Friday, September 11, 2015

ইমামে আজম আবু হানিফা (রহ) এর শানে বাতিলের অপপ্রচারের দাঁতভাঙা জবাব

ইমামে আজম আবু হানিফা (রহ) এর শানে বাতিলের অপপ্রচারের দাঁতভাঙা জবাব



আজকাল কিছু বাতিল ওহাবী সালাফী চনুপুটির দল দু এক কলম জ্ঞান নিয়েই কুরআন হাদিসের পুরো জ্ঞান জেনে ফেলেছে মনে করে। যারা নাকি ইমামে আজম আবু হানিফা (রহ) এর পায়ের জুতার ধুলার সমতুল্যও না। তাদের বিভিন্ন অভিযোগ :-

১) ইমামে আজম নাকি দ্বয়ীফ হাদিস বর্ননা কারি ছিলেন তাও আবার কত গুলো ইমাম থেকে বানোয়াট বক্তব্য এনে এগুলো প্রমান করার অপচেষ্টা । (নাউযুবিল্লাহ )

২) ওনার কোন বর্ননা সেজন্য নাকি বুখারী শরীফে নেই।

৩) ওনি নাকি মুর্জিয়া ছিলেন।

৪) ওনার দখল হাদিসের ব্যাপারে কম ছিল তাই বেশি কিতাব লিখেন নি
ইত্যাদি ইত্যাদি  নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক


তাদের সকল প্রশ্নের দাতভাংগা জবাব :-

♦♦ইমামে আজম কি ভাবে দুর্বল বর্ননাকারী হতে পারেন যার শিক্ষাদানে গড়া সকল হাদিস বিশারদ ও ফকীহ?♦♦


আহলে হাদিস D. Jakir Naik এর কি ধারনা আবু হানিফা রহ. কুরআন ও হাদীস জানতেন না
বা কুরআন ও হাদীস বাদ দিয়ে বাইবেল ও গীতা থেকে মাসআলা বের করেছে !!!!!

1. ইমাম বোখারীর অন্যতম উস্তাদ মক্কী বিন ইব্রাহীম (রহ.) (মৃতু- 215 হিঃ) যার সনদে ইমাম বুখারী (রহ.) অধিকাংশ ‘সুলাসিয়্যাত হাদীস’ বর্ণনা করেছেন। এই মক্কী বিন ইব্রাহীম (রহ.) ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর ছাত্র। তিনি ইমাম আবু হানীফা (রহ.) সম্পর্কে বলেন,
“আবু হানীফা তাঁর সময়কালের শ্রেষ্ঠ আলেম ছিলেন” - মানাক্বেবে ইমাম আজম রহ. 1/95

আবার হাফিয মযযী (রহ.) বলেন: মক্কী বিন ইব্রাহীম ইমাম আবু হানীফা (রহ.) সম্পর্কে বলেন,
“তিনি তাঁর কালের সবচে’ বড় আলিম ছিলেন” – তাহ্যীবুত তাহযীব-এর টিকা- 10ম খন্ড, 452পৃ.

(এখানে একটি কথা বিশেষভাবে স্মরণ রাখতে হবে, প্রাচীন আলিমগণ ‘ইলম’ বলতে ‘ইলমে হাদীস’ই বুঝাতেন। তাই ইমাম আবু হানীফা (রহ.) কে বড় আলিম বলার অর্থ- ‘হাদীস শাস্ত্রের বড় আলিম’ এতে কোন সন্দেহ নেই।)

2. ইমাম আবু দাউদ বলেন,
নিঃসন্দেহে আবু হানীফা ছিলেন একজন শেষ্ঠ ইমাম।- তাহজীব 1/445

3. জরহে তাদিলের (সনদ পর্যালোচনা শাস্ত্র) অন্যতম ইমাম ইয়াহ্‌ইয়া ইবনে মুঈন (মৃতু- 233হিঃ) বলেন,
“আবু হানীফা ছিলেন হাদীস শাস্ত্রের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি”- তাহবীবুত্তাহজীব 5/630

4. আলী ইবনে মাদানী (মৃতু- 234 হিঃ) বলেন,
“আবু হানীফা হাদীস শাস্ত্রে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। তার মধ্যে কোন দোষক্রুটি ছিল না। - জামঈ বয়ানিল ইল্ম 2/1083

5. প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস হাফিজ ইয়াহ্ইয়া বিন হারুন (মৃতু- 206 হিঃ) বলেন,
“আবু হানীফা ছিলেন সমকালীন শ্রেষ্ঠতম জ্ঞানী ও সত্যবাদী” –আহবারে আবু হানীফা 36

6. আল্লামা হাফিয ইবনে হাজার আসক্বালানী রহ. বলেন-
“ইমাম আবু হানীফা রহ.-র মুত্যু সংবাদ শুনে ফিক্বাহ ও হাদীস শাস্ত্রের সুপ্রসিদ্ধ ইমাম, শাফঈ মাযহাবের প্রধানতম সংকলক হযরত ইবনে জরীহ রহ. গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছিলেন,
“আহ! ইলমের কি এক অফুরন্ত খনি আজ আমাদের হাতছাড়া হলো”। -

তাহযীবুত্তাহযীব খন্ড ১, পৃ: ৪৫০)

7: একবার হযরত ইয়াহয়া ইবনে মুঈনকে প্রশ্ন করা হলো- হাদীসশাস্ত্রে আবু হানীফা রহ. কি আস্থাভাজন ব্যক্তি? সম্ভবতঃ প্রচ্ছন্ন সংশয় আঁচ করতে পেরে দৃপ্তকন্ঠে তিনি উত্তর দিলেন- হ্যা, অবশ্যই তিনি আস্থাভাজন! অবশ্যই তিনি আস্থাভাজন! (মানাকিবুল ইমামমুল আ’যামি লিলমাওয়াফিক- খন্ড:1, পৃষ্ঠা 192)

♦♦ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর নসিহত। তিনি কুরআন হাদিস দিয়ে মানুষকে সকল সমাধান দিতেন নিচের উক্তিগুলো দিয়ে বুঝে নিন♦♦

(ক) ‘যখন ছহীহ হাদীছ পাবে, জেনো সেটাই আমার মাযহাব’।(হাশিয়াহ ইবনে আবেদীন ১/৬৩।)
(খ) ‘আমরা কোথা থেকে গ্রহণ করেছি, তা না জেনে আমাদের কথা গ্রহণ করা কারো জন্য বৈধ নয়’।(ঐ ৬/২৯৩।)
(গ) ‘যে ব্যক্তি আমার দলীল জানে না, আমার কথা দ্বারা ফৎওয়া প্রদান করা তার জন্য হারাম’।(ড. অছিউল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আব্বাস, আত-তাক্বলীদ ওয়া হুকমুহু ফী যুইল কিতাব ওয়াস-সুন্নাহ, পৃঃ ২০।)
(ঘ) ‘নিশ্চয়ই আমরা মানুষ। আমরা আজকে যা বলি, আগামীকাল তা থেকে ফিরে আসি’।(ঐ।)
(ঙ) ‘তোমার জন্য আফসোস হে ইয়াকুব (আবু ইউসুফ)! তুমি আমার থেকে যা শোন তাই লিখে নিও না। কারণ আমি আজ যে মত প্রদান করি, কাল তা প্রত্যাখ্যান করি এবং কাল যে মত প্রদান করি, পরশু তা প্রত্যাখ্যান করি’।(ঐ।)
(চ) ‘আমি যদি আল্লাহর কিতাব (কুরআন) ও রাসূলুললাহ (ছাঃ)-এর কথার (হাদীছ) বিরোধী কোন কথা বলে থাকি, তাহ’লে আমার কথাকে ছুঁড়ে ফেলে দিও’।(ছালেহ ফুল্লানী, ইক্বাযু হিমাম, পৃঃ ৫০।)



তাই তিনি কুরআন হাদিস অনুযায়ী বিচার ফয়সালা করতেন এবং অন্যান্য ইমামগনের শিক্ষক ছিলেন এ জন্যই হানাফী মাযহাব সকল মাযহাবের সেরা।


★★★ ইমামে আজম একজন বিশিষ্ট তাবেয়ী ছিলেন এবং অনেক সাহাবীগনের সাথে সাক্ষাত পেয়েছিলেন★★★
তাহলে কি ভাবে তিনি হাদিসের ক্ষেত্রে দুর্বল বর্ননাকারী হবেন? Is it ever possible?

ইমামে আজম আবু হানিফা (রহ) ৮০ হিজরীতে বিলাদত শরীফ লাভ করেন এবং বিছাল শরীফ লাভ করেন ১৫০ হিজরীতে।
★তাঁর প্রকৃত নাম নু’মান বিন সাবিত।

★ইমাম আজম
আবু হানিফা (র)
ইমাম সাহেব যেসব সাহাবাদের সাক্ষাত
লাভে ধন্য হয়েছেন, কিংবা যাদের
থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন, তাঁদের কয়েকজন
হলেন :-
১. হযরত আনাস ইবনে মালেক রা. ( ৯০ হি. মতান্তরে ৯১ হি.।)।
২. হযরত আবদুল্লাহ বিন উনাইস যুহানী রা.।
৩. আবদুল্লাহ বিন আবী আওফা রা. ( ৮৭ হিজরী)।
৪. ওয়াসেলা বিন আসকা রা. (৮৫ হিজরী)।
৫. আবুত তোফায়েল আমের বিন ওয়াসেলা রা.( ১০২ হিজরী )।
৬. সহল বিন সাদ রা. ( ৮৮ হিজরী )।
৭. সায়েব বিন খাল্লাদ রা. ( ৯১ হিজরী )।
৮. সায়েব বিন ইয়াজিদ রা. ( ৯৪ হিজরী)।
৯. আবদুল্লাহ বিন বুসরাহ রা. ( ৯৬ হিজরী )।
১০. মাহমুদ বিন রাবী রা. ( ৯৯ হিজরী )


★ইমামে আযম আবু হানিফা (র.) এর
তাবেয়ী হওয়া সম্পর্কে আরো অনেকের
উক্তি রয়েছে। যেমন,
১। ইমাম ইবনুল জাওযী (র)।
২। ইমাম মিজ্জী (র)।
৩। ইমাম যাহাবী (র)।
৪। ইমাম সুয়ূতী (র)।
৫। খতীবে বাগদাদী (র)।
৬। ইবনে আবদিল বার (র)।
৭। মুহাম্মাদ ইবনে সাদ (র)।
৮। ইবনে হাজার আসকালানী (র)। প্রমুখ।
তাদের উক্তি উল্লেখ
করে প্রবন্ধের কলেবর বৃদ্ধি করা হল না।
এ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে দেখুন……



১. আবু হানিফা ওয়া আসাবুহুল মুহাদ্দিসুন(পৃ:৬)
২. আল খাইরাতুল হিসান। পৃ: ৩২।

★হাফেজ ইবনে হাজার আসক্বালানী রহ.
আরো লিখেছেন-

ইমাম আবু হানীফা রহ.
বহুসংখ্যক সাহাবীর সাক্ষাত লাভ করেছেন।
কেননা, তিনি ৮০ হিজরী সনে কুফায় জন্মগ্রহণ
করেছেন এবং সেসময় সেই
শহরে সাহাবী **আবদুল্লাহ ইবনে আবী আওফা রা.
জীবিত ছিলেন। তাঁর ইন্তেকাল ৮০ হিজরীর
অনেক পরে হয়েছে। তেমনি বসরাতে **আনাস
ইবনে মালেক রা. ছিলেন। তাঁর ইন্তেকাল
হিজরী নব্বই সনে পরে হয়েছে। সে মতে ইমাম
আবু হানীফা রহ. নিঃসন্দেহে তাবেয়ীগণের
অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। (তানসীকুন-নেজাম)

★বুখারী শরীফের ব্যাখাগ্রন্হে ইবনে হাজার
আসক্বালানী রহ. উপরোক্ত
সিদ্ধান্তটি আলেমগণের সর্বসম্মত অভিমত
বলে উল্লেখ করেছেন। হাফেজ যাহাবী রহ.
বলেন, ইমাম আবু হানীফা রহ. সাহাবী হযরত
আনাস ইবনে মালেককে রা. অনেকবার
দেখেছেন। (খাইরাতুল-হেসান)

★আল্লামা ইবনে হাজার মক্কী রহ. মেশকাত
শরীফের ব্যাখ্যা গন্হে উল্লেখ করেছেন যে,
ইমাম আবু হানীফা রহ. ৭/৮ জন সাহাবীর
সাক্ষাত লাভ করেছেন।
এঁরা হচ্ছেন-
১) হযরত আনাস ইবনে মালেক রা.
(ওফাত ৯৩ হিজরী)
২) আব্দুল্লাহ ইবনে আবী আওফা রা. (ওফাত ৮৭ হিজরী)
৩) সহল ইবনে সাআদ রা. (ওফাত ৮৮ হিজরী)
৪) আবু তোফায়ল রা. (ওফাত ১১০ হিজরী)
৫) আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়দী রা. (ওফাত ৯৯ হিজরী)
৬) জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা. (ওফাত ৯৪ হিজরী)
৭) ওয়াসেনা ইবনুল আসকা রা. (ওফাত ৮৫ হিজরী)



★তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত তাবেয়ী যিনি ৪,০০০ শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন, যে শিক্ষকদের মধ্যে স্বয়ং সাহাবা রা. ছিলেন ৭২ জন! আর তার শিক্ষকদের বেশিরভাগই ছিলেন সরাসরি হযরত আলী (রা.), আবু হুরাইরা (রা.,) আনাস (রা.) সহ অন্যান্য সাহাবীদের সরাসরি ছাত্র।

★তিনি সাহাবী হযরত আনাস ইবনে মালিক (রহ) কে দেখেছিলেন এবং অনেক সাবাহা থেকে বর্ননা করেছেন :-
**The author of al-Khairat al-Hisan collected information from books of biographies and cited the names of Muslims of the first generation from whom it is reported that the Abu Hanifa had transmitted hadith. He counted them as ** sixteen, including
**Anas ibn Malik,
**Jabir ibn Abd-Allah and
**Sahl ibn Sa'd.

তথ্যসুত্র :-
★Wikipedia >>"Imam-ul-A’zam Abū Ḥanīfah, The Theologian". Masud.co.uk. Archived from the original on 12 February 2010. Retrieved 2010-02-07.

★ইবনে সাআদ লিখেছেন- সার্বিক বিচারেই
ইমাম আবু হানীফা রহ. একজন তাবেয়ী ছিলেন।
তাঁর সতীর্থ ফেকাহর ইমামগণের মধ্যে আর
কারো এই মর্যাদা লাভের সৌভাগ্য হয় নাই।
(তানসীক্ব)

★আল্লামা খাওয়ারেজমী রহ. বলেন- ওলামাগণের
এ বিষয়ে ঐক্যমত রয়েছে যে, ইমাম আবু
হানীফা রহ. নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীগণের পবিত্র
মুখ থেকে হাদিস শ্রবণ
করে তা বর্ণনা করেছেন। তবে এরূপ হাদিসের
সংখ্যা কত ছিল, এ সম্পর্কে বিভিন্ন মত
রয়েছে। (তানসীক্ব)

★ইমাম আবু হানীফা রহ. কর্তৃক সাহাবীগণ
থেকে বর্ণিত হাদিসের সংখ্যা কারো মতে ছয়,
কারো মতে সাত এবং কারো মতে আটখানা। যেসব
সাহাবী থেকে তিনি হাদিস
বর্ণনা করেছিলেন, তাঁদের নাম যথাক্রমে –
১) আনাস ইবনে মালেক রা.,
২) আবদুল্লাহ ইবনে আবী আওফা রা.,
৩) সহল আবনে সাআদ রা.,
৪) আবু তোফয়ল রা.,
৫) আমের ইবনে ওয়াছেলা রা.,
৬) ওয়াছেলা ইবনে আশক্বা রা.,
৭) মা’কাল ইবনে ইয়াসার রা., এবং
৮) জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা. প্রমুখগণ।

★হাদিস শাস্ত্রের ‘ আমিরুল মুমেনীন’ রূপে খ্যাত
আবদুল্লাহ ইবনে মোবারক স্বরচিত কবিতার এক
পংক্তিতে উল্লেখ করেছেন যে, নোমান ( আবু
হানীফা ) এর পক্ষে গর্ব করার মতো এতটুকুই
যথেষ্ট যা তিনি সরাসরি সাহাবীগণের নিকট
থেকে বর্ণনা করেছেন।

★★★ইমামে আজম সরাসরি যে সমস্ত হাদিস স্বয়ং সাহাবায়ে কেরাম (রা) থেকে
বর্ন্না করেছেন :-

★ইমাম আবু হানীফা রহ. স্বয়ং একটি বর্ণনায়
বলেন, আমার জন্ম হিজরী ৮০ সনে এবং ৯৬
সনে প্রথম হজে যাই। তখন আমার বয়স ষোল
বছর। মসজিদুল-হারামে প্রবেশ করে দেখলাম,
একটি বড় হালকায় বহু লোক সমবেত
হয়ে রয়েছেন। আমি আমার পিতাকে জিজ্ঞেস
করলাম, এটা কিসের জমায়েত? তিনি বললেন,
তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবী
**আবদুল্লাহ ইবনুল হারেছের রা. পাঠদানের হালকা (জ্ঞান দানের আসর)। এ কথা শুনে আমি সেদিকে অগ্রসর হলাম।
তাঁকে বলতে শুনলাম,

১) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,
যে ব্যক্তি আল্লাহর দীন সম্পর্কিত গভীর জ্ঞান
অর্জনে আত্মনিয়োগ করে, তার সকল প্রয়োজনের
জিম্মাদার স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা হয়ে যান
এবঙ তাকে এমন সব উৎস থেকে রিজিক
পৌছাতে থাকেন, যা সে কখনো কল্পনাও করেনি।
(মুসনাদে ইমাম আযম)

উল্লেখ্য, যে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হারেছের
রা. ইন্তেকাল হয়েছে ৯৯ হিজরীতে। তখন
ইমামে আজমের বয়স হয়েছিলো ১৯ বছর।



★‘এলামুল-আখবার’ নামক গ্রন্হে বর্ণিত অন্য
একখানা হাদিস ইমাম আবু হানীফা রহ.
সরাসরি সাহাবী হযরত আনাস ইবনে মালেকের
রা. নিকট থেকে বর্ণনা করেছেন।
উক্ত হাদিসে বলা হয়েছে যে,

২) ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর উপর
ফরজ।

একই সুত্রে হযরত আনাস ইবনে মালেক রা.
থেকে ইমাম আবু হানীফা রহ. কর্তৃক বর্ণিত অন্য
আর একখানা হাদিস হচ্ছে-

৩) পাখীরা আল্লাহর উপর যতটুকু ভরসা করে জীবন ধারন করে কোন
বান্দা যদি ততটুকু ভরসা করতে শেখে তবে আল্লাহ পাক তাকেও
অনুরূপ রিজিক দান করবেন। পাখীরা সকাল
বেলায় খালি পেটে বের হয়ে যায়, সন্ধায় পেট
ভরে বাসায় ফিরে আসে।


ইমামে আজম আর একখানা হাদিস সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ
ইবনে আবী আওফা রা. থেকে বর্ণনা করেছেন।
হাদিস খানা হচ্ছে-

৪) যে ব্যক্তি মসজিদ নির্মাণ করবে আল্লাহ পাক তার জন্য
বেহেশতে গৃহ নির্মাণ করবেন।

★শেষোক্ত হাদিসখানাকে ইমাম জালালুদ্দিন
সিয়ুতী রহ. মোতাওয়াতের হাদিস রূপে অভিহিত
করেছেন।
★মোল্লা আলী কারী রহ. বলেন, এই হাদিসটির
অন্যুন ৫০ সনদ আমি সংগ্রহ করেছি।
তম্মধ্যে ইমাম আবু হানীফার রহ.
মাধ্যমে বর্ণিত সনদই সর্বোত্তম।


★তিনি আঠারো বছর আনাস (রা.) এর ছাত্র ইমাম হাম্মাদ (রহ).এর কাছে ইলমে দ্বীন অর্জন করেছেন - তার আগেই ২২ বছর বয়স থেকে ছিলেন মুসলিম-খ্রিস্টান-ইহুদি-মূর্তিপূজারক এবং আল্লাহর অস্তিত্বে অবিশ্বাসীদের সাথে আলোচনা করে ইসলামের প্রতি অকাট্য প্রমাণ আনার প্রবাদ-পুরুষ।

★তিনি ছিলেন ইমামগণের ইমাম, মুসলিম জাতির প্রদীপ, হাফিজুল হাদিস (লক্ষ হাদিসের কন্ঠস্থ সংরক্ষক) এবং ধর্মীয় সিদ্ধান্তদাতাদের পথপ্রদর্শক- তাঁর প্রচলিত উপাধী।

★ইমামে আজম তার হায়াতে জিন্দেগীতে ৫০ বার হজ্ব সম্পন্ন করেন।
★হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ৪৮টিরও বেশী লক্বব মুবারক (উপাধী) ছিল, তার মধ্যে সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য লক্বব হচ্ছে
**ইমামে আ’যম,
**ইমামুল মুকাস্‌সিরীন ফিল হাদীস,
**ইমামুল কবীর ফিল ফিক্বাহ,
**ইমামুল হুমাম,
**ইমামুল আইম্মা, ইত্যাদি।
তিনি কি দ্বয়ীফ হাদিস বর্ননা কারি হতে পারেন? কিভাবে তা সম্ভব?ফিকাহ শাস্ত্রে যার অবদান অবিস্মরনীয়।

★আবু হানীফা রঃ ছিলেন সর্বকালেন সেরা মজতাহেদ ফিকাহবিদ ইমাম।
বিশেষজ্ঞ শ্রেণীর কোন আলেমকে মুজতাদেদের স্তরে পৌছাতে হলে হাদীসের হাফেজ, তফসীর শাস্ত্রের সর্বোচ্চ বিশেষজ্ঞ এবং সাহাবীগণের জীবন ধারা সম্পর্কিত সকল বিষয়ের উপর সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম জ্ঞান থাকা অপরিহর্য হয়ে যায়। হযরত আবু হানীফাকে মজতাহেদ ইমামের স্তরে পৌছার জন্য উপরোক্ত বিষয়গুলিতে সর্বাধিক জ্ঞান অর্জন করতে হয়েছিলো।

★ফেকাহশাস্ত্র তথা কুরআন-মহাসাগর মন্থন করে মাসআলা-মাসায়েল নির্ধারণ করার প্রশিক্ষণ তিনি ইমাম হাম্মাদের নিকট থেকেই আয়ত্ব করেছিলেন। এছাড়াও তাঁর এলমে-ফেকাহর আর একজন বিশিষ্ট উস্তাদ ছিলেন আহলে বাইতের উজ্জলতম নক্ষত্র ইমাম বা যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দেস ও ফকীহ ইমাম জাফর সাদেক রঃ এবং তার পিতা ইমাম মুহাম্মদ বাকির (রহ)। 
যেই ১২ জন ইমামের কথা বহু হাদিসে ব্যক্ত আছে তিনি সেই ১২ জনের ২ জন ইমাম ছিলেন ওনার উস্তাদ ও মুর্শিদ ।

★ইমামে আজম প্রথম বায়াত গ্রহন করেন ইমাম মুহাম্মদ বাকির (রহ) এর কাছে।
[Name: Imam Muhammad Baqir Ibn Ali al-Ulum
Mazar : at Jannat al-Baqi, Medina,
He was the son of Imam Zain al Abedin (rah)]
ওনার জন্ম এবং ওফাত [খ্রিষ্টাব্দ 677–732]
বা [হিজরি 57–114]

★ইমাম বাকির (রহ) এর ওফাত এর পর তিনি বায়াত গ্রহন করেন ওনার পুত্র ইমাম জাফর সাদিক (রহ) এর কাছে।
[Name: Imam Jaffar Ibn Muhammad al-Sadiq
Mazar: at Jannat al-Baqi, Medina, He was the son of Imam Baqir
জন্ম এবং ওফাত : [খ্রিস্টাব্দ 702–765] বা [হিজরি 83–148]
তিনি যাদের যাদের শিক্ষক ছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হল:-
১) Abu Hanifah and
২) Malik ibn Anas in fiqh,
৩) Wasil ibn Ata and
৪) Hisham ibn Hakam


★তিনি শায়খ বা মুর্শিদ ক্বিবলা হাতে বাইয়াত হওয়া সম্পর্কে বলেনঃ “(আমার জীবনে) যদি দু’টি বছর না আসতো, তবে নু’মান ধ্বংস হয়ে যেত।“ (সাইফুল মুক্বাল্লিদীন, ফতওয়ায়ে ছিদ্দীক্বিয়া) অর্থাৎ তিনি যদি তাঁর শায়খদ্বয় (রহমতুল্লাহি আলাইহিম)-এর নিকট বাইয়াত না হতেন, তবে তিনি ধ্বংস বা বিভ্রান্ত হয়ে যেতেন।


★ইমাম আবু হানীফার মন্তব্য হচ্ছে, যুগের সর্বাপেক্ষা বড় ফকীহ ছিলেন ইমাম জাফর সাদেক রঃ। তার চাইতে অধিক ধীসম্পন্ন কোন ফকীহর সাক্ষাত অন্য কোথাও পাইনি। (আল-মওয়াফেক)


★হাদিস এবং তফসীর শাস্ত্র আয়ত্ব করার উদ্দেশ্যে ইমাম আবু হানীফা সে যুগের যে সব সেরা মুহাদ্দেসগণের শরনাপন্ন হয়েছিলেন, তাদের সংখ্যা জরহ ওয়াত তাদিলের ইমাম হাফেজ জাহাবীর মতে ২৯০ জন। এঁদের মধ্যে এমন পন্ঞাশ ব্যক্তির নাম পাওয়া যায় যাদের বর্ণনা বুখারী-মুসলিম সহ সেহাহ-সেত্তার সকল কিতাবেই বিশেষ যত্নের সাথে গ্রহণ করা হয়েছে। (ইমামে আজম, আবু হানীফাহ রহঃ)
তাছাড়া অন্যান্য সুত্র মতে ৪০০০ শাইখ থেকে জ্ঞান অর্জন করে উপকৃত হয়েছিলেন।

★একই কারণে যেমন ""মোয়াত্তা ইমাম মালেক"" গ্রন্থটি প্রথম দিকে সংকলিত সর্বাধিক শুদ্ধ কিতাব রূপে গন্য করা হয, তেমনি হাদিস শাস্ত্রের প্রথম সংকলন গ্রন্হ "“মুসনাদে ইমাম আবু হানীফা”" নামক হাদিস সংকলনটি বিশুদ্ধতার দিক থেকে যে সর্বাগ্রগন্য তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নাই।

★এ সময়ে ইমাম আবু হানীফা রঃ একটি অদ্ভুদ স্বপ্ন দেখে কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। দেখলেন, যেন তিনি প্রিয়তম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কবর শরীফ খনন করে কিছু হাড়-কংকাল সংগ্রহ করছেন। স্বপ্নটি দেখার পর কিছু দিন তিনি ছিলেন মানসিক ভাবে খুবই উদ্বিগ্ন। শেষ পর্যন্ত স্বপ্নদ্রষ্টার পরিচয় গোপন রেখে তিনি স্বপ্নের বিবরণ তাবীর শাস্ত্রের ইমাম মুহম্মদ ইবনে সিরীনের রঃ খেদমতে পেশ করেন। ইবনে সিরীন রঃ এই স্বপ্নটিকে একটি মোবারক স্বপ্ন রূপে আখ্যায়িত করে বলেন, স্বপ্নদ্রষ্টা যুগের ইমাম এবং প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এলমের উত্তরাধিকার পুনজ্জীবিত করবেন। (আল-মোয়াফেক)


★তার অসাধারণ কৃতিত্ব রেখেছেন যার ফসল স্বরুপ :-
Kitaab-ul-Aathaar narrated by Imaam Muhammad al-Shaybani – compiled from a total of 70,000 hadith
Kitabul Aathaar narrated by Imaam Abu Yusuf
Aalim wa'l-muta‘allim
Musnad Imaam ul A'zam
Kitaabul Rad alal Qaadiriyah
ফিক্বহে আকবর,
জামিলুল মাসানিদ ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখ্য।


★তাঁর হাদীস গ্রহণের পদ্ধতি ছিল এমন-

১. কুরআনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে হবে।

২. হাদীস সরাসরি রাসূল দ. থেকে তাঁর জানা পর্যন্ত মধ্যবর্তী যারা যারা বর্ণনা করেছেন, তাঁদের প্রত্যেকের চরিত্র-পবিত্রতা-সততা এবং পরিপূর্ণ আজীবন সত্যবাদীতা প্রশ্নাতীত থাকতে হবে। এবং পুরোটা ব্যক্তিগতভাবে তাঁর নিশ্চিত হতে হবে।

★ইমাম আবু হানিফা (রহ) ১২ লক্ষ ৯০ হাজার মাসালা বের করেছেন। যদি বাতিলদের যুক্তি অনুযায়ী ধরেও নেওয়া হয় যে, তাঁর ইস্তিম্বাতকৃত সব মাসআলাই ভুল (অবশ্যই তার মাসআলা ভুল হতে পারে না)। তাহলেও ১২ লাখ ৯০ হাজার সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হয়েছে।

فَأَخْطَأَ فَلَهُ أَجْرٌعَنْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِذَا حَكَمَ الْحَاكِمُ فَاجْتَهَدَ فَأَصَابَ فَلَهُ أَجْرَانِ وَإِذَا حَكَمَ فَاجْتَهَدَ

হযরত আমর বিন আস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যখন কোন বিশেষজ্ঞ হুকুম দেয়, আর তাতে সে ইজতিহাদ করে তারপর সেটা সঠিক হয়, তাহলে তার জন্য রয়েছে দু’টি সওয়াব। আর যদি ইজতিহাদ করে ভুল করে তাহলে তার জন্য রয়েছে একটি সওয়াব। {সহীহ বুখারী, হাদিস নং-৬৯১৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৩৫৭৬, সহীহ মুসলিম, হাদিস নং-৪৫৮৪}


★★★ এখন যা আলোচনা করব তা হল ★★★


১) ইমামে আজমকে মুর্জিয়া ও দুর্বল বর্ননাকারী বলে অপবাদ দেয়ার জবাব
২) ইমামে আজম থেকে সরাসরি ইমাম বুখারী সরাসরি বর্ননা করেন নি কিন্তু করেছেন অন্যান্য মধ্যস্থতায়।

আজকাল দেখা যাচ্ছে ইমামে আজম আবু হানিফা থেকে সরাসরি বুখারী শরীফে কোন হাদিস বর্নিত না থাকায় অনেক লা-মাযহাবী আহলে হাদিস ভাই অপপ্রচার করছে তিনি নাকি মুর্জিয়া ছিলেন অথবা দুর্বল রাবী ছিলেন তাই তার থেকে কোন হাদিস বুখারীতে আসে নি।আসলে কি তাই?
আসুন দেখি total calculation :-

১) বুখারী শরীফে উচু সনদ ছুলাছিয়াত (৩ জনের মধ্যস্থতায়) বর্নিত হাদিস সংখ্যা ২২টি তার মধ্যে ২১টি বর্ননার ৪জন রাবীই ইমামে আজমের শিস্য ।

২) ইমাম বুখারী ইমামে আজম থেকে বুখারী শরীফে সরাসরি কোন বর্ননা করেন নি সত্য তবে ১ জনের,২ জনের,৩ জনের মদ্ধস্থতায় অনেক হাদিস বর্ননা করেছেন আর তাই নিয়ে আহলে হাদিস ভাই রা ঢোল পিটানো শুরু করেছে আর ইমামে আজমকে ত্রুটিপূর্ণ,দুর্বল নানা খারাপ ভাষায় অপবাদ দিচ্ছে।(Dr. Jakir Naik এর আহলে হাদিস group)

৩) ইমামে আজম ছিলেন ইমাম বুখারীর পিতার উস্তাদ,তার পিতার উস্তাদেরও উস্তাদ,ইমাম বুখারীর অনেক শিক্ষক ছিলেন ইমামে আজমের শিষ্য অথচ তাকে নিয়ে কেন এত মিথ্যাচার?শয়তানের দল!!"


Clearification:- কিছু জিনিস পরলে বুঝবেন।

১) মুহাদ্দিসগন হাদিস গ্রহনের ক্ষেত্রে সতন্ত্রভাবে এক একজন এক এক জিনিসের দিকে খেয়াল রেখে পছন্দ রেখে হাদিস collect করেছেন ইমাম বুখারীও তাই।

২) সহীহাইন (বুখারী ও মুসলিম) এ ইমাম শাফেয়ী(রহ) এর ও কোন বর্ননা নেই যদিও ইমাম বুখারী ও মুসলিম ২ জনই শাফেয়ী মাযহাবের প্রতি আসক্ত ছিলেন।

৩) ইমাম বুখারী ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ) থেকে মাত্র ১টি হাদিস বর্ননা করেছেন।

৪) ইমাম মুসলিম যদিও ইমাম বুখারীর শিষ্য তবুও তার আস-সহিহ কিতাবে ইমাম বুখারী থেকে কোন হাদিস নেন নি।

৫) সুনানে তিরমিজিতে ইমাম মুসলিম এর সনদে শুধুমাত্র একটি বর্ননা আছে।

৬) ইমাম বুখারীর সনদে সুনানে নাসায়ীতে শুধু ১টি হাদিস আছে।

৭) ইমাম আহমদ ইমাম শাফেয়ী থেকে সিলসিলাতুযযাহাব এর পদ্ধতিতে শুধু ১টি হাদিস মুসনদে নিয়েছেন।


★★★ইমামে আজমকে মুর্জিয়া অপবাদের কারন ও তার বাস্তবতা★★★

১) ইমামে আজম নিজেই বলেন,"" আমি বলি না যে মুমিনকে তার পাপ কোন ক্ষতি করবে না এবং সেজন্য সে দোযখে যাবে না,যেরকম বাতিল ফেরকা মুর্জিয়ারা বলে থাকে।এবং খারীজী মুতাজিলা দের মত এও বলি না যে চিরকাল সে দোযখে থাকবে,যদিও সে ফাসেক হয় এবং দুনিয়া থেকে ইমান নিয়ে বিদায় নেয়।আমরা মুর্জিয়াদের মত বলিনা যে আমাদের পুন্যসমুহ মকবুল আর পাপ সমুহ মাফ।""
ইমামে আজম: আল ফিকহুল আকবর মাআ শরহে লি মোল্লা আলী কারী পৃ: ১২৫-১২৭

২) ইমাম শাহরেস্তানী(ওফাত ৫৪৮হি) আল-মিলাল ওয়ান নিহাল(১/১৪১) এ নিখেন,"" আমার জীবন দানকারী আল্লাহর কসম ইমাম আজম ও তার দলকে অনেকে মুর্জিয়া বলে অপবাদ দেয় কারন তিনি বলেন,ইমান অন্তরের বিশ্যাসের নাম।আর তার উপর অপবাদকারী রা মনে করে যে তিনি আমলকে বেকার মনে করেন।অথচ তিনি শরীয়তের ব্যপারে এত জ্ঞানী ও কঠোর তিনি কি একথা বলতে পারেন?
হ্যা আরেকটি কারন আছে মুর্জিয়া বলার তিনি প্রথম যুগে প্রকাশিত ফিত্নায়ে কদরিয়া,মুতাজিলার বিরোধিতা করেছিলেন তারাও তাকে মুর্জিয়া বলে আখ্যায়িত করত।(এইভাবেই একসময় অপপ্রচার শুরু হয়)





নামধারী আহলে হাদিস দের প্রচার অনুযায়ী যদি তিনি মুর্জিয়া হতেন আর সেই কারনে ইমাম বুখারী ইমামে আজম থেকে সরাসরি  বর্ননা না করার কারন হয় তাহলে মুর্খ দের জেনে রাখা উচিত যে--

★★★ সিত্তায় মুর্জিয়াদের বর্নিত হাদিস আছে★★★

(note: মুর্জিয়া ইসলামের প্রাক কালে একটা বাতিল দল।তাই মুর্জিয়া বর্ননাকারী থেকে সাধারনত হাদিস বর্ননায় ignore করা হয়।যেহেতু সিহাহ সিত্তায় ৭২০ এর চেয়েও অনেক বেশি হাদিস মুর্জিয়া থেকে বর্নিত হয়েছে তাই বিশেষ কোন ত্রুটি ছাড়া হাদিসকে জাল বা দুর্বল বলা যাবে না।)

আজকাল ওহাবী আর আহলে হাদিস ভাই রা দেখা যায় কোন হাদিস দিলে যদি সেটা তাদের বিরোদ্ধে যায় তখন তারা ওঠে পড়ে লাগে আর নানান সব কিতাব থেকে দুর্বল বা ত্রুটিপূর্ণ রাবীদের সম্পর্কে বিভিন্ন Hadith Scholars দের comment এনে Strong Sahih হাদিস কেও তারা দুর্বল প্রমান করে সাধারন মানুষের কাছে। এই পোস্ট টা দিলাম আশা করি সবাই এই ফিত্নাবাজ দের থেকে যেন নিজেদের সাবধান রাখতে পারবেন।

Imam Muhammad Bin Khazim ইমাম মুহাম্মদ বিন খাজিম (একজন মুর্জিয়া ছিলেন এবং সিহাহ সিত্তার হাদিস বর্ননাকারীও ছিলেন)
সিহাহ সিত্তার হাদিসে তার সর্বমোট বর্ননা:-

1) Sahi Bukhari has 50 narrations from him

2) Sahi Muslim has 250 narrations from him

3) Jami Tirmidhi has 120 narrations from him

4) Sunan Abu Dawud has 85 narrations from him

5) Sunan Nasai has 65 narrations from him

6) Sunan ibn Majah has 150 narrations from him

তাই একজন থেকেই দেখা যায় সিহাহ সিত্তায় 720 টি হাদিস বর্নিত আছে।

এমনকি শুধুমাত্র বুখারী শরীফেই ১১ জন মুর্জিয়ার বর্নিত হাদিস রয়েছে বলে
-ইমাম যাহাবী,ইবনে আবী হাতিম,আসকালানী,সুয়ুতি,আজলী,
উকাইলী (আল্লাহ সবার উপর শান্তি বর্ষন করুন) তাদের মতে পাওয়া যায়।


♦♦ইমাম আবু হানিফা রহ. কি তাবিঈ ছিলেন ? ফিকহে হানাফীর কি সনদ নেই ? কেন এ অপপ্রচার ?♦♦

********কিছুদিন আগে হানাফী মাযহাবের
বিরুদ্ধে লেখা একটা কিতাব নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলাম।
কিতাবটির নামঃ হানাফী ফিকহের ইতিহাস ওপরিচয়।
লেখকঃ মুফতী মাওলানা আব্দুর রউফ।
এটিকে হানাফী মাযহাবের
বিরুদ্ধে বিশাল অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করে আসছে।

মুফতী মাওলানা আব্দুর রউফ সাহেবের এলেমের দৌড়
কতটুকু।
এবার তাদের অভিযোগ গুলোর
মধ্যে আজকে একটিনিয়ে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ্।তাহলে এবার একত্রে অভিযোগ গুলো দেখিঃ
(১) ইমাম আবু হানীফা রাহঃ এর কথা দিয়ে বরাত
দেওয়া হয়েছে কিন্তু তার কথার কোন সনদ দেওয়া হয়
নি। যদিও ফতোয়ার কিতাব গুলো লেখা হয়েছে ইমাম আবু
হানীফা রাহঃ এর মৃত্যুর কয়েকশ বছর পরে।
(২) এ কারনে ইমাম আবু হানীফা রাহঃ এর কথাগুলোর
কোন সূত্র নেই।
(৩) এ কারনে ফতোয়ার কিতাব গুলোতে লেখকদের
মতামত যে ইমাম আবু হানীফা রাহঃ এর তার কোন
ভিত্তি নেই।


Ans:-
মূল জবাবে যাওয়ার আগে জেনে নেওয়া দরকার
হানাফী মাযহাবের মূল উৎস গুলো কি কি?

হানাফি মাযহাব কি আল মুগনী,হিদায়া,রাদ্দুল
মুহতার,বিকায়া…… দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে? অবশ্যই না।

★হানাফী মাযহাবের মূল বণনাকারী :-
**ইমাম আবু ইউসুফ ,
**ইমাম মুহাম্মদা রহ. ,
**ইবনে আবি শাইবা ।

তারা সরাসরি ইমাম আবু হানিফার ছাত্র তাদের নিজের হাতে লেখা কিতাব
রয়েছে। ব্যাস এটা সবচেয়ে বড় দলিল। এসব কিতাবেই
ইমাম আবু হানীফা রাহঃ এর উক্তি গুলো সন্নিবেশিত
হয়েছে। এখান থেকেই অন্য অন্য কিতাব গুলোতে ইমাম
আবু হানীফা রাহঃ এর উক্তি পেশ করা হয়েছে।

★সবচেয়ে বড় কথা হলো:
**ইমাম আবু ইউসুফ রহ.
**খলিফা হাদী,
**মাহদী ও
**হারুনুর রশিদের
যামানা থেকে সমগ্র মুসলিম বিশ্বের প্রধান
বিচারপতি ছিলেন তখন, হানাফী মাযাহেরব
মাসআলা গুলোর আলোকে বিচার সহ সকল কার্যক্রম
চলেছে আর এটি একজনের সনদ থেকে হাজার গুন
শক্তিশালী। আব্বাসী খিলাফত, উসমানী খিলাফত দু’টোই
হানাফী ফিকহ অনুযায়ী চলেছে।


★ইবনে হাজার আসকালানি রাহ. বলেন- “উল্লেখ্য
যে, আব্বাসী যুগের প্রায় পাঁচশ বছর পর্যন্ত পবিত্র
মক্কা-মদীনার সকল ইমাম ও বিচারক হানাফী ছিলেন।
অতঃপর প্রায় দু’শ বছর খাওয়ারিয্মী ও সালজুক্বীদের
অধীনে চলে, তারাও রক্ষণশীল হানাফী ছিলেন। অতঃপর
উসমানী ওতুর্কী খেলাফত প্রায় পাঁচশ বছর পর্যন্ত
চলে। তারাও সবাই হানাফী ছিলেন।” ( আল-
খাইরাতুলহিসান-ইবনে হাজার, মক্কী শাফেয়ীঃ পৃ –৭২ )

★“মোটকথা, ইসলামী ইতিহাসের
সোনালী অধ্যায়ে বারশ বছর পর্যন্ত পবিত্র মক্কা-
মদীনায় ইমাম ও খতীবের সুমহান দায়িত্ব
হানাফী ইমামগণই আঞ্জাম দিয়ে এসেছেন এবং কাযী ও
বিচারকের আসনেও তারাই ছিলেন।” ( আল-
খাইরাতুলহিসান-ইবনে হাজার মক্কী, শাফেয়ীঃ পৃ – ৭২;
রদ্দুলমুহতারঃ পৃ – ১/৭৫ )।


★হানাফী মাযহাবের মূল হলো যাহেরী রিওয়াত।
যাহেরী রেওয়াত বলা হয়,ইমাম মুহাম্মাদ রহ. এর
৬ টি কিতাবকে -

১. সিয়ারে কাবীর
২. সিয়ারে সগীর
১. জামে সগীর
২. জামে কাবীর
৪. মাবসুত
৬. যিয়াদাত

★ইমাম মুহাম্মাদ রহ. ইমাম আবু হানিফার খাস
ছাত্র। এগুলোই হানাফী ফিকহের মূলউৎস। আর
এগুলো থেকেই পরবর্তিতে বিভিন্ন ফতোয়ার
কিতাবে ইমাম আবু হানীফা রাহঃ এর কথাকে কোট
করা হয়েছে।

★ইমাম ত্বহাবী রহ. (২২৯-৩২১ হি:) শরহু
মায়ানিল আসার বয়ানু মুশকিলিল আসার লিখেছেন।
এগুলো সব হানাফী মাযহাবের মাসআলা বর্ণনা করা হয়েছে।
এভাবে প্রত্যেক যুগে হানাফী আলেমগণের তালিকা আছে।
এগুলোত্বাবাকাতে হানাফিয়্যা নামের
বইগুলোতে পাওয়া যাবে।ইমাম সারাখসী, ইমাম বাযদাবী,
আবুল লাইস সমরকন্দী……এনারা সবাই অনেক আগের।
এরা হানাফী মাযহাবের মাসয়ালাগুলো সন্নিবেশিত
করেছেন। এভাবেইহানাফী ফিকহ অন্য সকল কিছু
থেকে শক্তিশালী সনদে সংরক্ষিত হয়েছে।


★এবার মুফতি সাহেবের অভিযোগ গুলো খণ্ডন
করা যাক।

(১) (২)(৩) নম্বর অভিযোগের উত্তর:-

**আরে ভাই, ফিকহের কিতাবগুলো লম্বাচূড়া সনদ
বর্ণনা করা হয়না এটা মুফতি আব্দুর রউফ সাহেবের ও
জানা থাকার কথা। সনদের জন্য অন্যান্য কিতাব রচিত
হয়/হয়েছে যে গুলোর উদ্যেশ্যই হল সনদ সংকলন করা।
আচ্ছা, কওল বর্ণনা করেই যদি পুরা সনদ
বর্ণনা করা জরুরি হয়ে থাকে তাহলে মেশকাত শরিফের
ব্যাপারে তারা আপত্তি কেন তোলে না?

**মিশকাতের হাদীস
বা আছার বর্ণনা করে বলা হয়েছে এটা ইমাম বুখারী রাহ
বর্ণনা করেছে এটা ইমাম বাইহাকী রাহঃ বর্ণনা করেছেন,
এটা ইমাম মুসলিম রাহঃ বর্ণনা করেছেন।
কিন্তু এই সকল ইমাম থেকে মেশকাতের মুসান্নাফের লেখক হাম্মাদ বিন
আব্দুল্লাহ আলখতীব আত তিবরিযী(৭৪১
হি:) পর্যন্ত কোন সনদ উল্যেখ নেই। কিন্তু এর
সামনে সেই সনদ অবশ্যই ছিলো। যদিও তিনি তা উল্যেখ
করা যরুরী মনে করেন নি।

**কারন যদিও ইমাম বোখারী রহ. ২৫৬ হি: তে মৃত্যু বরণ করেছন তারপর ও
তার কিতাব রয়েছে ব্যাস এটি বড় দলিল। এখন যদি কোন
আহাম্মক এই আপত্তি তোলে যে “মেশকাতে হাদীস
গুলোর সনদ উল্যেখ নেই শুধু বলা হয়েছে এটা ইমাম
বুখারী রাহ বর্ণনা করেছেন, কিন্তু ইমাম বুখারী থেকে
শেষ পর্যন্ত কোন সনদ নেই । তাই……।”
তাকে আপনি কি জবাব দিবেন?

**আমাদের ও এই কুদুরী ,
হিদায়া, রাদ্দুল মোহতারের ক্ষেত্রে একই জবাব।
যদিও ইমাম আবু হানিফা ১৫০ হি: তে মৃত্যু বরণ করেছেন
তারপরও তার কথাগুলো তার ছাত্রদের কিতাবে রয়েছে ,
ব্যাস এটি বড় দলিল।
বাদ দিলাম মেশকাতের কথা।

**ইবনে হাজর আসকালানি রাহঃ এর """তাকরীবুত তাহযীব"" রিজাল
সাস্ত্রের বিখ্যাত কিতাব। এখানে ইবনে হাজার
আসকালানি রাহঃ ৬০০,৫০০,৪০০,৩০০… বছর
আগের রাবিদের ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু
কোনো ধরনের সনদ উল্যেখ করেন নি। এখন যদি কোন
জাহেল, মুফতি সাহেবের মত এই
 কথা বলে যে –

**“ইবনে হাজার অমক রাবির মৃত্যুর ৩৯০ বছর পর
জন্মগ্রহন করে কিভাবে তার ব্যাপারে মন্ত্যব্য
করেছে তার কোন সূত্র নাই। অতএব সূত্র বিহীন
কারো কথা গ্রহন করা জায়েজ নাই ”
তাকে আপনি কি বলবেন?

**মূল ব্যাপার হল ইবনে হাজার
আসকালানি রাহঃ এর সামনে রাবির ব্যাপারে মন্তব্যের
সনদ ছিলো কিন্তু এ তিনি তা উল্লেখ  করার জরুরত
মনে করেন নি। ঠিক একই ঘটনা কুদুরী, হিদায়া ,রাদ্দুল
মুহতারের… ক্ষেত্রে। এগুলোর লেখকদের সামনে ইমাম
আবু হানীফা রাহঃ এর কথার সনদ ছিলো যা ইমাম আবু
হানীফা রাহঃ এর ছাত্র ইমাম মুহাম্মদ, ইমাম
ইউসুফ,ইমাম ইবনে আবি শাইবার কিতাবে আছে কিন্তু
তারা এর সনদ ফতোয়ার কিতাবে উল্লেখ
করা জরুরী মনে করেননি। ঠিক যেমন মেশকাতের লেখক
যে কারনে জরুরী মনে করেন নি।

No comments:

Post a Comment