Friday, September 11, 2015

হাদিসের ভুল ব্যাখ্যায় মাযার ভাংগার ভ্রান্ত ফতোয়ার বিশ্লেষণ :

আমাদের সমাজের অনেকেই নিম্নবর্নিত হাদীসটির বিকৃত অর্থ করে সরলপ্রান মুসলিমগনকে ধোঁকা দিচ্ছে হাদীসটি হল:
হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি হযরত আবুল হাইয়্যাজ আসাদী (রাঃ) এর উদ্দেশ্যে বলেন, আমি কি আপনাকে এমন কাজের প্রতি সাহিত করব না, যা করার জন্য আমাকে রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহিত করেছেন? আর তা হল ফটো না মিটিয়ে তা হাত ছাড়া করবে না এবং উঁচু কবরকে সমতল না করে ছাড়বে না।
[
মুসলিম শরীফঃ ২১১৫, তিরমিযী শরীফঃ ১০৮৯, আবু দাঊদ শরীফঃ ৩২১]
এই হাদিসের উপর ভিত্তি করে তারা সাহাবায়ে কেরাম এবং আহলে বায়েত এর অসংখ্য মাজার ধুলিস্যাত করেছে করছে। কিন্তু যেসব কবরকে ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো সেগুলো মুসলিমগনের কবর ছিল না, ছিল কাফিরদের কবর। রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে হযরত আলী (রাদিঃ) যে কবরগুলো ধ্বংস করেছিলেন তা কখনো সাহাবায়ে কেরামের কবর হতে পারেনা। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামের দাফন কার্জে নিজে অংশ গ্রহণ করতেন। অধিকন্তু সাহাবা কেরাম হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরামর্শ ছাড়া কোনো কাজ করতেন না। মুসলমানের যে কবর ছিলো তা সব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুমতি সাপেক্ষে হয়েছে। তাহলে ওগুলো আবার কোন সাহাবার কবর যা অবৈধ ছিলো আর হযরত আলী (রাদিঃ) তা ভেঙ্গে ফেললেন? কোন সাহাবার কবরে ফটো রাখা হয়েছিল? আসলে, সেগুলো ছিল কাফির-মুশরিকদের কবর।
সহিহ বুখারীর ব্যাখ্যাকার হযরত ইবনে হাজার আস্কালানি রহ, তার কিতাবে লিখেছেন
“.....
নবীগন ওদের অনুসারীদের কবর সমূহ বাদ দিয়ে মুশরিকদের কবর গুলো ধ্বংস করা হয়েছিলো। কেননা ওগুলো উপড়ে ফেলার কারণ ছিল তারা নবী (দঃ) নিয়ে মানহানী করত।"
[
তথ্যসূত্র: ফতহুল বারি - ২খন্ড - ২৬ পৃষ্ঠা]

কবর পাকা এর উপরে গম্বুজের প্রমাণ
-----------------------------------------
ইসলামিক ফউন্ডেশন বুখারী হাদিস নং ১৩০৮ আর তৌহিদ ফউন্ডেশন হাদিস নং ১৩৯০>
"
হযরত সুফিয়ান তাম্মার (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওযা উটের কুজের ন্যায় উঁচু দেখেছেন।"
হযরত আলীর (রা) হাদিস যদি কাফের-মুশরিক-মুসলমান সবার উঁচু কবর মাটির সাথে মিশিয়ে দেবার কথা বলা হতো তাহলে নবীজি (সা) এর কবর উঁচু হতো না। মক্কা বিজয়ের পর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাবা থেকে সব মুর্তি ভেঙ্গে কাবাকে পবিত্র করেছিলেন। মুর্তি ভাঙা আর মাজার ভাঙা এক জিনিস নয়। আরও কিছু সহীহ হাদিস থেকে আমরা দেখি কবর পাকা করা না জায়েজ কিনা।
উক্ত কিতাবদ্বয়ের পরবর্তী হাদিস> "হযরত উরওয়া (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ওয়ালিদ ইবনে আব্দুল মালিকের শাসনামলে (৮৬ হিজরীতে) একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওযা মুবারকের এক দিকের দেয়াল ধসে গেলে সাহাবায়ে কেরাম তা মেরামত শুরু করেন। মেরামতের সময় হঠাত এক খানা পা দৃষ্টি গোচর হল। উপস্থিত লোকজন মনে করলেন হয়তোবা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পা মুবারক হতে পারে। কিন্তু তথায় উপস্থিত হযরত উরওয়া রা (হযরত আয়েশা রা এর ভাগিনা) সমবেত লোকদের উদ্দেশ্যে বললেন, না আল্লাহর কসম, এটা নবী করীম (সা) এর পা মুবারক নয়। এটা তো হযরত উমর (রা) এর পা।" এটা বুঝা গেল সাহাবা কেরামই সর্ব প্রথম নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, হযরত আবু বক্কর (রা) হযরত ঊমর (রা) এর রওযা পাকা করেছিলেন।
উল্লেখ্য যে, হযরত উমর (রা) উম্মুল মুমেনিন হযরত জয়নাব বিনতে জাহাশ (রা) এর মাজারের উপর গম্বুজ নির্মাণ করেছিলেন। উম্মুল মুমেনিন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা) মক্কায়্য অবস্থিত তাঁর ভাই হযরত আব্দুর রাহমান (রা) এর কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ করেন। তায়েফে অবস্থিত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) এর কবরের উপর বিশিষ্ট তাবীঈ মুহাম্মাদ বিন হানফিয়া () গম্বুজ নির্মাণ করেছিলেন। (দেখুন মুন্তাকা সরহে মুয়াত্তা বাদায়ে সানায়ে।
কবরকে নামাজের স্থান বানাতে নিষেধ করা হয়েছে কিন্তু কবর জিয়ারত বা কবর ধ্বংস করতে বলা হয়নি। বরং কবর জিয়ারত করলে মৃত্যুর কথা স্মরণ হবে সে কথাও হাদিসে এসেছে। কবর বা মাজার ভাঙা এসব ওহাবী আকিদা আর তারাই সন্ত্রাসির মাধ্যমে ইসলামকে কলুসিত করে যাচ্ছে। আল্লাহ আমাদেরকে তাদের কুমন্ত্রনা থেকে রক্ষা করুণ


No comments:

Post a Comment