফা (পূরণ) করবো’।” 
Reference :-
♦হযরত উসমান (রা:)-এর মুক্ত করে দেয়া গোলাম হযরত আবু সাহলা (রা:) থেকে বর্ণনা করেন আত্ তিরমিযী (হাসান সহীহ গরিব), 
♦ইমাম আহমদ তাঁর ‘মুসনাদ’ ও ’ফযাইলে সাহাবা’ পুস্তকে (১:৪৯৪), 
♦ইবনে মাজাহ, ইবনে হিব্বান, আল-হাকিম (১৯৯০ সংস্করণের ৩:১০৬), 
♦ইবনে সা’আদ (৩:৬৬), 
♦আবু এয়ালা নিজ ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে (৮:২৩৪), এবং 
♦সহীহ সনদে আল-বাযযার (২:৬০)।] 
♦ইবনে আদি ও ইবনে আসাকির হযরত আনাস (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, ‍যিনি বলেন: “মহানবী (দ:) বলেন, ’ওহে উসমান! আমার (বেসালের) পরে তোমার কাছে খেলাফতের ভার ন্যস্ত করা হবে, কিন্তু মোনাফেকরা চাইবে যেন তুমি তা ত্যাগ করো। তুমি ত্যাগ করো না, বরং রোযা রেখো যাতে তুমি আমার সাথে (ওই রোযা) ভাঙ্গতে পারো’।” 
Reference :-
♦হযরত আনাস (রা:) থেকে ইবনে আসাকির নিজ ‘তারিখে দামেশক’ (৩৯:২৯০),
♦ ইবনে আদি তাঁর ‘আল-কামিল’ (৩:২৭); এবং 
♦আয্ যাহাবী স্বরচিত ’মিযান’ গ্রন্থে (২:৪২৪) যা’তে দুর্বল সনদ আবু আল-রাহহাল খালেদ ইবনে মোহাম্মদ আল-আনসারী, যিনি এর একমাত্র বর্ণনাকারীও।]
♦আল-হাকিম বিশুদ্ধ হিসেবে ঘোষণা করে হযরত মুররাহ ইবনে কাআব (রা:) থেকে বর্ণনা করেন এবং ইবনে মাজাহ-ও তাঁর থেকে রওয়ায়াত করেন, তিনি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ (দ:)-কে একটি পরীক্ষার কথা বলতে শুনেছি যখন এক ব্যক্তি তাঁর জুব্বা পরে পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি এরশাদ করেন, ‘এই ব্যক্তি ওই সময় সঠিক পথ অনুসরণ করবে।’ আমি ওই ব্যক্তিকে দেখতে গেলাম এবং দেখলাম তিনি হযরত উসমান (রা:)।” 
Reference :
♦হযরত কা‘আব ইবনে মুররা আল-বাহযী (রা:) থেকে আত্ তাবারানী (হাসান সহীহ), 
♦দুর্বল সনদে ইবনে মাজাহ, 
♦বেশ কিছু বিশুদ্ধ সনদে ইমাম আহমদ তাঁর ’মুসনাদ’ ও ‘ফযায়েলে সাহাবা’ কেতাবে (১:৪৫০), 
♦আল-হাকিম (১৯৯০ সংস্করণের ৩:১০৯, ৪:৪৭৯ সহীহ), 
♦তিনটি সনদে ইবনে আবি শায়বা (৬:৩৬০ #৩২০২৫-৩২০২৬, ৭:৪৪২ #৩৭০৯০), 
♦আত্ তাবারানী নিজ ‘আল-কবীর’ গ্রন্থে (১৯:১৬১-১৬২ #৩৫৯, #৩৬২, ২০:৩১৫ #৭৫০), এবং 
♦নুয়াইম ইবনে হাম্মাদ স্বরচিত ‘আল-ফিতান’ পুস্তকে (১:১৭৪ #৪৬১)।]


♦আল-হাকিম হযরত আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন যে মহানবী (দ:) তাঁদেরকে বলেছিলেন হযরত উসমান (রা:)-এর রক্তের ফোঁটা কুরআন মজীদের “হে মাহবুব! অদূর ভবিষ্যতে আল্লাহই তাদের দিক থেকে আপনার জন্যে যথেষ্ট হবেন” (২:১৩৭) আয়াতটির ওপর পড়বে; আর তাই ঘটেছিল। 
Reference : 
♦হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে আল-হাকিম বর্ণিত (৩:১০৩=১৯৯০ সংস্করণের ৩:১১০), 
♦আল-যুবায়র ইবনে আবদিল্লাহর দাদী হতে আত্ তাবারী নিজ ‘তারিখ’ কেতাবে (২:৬৭১), ‘
♦উমরা বিনতে আবদ্ আল-রহমান হতে ইবনে আবি হাতিম তাঁর ‘আল-জারহ ওয়াল তা’দিল’পুস্তকে (৪:১৭৯ #৭৮০), এবং 
♦ওয়াসসাব হতে ইবনে সাআদ (৩:৭২)।]


♦মুহাদ্দীস আল-সিলাফী হযরত হুযায়ফা (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “ফিতনার আরম্ভ হযরত উসমান (রা:)-কে শহীদ করার মাধ্যমে এবং শেষ হবে মসীহ-বিরোধী (অর্থাৎ, দাজ্জাল)-এর আবির্ভাব দ্বারা। 
Reference :-
♦হযরত হুযায়ফা (রা:) থেকে দু’টি বর্ণনানুক্রমে ইবনে আবি শায়বা (৭:২৬৪ #৩৫৯১৯-৩৫৯২০)।] 
♦সেই মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! হযরত উসমান (রা:)-এর হত্যাকারীদের প্রতি কেউই এক সরষে দানা পরিমাণ মহব্বত অন্তরে লালন করে মৃত্যুবরণ করবে না; তবে হ্যাঁ, সে দাজ্জালের দেখা যদি তার জীবনে পায়, তাহলে সে তাকে অনুসরণ করবে, নতুবা সে তার কবরে দাজ্জালকে বিশ্বাস করবে।” এটা স্পষ্ট যে হযরত হুযায়ফা (রা:) মহানবী (দ:)-এর কাছ থেকে এ কথা শুনেছিলেন, কেননা এ ধরনের কথা মতামতের ভিত্তিতে বলা যায় না।
Reference :-
♦আত্ তাবারানী সহীহ সনদে হযরত (আবু) মাসউদ (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “আমরা কোনো জ্বেহাদে  মহানবী (দ:)-এর সাথে ছিলাম যখন মুসলমানদের খাদ্য সংকট দেখা দেয়। আমি তাঁদের মুখমন্ডলে হতাশার ছাপ দেখতে পাই, আর এর বিপরীতে মোনাফেকদের চেহারায় দেখি আনন্দ। এই পরিস্থিতি দেখে রাসূলুল্লাহ (দ:) বলেন, ‘আমি আল্লাহর নামে কসম করে বলছি, আল্লাহ তোমাদের জন্যে খাবার ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত সূর্য অস্তমিত হবে না।’ হযরত উসমান (রা:) আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (দ:)-এর ইচ্ছা নিশ্চিত জেনে চৌদ্দটি সওয়ার-ভর্তি খাবার এনে ওর মধ্যে নয়টি মহানবী (দ:)-এর খেদমতে পেশ করেন। মুসলমানদের চেহারায় খুশির ভাব ফুটে ওঠে, পক্ষান্তরে মোনাফেকদের মুখ ভার হয়ে যায়। আমি দেখতে পাই মহানবী (দ:) (দোয়ায়) হাত তোলেন যতোক্ষণ না তাঁর বগলের সাদা অংশ দেখা যায়; তিনি হযরত উসমান (রা:)-এর জন্যে এমন দোয়া করেন, যা আমি ইতিপূর্বে আর কারো জন্যেই তাঁকে করতে দেখি নি।” 
Reference : -
♦হযরত ইবনে মাসউদ (রা:) থেকে নয়, বরং হযরত আবু মাসউদ (রা:) থেকে ইমাম আহমদ তাঁর ‘ফযায়েলে সাহাবা’ কেতাবে (১:২৩৪ #২৮৭),  
♦আত্ তাবারানী দুর্বল সনদে সাঈদ ইবনে মোহাম্মদ আল-ওয়াররাক হতে নিজ ‘আল-কবীর’(১৭:২৪৯-২৫০ #৬৯৪) ও 
♦‘আল-আওসাত’ (৭:১৯৫-১৯৬ #৭২৫৫) গ্রন্থগুলোতে বর্ণিত; 
♦যদিও আল-হায়তামী (৯:৮৫-৯৬=৯:১১৩-১১৫ #১৪৫২৩, #১৪৫৬০) 
♦ইমাম তাবারানী (রহ:)-এর সনদকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন।


♦আল-বায়হাকী হযরত উরওয়া (রা:) থেকে রওয়ায়াত করেন যে মহানবী (দ:) যখন হুদায়বিযায় উপস্থিত হন, তখন তিনি হযরত উসমান (রা:)-কে কুরাইশদের কাছে পাঠান এ কথা বলে, “তাদেরকে বলো, আমরা যুদ্ধ করতে আসি নি, শুধু ওমরাহ হজ্জ্ব ও ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতে এসেছি।” তিনি আরও আদেশ করেন যেন হযরত উসমান (রা:) মক্কাবাসী ঈমানদার নর-নারীদেরকে আসন্ন বিজয়ের খোশ-খবরী দেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় সেখানে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে তাঁদের ধর্ম-বিশ্বাস যে আর উপহাসের বিষয় হবে না, তাও জানাতে। হযরত উসমান (রা:) কুরাইশদের কাছে হুযূর পাক (দ:)-এর বার্তা পৌঁছে দেন, কিন্তু তারা তা প্রত্যাখ্যান করে এবং যুদ্ধ করার ঘোষণা দেয়। এমতাবস্থায় রাসূলে খোদা (দ:) সকল মুসলমানকে সমবেত করেন এবং আনুগত্যের শপথ নেন। এই সময় কেউ একজন উচ্চস্বরে বলেন, ”দেখো, নিশ্চয় জিবরীল আমীন এখানে মহানবী (দ:)-এর কাছে
 অবতীর্ণ হয়েছেন।” মুসলমানগণও তখন নবী পাক (দ:)-কে ছেড়ে না যাবার অঙ্গীকার করেন। আল্লাহর মহিমায় এতে মূর্তি পূজারীরা ভয় পেয়ে যায় এবং এর দরুণ তারা ইতিপূর্বে যতো মুসলমানকে বন্দি করেছিল, তাঁদের সবাইকে ছেড়ে দেয়, আর সন্ধি স্থাপনের প্রস্তাব দেয়।  
♦হযরত উসমান (রা:)-এর প্রত্যাবর্তনের আগে হোদায়বিয়ায় অবস্থানকালে মুসলমানগণ বলাবলি করতে থাকেন যে তিনি কাবায় পৌঁছে তওয়াফ করেছেন; এমতাবস্থায় হুযূর পূর নূর (দ:) বলেন, “আমরা অবরুদ্ধ থাকাকালীন আমি মনে করি না উসমান (কাবাকে) তওয়াফ করবে।” তিনি ফিরে এলে পরে মানুষেরা তাঁকে বলেন, “আপনি কাবার তাওয়াফ করেছেন।” 
হযরত উসমান (রা:) উত্তর দেন: “এই চিন্তা মাথা থেকে দূর করে দাও! সেই মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! মহানবী (দ:)-কে হুদায়বিয়ায় রেখে আমি ওখানে এক বছরের জন্যে বসতি স্থাপন করলেও মহানবী (দ:)-এর আগে আমি কাবাকে তাওয়াফ করতাম না। কুরাইশ গোত্র আমাকে তা করতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, কিন্তু আমি তা ফিরিয়ে দেই।” অতঃপর মুসলমানগণ বলেন, “রাসূলুল্লাহ (দ:)-ই আমাদের মাঝে আল্লাহকে সবচেয়ে ভাল জানেন এবং তিনি-ই সর্বোত্তম মতের অধিকারী।” 
Reference :-
♦হযরত ‘উরওয়া (রা:) থেকে এটি বর্ণনা করেন ইবনে আসাকির নিজ ‘তারিখে দিমাশ্ক’ গ্রন্থে (৩৯:৭৬-৭৮), 
♦আল-বায়হাকী তাঁর ‘আস্ সুনান আল-কুবরা’ পুস্তকে (৯:২১৮-২২১), এবং
♦ ইবনে আবি শায়বা; 
♦ ইবনে সা’আদ (২:৯৭)
♦ইবনে কাসীরের তাফসীর (৪:১৮৭), 
♦আওন আল-মা’বুদ (৭:২৮৯)।]
হযরত আলী (ক:)
হযরত আবু রাফি’ (রা:)-এর স্ত্রী হযরত সালমা (রা:) থেকে আত্ তাবারানী বর্ণনা করেন, যিনি বলেন: “আমি (এখনো) নিজেকে মহানবী (দ:)-এর হুযূরে (উপস্থিতিতে) দেখতে পাচ্ছি যখন তিনি বলেন, ‘বেহেশতী এক ব্যক্তি এক্ষণে তোমাদের সামনে উপস্থিত হবে।’ আর দেখো! আমি কারো পদশব্দ শুনতে পাই, অতঃপর হযরত আলী (ক:) (মজলিশে) হাজির হন।” 
Reference :-
♦হযরত রাফি’ (রা:)-এর স্ত্রী হযরত সালমা (রা:) থেকে আত্ তাবারানী নিজ ‘আল-কবীর’পুস্তকে (২৪:৩০১)
♦ আল-হায়তামী (৯:১৫৬-১৫৭ #১৪৬৯৩)।]
হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা:) থেকে আল-হাকিম ও আল-বায়হাকী বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “আমরা একবার রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর সাথে ছিলাম; এমন সময় তাঁর স্যান্ডেলের ফিতা ছিঁড়ে যায়। হযরত আলী (ক:) তা সারাতে পেছনে পড়ে থাকেন। এমতাবস্থায় নবী পাক (দ:) কিছু দূর হাঁটার পর এরশাদ ফরমান, ‘সত্য হলো, তোমাদের মাঝে কেউ একজন কুরআন মজীদের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ (তাফসীর) নিয়ে জেহাদ (কঠিন সাধনা, সংগ্রাম) করবে, যেমনিভাবে আমি সংগ্রাম করেছি এর নাযেল (অবতীর্ণ) হওয়া নিয়ে।’ হযরত আবু বকর (রা:) জিজ্ঞেস করেন, ‘সেই ব্যক্তি কি আমি?’ হুযূর পূর নূর (দ:) উত্তরে ’না’ বলেন। অতঃপর হযরত উমর (রা:) জিজ্ঞেস করেন, ‘তাহলে কি আমি?’ রাসূলে করীম (দ:) এরশাদ ফরমান, ‘না, ওই স্যান্ডেল মেরামতকারী (খাসিফ আন-না’আল)।’ 
Reference :-
♦হযরত আবু সাঈদ আল-খুদরী (রা:) হতে সহীহ সনদে ইমাম আহমদ বর্ণিত, যা বিবৃত করেছেন আল-হায়তামী (৯:১৩৩); 
♦আল-আরনাওত’ (১৫:৩৮৫ #৬৯৩৭)
♦সহিহ সনদে ইবনে হিব্বান
♦এটাকে সহীহ বলেছেন আল-হাকিম (৩:১২২),
♦ আয্ যাহাবী নিজ ‘তালখিস আল-’এলাল আল-মুতানাহিয়া কেতাবে (পৃষ্ঠা ১৮) বলেন: “এই হাদীসের সনদ ভাল।”
♦আল-বাগাবী তাঁর ‘শারহ আল-সুন্নাহ’ গ্রন্থে (১০:২৩৩), 
♦আবু এয়ালা স্বরচিত ‘মুসনাদ’ বইয়ে (#১০৮৬), 
♦সাঈদ ইবনে মনসুর তাঁর ‘সুনান’ পুস্তকে, 
♦ইবনে আবি শায়বা (১২:৬৪), 
♦আবু নুয়াইম নিজ ‘হিলইয়া’ কেতাবে, এবং 
♦আল-বায়হাকী তাঁর ‘দালাইল আন্ নুবুওয়া’ গ্রন্থে (৬:৪৩৫) 
♦শুয়াবুল ঈমান’ পুস্তকে

হযরত আলী (ক:) থেকে আত্ তাবারানী বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “হযূর পূর নূর (দ:) আমার কাছ থেকে ওয়াদা নিয়েছেন যে আমাকে বিশ্বাসঘাতক, প্রতারক/ধোকাবাজ ও ধর্মচ্যুত (আল-নাকিসীন ওয়াল-ক্কাসিতীন ওয়াল-মারিক্কীন)-দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। 
Reference :-
♦হযরত আলী (ক:) হতে হযরত আলী ইবনে রাবেয়া এবং তাঁর কাছ থেকে আল-বাযযার, আর আবু ইয়ালা (১:৩৯৭ #৫১৯)-এর সনদে রয়েছেন আল-রাবী’ ইবনে সাহল 
♦ ইবনে হাজর রচিত ‘লিসান আল-মিযান’ (২:৪৪৬ #১৮২৭);
♦ ইবনে হাজর এর অর্থকে সত্য হিসেবে বিবেচনা করেন। একে হযরত আম্মার ইবনে এয়াসের (রা:)-এর বর্ণিত বলেও উদ্ধৃত করেন আবু এয়ালা (৩:১৯৪ #১৬২৩)।] 


♦আল-হুমায়দী, আল-হাকিম এবং অন্যান্য হাদীসবেত্তা হযরত আবুল আসওয়াদ (আল-দুয়ালী) রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “হযরত আলী (ক:) রেকাবে (অশ্বে পা রাখার স্থানে) পা রাখামাত্র হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা:) এসে তাঁকে বলেন, ‘ইরাকবাসীদের কাছে যাবেন না! যদি যান, তাহলে তরবারির আঘাতসমূহ আপনার ওপর পড়বে।’ হযরত আলী (ক:) উত্তর দেন, ‘আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, আপনার এ কথা বলার আগে মহানবী (দ:)-ও একই কথা বলেছেন’।”
 Reference :-
♦হযরত আলী (ক:) হতে হযরত আবুল আসওয়াদ (রা:) হতে আল-হুমায়দী তাঁর ’মুসনাদ’ গ্রন্থে (১:৩০ #৫৩), 
♦আল-বাযযার (২:২৯৫-২৯৬ #৭১৮), 
♦আবু ইয়ালা (১:৩৮১ #৪৯১), 
♦আত্ তাবারানী নিজ ‘আল-আহাদ’ পুস্তকে (১:১৪৪ #১৭২),
♦ ইবনে হিব্বান (১৫:১২৭ #৬৭৩৩), এবং 
♦আল-হাকিম (৩:১৪০=১৯৯০ সংস্করণের ৩:১৫১)
♦আল-হায়তামী (৯:১৩৮) এবং 
♦’হাসান’ (নির্ভরযোগ্য) বলেছেন আল-আরনাওত; 
♦ জিয়া আল-মাকদেসী একে বিশুদ্ধ রওয়ায়াত বলে মত প্রকাশ করেন তাঁর প্রণীত ‘আল-মুখতারা’ গ্রন্থে (২:১২৮-১২৯ #৪৯৮)।]
আবু নুয়াইম হযরত আলী (ক:) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “রাসূলুল্লাহ (দ:) আমাকে বল্লেন, ‘(ভবিষ্যতে) অনেক ফিতনা-ফাসাদ হবে এবং তোমার লোকেরা তোমার সাথে দ্বিমত পোষণ করবে।’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি আমাকে (ওই সময়) কী করার নির্দেশ দেন?’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘কেতাব (কুরআন মজীদ) অনুযায়ী শাসন করো’।” 
Reference :-
♦হযরত আলী (ক:) হতে দুর্বল বর্ণনাকারী শিয়াপন্থী আল-হারিস ইবনে আব্দিল্লাহ আল-আ’ওয়ার বর্ণিত এবং 
♦আত্ তাবারানী কৃত ‘আল-আওসাত’ গ্রন্থে (২:২৯-৩০ #১১৩২) 
♦আল-সগীর পুস্তকে (২:১৭৪ #৯৭৮) 
♦আতা’ ইবনে মুসলিম আল-খাফফাফ যিনি আল-উকায়লী প্রণীত আল-দু’আফা বইয়ের (৩:৪০৫ #১১৪৩) ভাষ্যানুযায়ী দুর্বল রাবী।]
♦ হযরত আলী (ক:) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “(হযরত) ফাতেমা (রা:)-এর পাণি গ্রহণের প্রস্তাব দেয়া হয় মহানবী (দ:)-এর কাছে (কিন্তু তিনি তা নাকচ করেন); এমতাবস্থায় আমার এক দাসী (যাকে পরবর্তীকালে মুক্ত করা হয়) আমাকে বলে, ‘আপনি কি শুনেছেন হযরত ফাতেমা (রা:)-এর বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল? তাহলে এ ব্যাপারে (পাণি গ্রহণের প্রস্তাব নিয়ে) মহানবী (দ:)-এর সাথে দেখা করায় আপনাকে বাধা দিচ্ছে কী?’ আমি নবী পাক (দ:)-এর সাথে দেখা করতে গেলাম, আর তাঁর চেহারা মোবারক ওই সময় সৌম্য ভাবময় ছিল। আমি তাঁর সামনে দাঁড়াতেই ভয়ে স্থির হয়ে গেলাম। আল্লাহর শপথ, আমি একটি কথাও বলতে পারলাম না। রাসূলুল্লাহ (দ:) ফরমালেন, ‘কী কারণে তোমার এখানে আসা, বলো?’ আমি চুপ রইলাম। অতঃপর তিনি বল্লেন, ‘হয়তো তুমি ফাতেমার পাণি গ্রহণের প্রস্তাব নিয়ে এসেছ?’ আমি বল্লাম, জ্বি।”
Reference :-
♦আল-বায়হাকী তাঁর ‘আল-সুনান আল-কুবরা’ কেতাবে (৭:২৩৪ #১৪১২৯) এবং
♦আল-দুলাবী নিজ ‘আল-যুররিয়্যা আল-তাহেরা’ পুস্তকে (পৃষ্ঠা ৬৪),
♦’কানয’ গ্রন্থে (#৩৭৭৫৪)।


আল-হাকিম নির্ভরযোগ্য রওয়ায়াত হিসেবে এবং আবু নুয়াইম হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসের (রা:) থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলে করীম (দ:) হযরত আলী (ক:)-কে বলেন: “মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বড় অপরাধী হলো সে-ই, যে ব্যক্তি তোমার এখানে (কপালের পাশে দেখিয়ে বলেন) আঘাত করবে, যতোক্ষণ না রক্তে এটা (দাড়ি দেখিয়ে বলেন) ভিজে যায়।”
Reference :-
এই রওয়ায়াত এসেছে -
(১) হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসের (রা:) হতে বিশুদ্ধ সনদে, যা বিবৃত হয়েছে
♦ইমাম সৈয়ুতী কৃত ‘তারিখ আল-খুলাফা’ গ্রন্থে (পৃষ্ঠা ১৭৩),
♦ইমাম আহমদ প্রণীত ’মুসনাদ’ কেতাবে, আন-নাসাঈ লিখিত ‘আল-সুনান আল-কুবরা’ পুস্তকে (৫:১৫৩ #৮৫৩৮),
♦আবু নুয়াইমের রচিত ‘দালাইল আন-নুবুওয়া’ বইয়ে (পৃষ্ঠা ৫৫২-৫৫৩ #৪৯০), এবং
♦আল-হাকিম (৩:১৪০-১৪১), আর এ ছাড়াও সনদের মধ্যে একজন বর্ণনাকারীর অনুপস্থিতিতে হযরত আম্মার (রা:) হতে তাবেঈ আল-বাযযার (৪:২৫৪ #১৪২৪);

(২) হযরত জাবের ইবনে সামুরা (রা:) হতে
♦আবু নুয়াইম নিজ ‘দালাইল’ পুস্তকে (পৃষ্ঠা ৫৫৩ #৪৯১) -
♦আস-সৈয়ুতীর ‘খাসাইসুল কুবরা’ (২:৪২০);

(৩) হযরত আলী (ক:) হতে শিয়াপন্থী
♦সালাবা ইবনে ইয়াযিদ আল-হিম্মানী রওয়ায়াতকৃত এবং লিপিবদ্ধ রয়েছে
♦ইবনে সা’আদ (৩:৩৪),
♦ইবনে আবি হাতিম,
♦আবু নুয়াইম কৃত ’দালাইল’ (পৃষ্ঠা ৫৫২ #৪৮৯),
♦ইবনে আবদিল বারর প্রণীত ‘আল-এস্তিয়াব’ (৩:৬০),
♦ আল-নুয়াইরী লিখিত ‘নিহায়াত আল-আরব’ (২০:২১১);
 (৪) হযরত আলী (ক:) হতে সুহাইব, যা লিপিবদ্ধ আছে
♦আত্ তাবারানীর ‘আল-কবীর’ গ্রন্থে (৮:৩৮-৩৯ #৭৩১১),
♦ইবনে আবদিল বারর-এর ’আল-এস্তিয়াব’ পুস্তকে (৩:১১২৫),
♦ইবনে আসাকির,
♦আল-রুয়ানী,
♦ইবনে মারদুইয়াহ, এবং
♦আবু ইয়ালা (১:৩৭৭ #৪৮৫)।
♦’কানয’ (#৩৬৫৬৩, #৩৬৫৭৭-৮, #৩৬৫৮৭),
♦ইবনুল জাওযীর ‘সিফাতুস্ সাফওয়া’ (১:৩৩২), এবং
♦আল-হায়তামী (৯:১৩৬);

 (৫) হযরত আলী (ক:) হতে
♦হাইয়ান আল-আসাদী, যা লিপিবদ্ধ আছে আল-হাকিমে (৩:১৪২); এবং
 (৬) মওকুফ বর্ণনা - হযরত আলী (ক:) হতে যায়দ ইবনে ওয়াহব, যা লিপিবদ্ধ করেছেন
♦ আল-হাকিম (৩:১৪৩) ও
♦ইবনে আবি আসিম নিজ ‘আল-যুহদ’ কেতাবে (পৃষ্ঠা ১৩২)।
♦আল-তালিদী এই বর্ণনা তাঁর ‘তাহযিব আল-খাসাইস’ পুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করেন নি।]

আবু নুয়াইম অনুরূপ বর্ণনা করেছেন জাবের ইবনে সামুরা ও সুহাইব থেকে। আল-হাকিম রওয়ায়াত করেন হযরত আনাস (রা:)-এর কথা, তিনি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর সাথে অসুস্থ হযরত আলী (ক:)-কে দেখতে যাই, যিনি শয্যাশায়ী ছিলেন; এই সময় হযরত আবু বকর (রা:) ও হযরত উমর (রা:)-ও তাঁকে দেখতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের একজন অপরজনকে বলছিলেন, “আমার মনে হয় না তিনি বাঁচবেন।” এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (দ:) এরশাদ ফরমান: “নিশ্চয় সে শাহাদাত ছাড়া মারা যাবে না।”
Reference :-
♦আল-হাকিম (৩:১৩৯=১৯৯০ সংস্করণের ৩:১৫৫);

♦আল-হাকিম বর্ণনা করেন হযরত সাওর ইবনে মিজযা’আ (রা:) থেকে, তিনি বলেন: “উটের (যুদ্ধের) দিবসে আমি হযরত তালহা (রা:)-এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম, আর ওই সময় তিনি (মাটিতে শায়িত অবস্থায়) প্রায় ইন্তেকাল করার পর্যায়ে ছিলেন। তিনি আমাকে বল্লেন, ‘তুমি কোন্ পক্ষ?’ আমি উত্তর দিলাম, ‘ঈমানদারদের খলীফার বন্ধুদের দলে।’ তিনি বল্লেন, ‘তোমার হাত বাড়িয়ে দাও যাতে আমি তোমার কাছে আনুগত্যের শপথ নিতে পারি।’ আমি আমার হাত বাড়িয়ে দিলাম এবং তিনি আমার প্রতি আনুগত্যের শপথ নিলেন। এর পরপরই তিনি ইন্তেকাল করলেন, আর আমিও হযরত আলী (ক:)-এর কাছে ফেরত গিয়ে সমস্ত ঘটনা খুলে বল্লাম। তিনি বল্লেন, ‘আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ! রাসূলুল্লাহ (দ:) সত্য বলেছিলেন এই মর্মে যে আল্লাহতা’লা তালহাকে আমার প্রতি দৃঢ় আনুগত্যের শপথ গ্রহণ ছাড়া বেহেশতে নেবেন না’।”
Reference :-
♦আল-হাকিম (১৯৯০ সংস্করণের ৩:৪২১);
♦ ইবনে হাজর তাঁর ’আল-আতরাফ’ (এতরাফ আল-মুসনাদ আল-মু’তালী বি আতরাফ আল-মুসনাদ আল-হাম্বলী) পুস্তকে এটাকে ‘অত্যন্ত দুর্বল সনদ’ বলেছেন যা বিবৃত হয়েছে ‘কানয’পুস্তকে (#৩১৬৪৬)।]

♦আল-বায়হাকী রওয়ায়াত করেন ইবনে এসহাকের মাধ্যমে, তিনি বলেন: “এয়াযিদ ইবনে সুফিয়ান আমার কাছে বর্ণনা করেন মোহাম্মদ ইবনে কাআব হতে এই মর্মে যে, হুদায়বিয়ার সন্ধিতে রাসূলে করীম (দ:)-এর কাতেব বা লেখক ছিলেন হযরত আলী (ক:); হুযূর পাক (দ:) তাঁকে বলেন, ‘লেখো, এগুলো মোহাম্মদ ইবনে আবদিল্লাহ (দ:) ও সোহায়ল ইবনে উমরের মধ্যকার সন্ধির শর্তাবলী।’ হযরত আলী এটা লিখতে রাজি হলেন না। তিনি ’আল্লাহর প্রেরিত রাসূল’ বাক্যটি ছাড়া এই সন্ধিপত্র লিখতে সম্মত ছিলেন না। এমতাবস্থায় নবী পাক (দ:) তাঁকে বলেন, ‘এটা লেখো, কেননা নিশ্চয় তুমি অনুরূপ কিছু ভোগ করবে এবং অন্যায় আচরণের শিকার হবে’।”
Reference :-
♦আল-বায়হাকীর ‘দালাইল’ গ্রন্থে উদ্ধৃত যা ‘মাগাযী’পুস্তকে
♦ইবনে এসহাকের বর্ণনার অনুসরণে
লিপিবদ্ধ; দেখুন - আস্ সৈয়ুতী কৃত ‘খাসাইসে কুবরা’ (১:১৮৮), ’সীরাতে হালাবিয়্যা’ (২:৭০৭)
আল-খুযাঈ প্রণীত ‘তাখরিজাত আল-দেলালাত’ (১৯৯৫ সংস্করণের ১৭৮ পৃষ্ঠা=১৯৮৫ সংস্করণের ১৮৮ পৃষ্ঠা)।]


আর এটাই ঘটেছিল সিফফিন যুদ্ধের পরে হযরত আলী (ক:) ও হযরত মোআবিয়া (রা:)-এর মধ্যকার সন্ধির সময়। ইমাম আবদুল্লাহ ইবনে আহমদ তাঁর ’মুসনাদ’ গ্রন্থের পরিশিষ্টে এবং এর পাশাপাশি আল-বাযযার, আবু এয়ালা ও আল-হাকিম হযরত আলী (ক:) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “মহানবী (দ:) আমাকে বলেন, ‘তোমার সাথে হযরত ঈসা (আ:)-এর এক সাদৃশ্য আছে; ইহুদীরা তাঁকে এতো ঘৃণা করেছিল যে তারা তাঁর মাকে অপবাদ দিয়েছিল; আর খৃষ্টানরা এতো ভালোবেসেছে যে তারা তাঁকে এমন মর্যাদার আসনে আসীন করেছে যা তাঁর নয়’।”
Reference :-
♦আবু মরইয়াম এবং আবু আল-বখতারী কিংবা আবদুল্লাহ ইবনে সালামা - এই দু’জনের কোনো একজন থেকে আবদুল্লাহ ইবনে আহমদ নিজ ‘আল-সুন্নাহ’ গ্রন্থে (পৃষ্ঠা ২৩৩-২৩৪ #১২৬৬-১২৬৮),
♦আল-হারিস ইবনে আব্দিল্লাহ হতে ইবনে আব্দিল বারর তাঁর ‘আল-এস্তিয়াব’ কেতাবে (৩:৩৭),
♦আল-নুওয়াইরী স্বরচিত ‘নিহায়াত আল-আরব’ পুস্তকে (২০:৫) এবং
♦আবু আল-হাদিদ কৃত ‘শরহে নাজহ আল-বালাগা’ (১:৩৭২)।]

No comments:

Post a Comment