আসসলামু আলাইকুম ওয়া রাহমতুল্লাহি ওবারাকাতুহ
শরু করছি পরম করুণাময় সেই প্রেমময় জাল্লে জালালু আহাদময় অসীম
দয়ালু আল্লাহ সুবাহানু তাআলা ও তার পেয়ারে নূরময় হাবীব
শাফেয়ীন মুজনেবিন রাহমাতালাল্লিল আলামিন আহমদ মোস্তফা মুহাম্মদ মোস্তফা (সা:) উনার উপর দুরুদ পেশ করে এবং আমার দাদা
হুজুর আক্তার উদ্দিন শাহ ও আমার
মূর্শীদ কেবলা দয়াল
মোখলেছ সাই এর সরণে...
" প্রসঙ্গ শানে পাক পাঞ্জাতন বা পবিত্র ৫টি দেহ "
লেখার প্রথমে আমি অধম পাক পাঞ্জাতনের নিকট এবং সকল পাঠকগণের নিকট এবং যিনি
মহান রাব্বুল আলামিন ওনার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কারন আমি অধমের অনেক ভূল ত্রুটি আছে
এবং থাকবে এটাই স্বভাবিক। এ লেখার উদ্দেশ্য একটাই সবাই সঠিক এবং সত্য জিনিষটি জানুক
কারণ সত্য কোনি দিন চাপা পড়ে থাকেনা আমার থেকে শত গুনে ভরা উত্তম লোকেরা এ সত্য উদঘাটন
করে প্রকাশ করেছেন আমি অধম তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আমি আমার মত করে সহজ ভাষায়
লিখলাম কারণ বর্তমান যুগ হলো ফ্যাতনা ফাসাদের যুগ এ যুগে যে আহলে বাইতের সাথে থাকতে
পারবে তারাই মূলত কারো না কারো দ্বারা ওপারে মুক্তি পাবে কারণ সূপারিশ করার ক্ষমতা
আল্রাহ তার রাসুলের উম্মতের মধ্যে কিছু লোক কে এ মর্তবা দান করেছেন-হাদীস শরীফ-এখন
চললাম মূল কথায়
পাক পাঞ্জাতন কি..পাক মানে পবিত্র । পাঞ্জা হলো পাচ এবং ''তন'' অর্থ শরীর বা
দেহ । সুতরাং পাক-পাঞ্জাতন হলো পবিত্র পাঁচ দেহ মোবারক । তারা কারা.. তারা হলেন হযরত
মোহাম্মদ সাল্লাল্রাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম, মওলা আলী আলাইহিস সালাম, মা খাতুনে জান্নাত
ফাতিমা আলাইহিস সালাম, ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম । সৃষ্টির
আদিতে পাক পাঞ্জাতনই হলো নুরে মোহাম্মদী সাল্লাল্রাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম । আর এই নুরে
মোহাম্মদী হতে পঞ্চ নুরের মাধ্যমে সারা কুল কায়েনাত সৃস্টি।
বিস্তারিত..... মানুষ স্রষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব কারণ প্রত্যেক মানুষ মোহাম্মদী
বোরকা/লেবাছ পরিহিত অবস্থায় পাক-পাঞ্জাতনের নুরের জ্যোতি নিয়ে এই পৃথিবীতে আগমন করেছে
কেউ তা উপলব্ধি করতে পারে আবার কেউ পারেনা কারণ আমি কে.. কোথায় থেকে আসলাম ..আবার
কোথায় যাব.. এ প্রশ্নের উত্তর খোজে পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই সৃষ্টির গোড়াতে যেতে
হবে কারণ দুর থেকে গাছের গোড়ায় কি আছে তা দেখতে পারা যায় কিন্তু গভীরভাবে জানা যায়না
আর গভীর ভাবে না জানতে পারলে জীবনটাই বৃথা রয়ে যায় তাই চর্ম চক্ষু বা দুনিয়ার জীবনে নবী মোহাম্মদ মোস্তফা আহম্মদ মোজতবা (সাঃ)- এর তেইশ
বা তেষট্রি বৎসরের সমগ্র জীবন ইতিহাস পর্যালোচনা করলে চলে না । হযরত আদম (আঃ) এর জন্মের
বা সৃষ্টির বহু পূর্বে যখন আদম (আঃ) পানি ও কাদায় ছিলেন, তখনও তিনি নবী । আমাদের আরও
এগিয়ে যেতে হবে । আমাদের এই পৃথিবী জন্মের পূর্বে আমাদের নিশ্চয়ই এক নিথুত সৃষ্টি ছিল । যে নবীর উম্মত আমরা, যাঁর নূর
হতে জগতসমূহের সৃষ্টি হয়েছে, নিশ্চয়ই আমরা ঐ নূরের জন্মের সাথে কোন না কোন ভাবে জড়িত
। তা জানা কি আমাদের কর্তব্য নয় ? যে নূরের মাধ্যমে মানুষ সৃষ্টিতে আগমন এবং যে নূরের
দিকে মানুষের প্রত্যাবর্তন সেই উৎস পাক পাঞ্জাতনকে না জানা কত বড় মূর্খতা এবং বোকামি
তা বলা অধম যোগ্য রাখেনা ।হাদিসে কুদসি থেকে জানতে পারা যায় স্রষ্টা ছাড়া যখন কোনো
কিছু বিদ্যমান ছিল না অর্থাৎ আল্লাহপাক একা
ছিলেন, আল্লাহ পাকের কুন বা হও আদেশবলে তাঁর নিজ নুর হতে নুরে মোহাম্মদী সৃষ্টি
করেন । উক্ত নুরে মোহাম্মদীকে সৃষ্টি করে ময়ুর রুপে ( ময়ুর=রুপক শব্দ ) সাজারাতুল একিন
নামক চার ডাল বিশিষ্ট একটি গাছে বসিয়ে রাখেন । উক্ত ময়ুর সত্তর হাজার বছর আল্লাহপাকের
তজবিহ পাঠ করতে থাকে । সেই পিন্ডময় রূপাকৃতির প্রতি আল্লাহপাক অপলক নয়নে বহুকাল মজিয়া
রইলেন । একদিন সেই ময়ূরের সামনে আল্লাহপাক হায়া শরমের একটি আয়না সামনে রাখলেন। আর আয়নার
মধ্যে ময়ুর স্বীয় জালোয়া রূপ লাবন্যে সৌন্দর্য্য অবলোকন করামাত্র লজ্জায় প্রেমাগ্নিত
অবস্থায় বলে, আহা আমি এতই সুন্দর তবুও তার গুণগান, কৃতজ্ঞতা কিছুই করিনি । এই বলে ময়ূররূপী
নুরে মোহাম্মদী আল্লাহপাকের উদেশ্যে ৫টি সেজদা করে শুকরিয়া আদায় করেন ঠিক তখন থেকেই
৫ ওয়াক্ত সালাতের জন্ম শুরু। যদিও তা মেরাজ রজনীতে অর্থাৎ আল্লাহ পাক দান করেছিলেন
।মূলত ময়ূররূপী থাকা অবস্থায় যে পাঁচটি সেজদা আল্লাহ তাআলাকে করেছিলেন সেই থেকে পাঁচ
ওয়াক্ত নামাজ সৃষ্টি হয়েছে এবং ৫ ওয়াক্ত কায়েম
হয়েছে বর্তমান কিছু লোক বলে ৫ ওয়াক্ত সালাতের কোন ভিত্তি নেই তাদের কাছ থেকে দূরে
সরে থাকুন কারণ নামাযই হলো মুমিনের মেরাজ আর মেরাজ মানে আল্লাহ সাথে স্বয়ং সাক্ষাত
করা । যখন ময়ূর রুপে আয়নার মধ্যে নিজ রূপ দেখে মহানন্দে উৎফুল্লতায় হয়ে সারা দেহ ঘামে
পূর্ন হলো এবং সেই ঘামের এক বিন্দু ললাট হতে প্রবাহিত হয়ে নাকের অগ্রে টপ করে পড়ে
গেল । সেই ঘর্ম বিন্দু নুর হতে এই সার্বভৌম যত ইতি সৃষ্টি হয়ে ত্রিজগৎ ভর্তি হলো ।
উক্ত ময়ূররূপী নুরে মোহাম্মদীর মাথার তাজ হলেন আলী, গলার হার মা খাতুনে জান্নাত, দুই
কানের দুল হলেন ইমাম হাসান ও হোসাইন (রা:)।
তারপর হুজুরে পাক যে সুরতে দুনিয়ায় ছিলেন সেই সুরতে একটি ফানুসের মধ্যে রাখা
হয় । সমস্ত রূহ কে আল্লাহপাক সেই সুরত দেখার আদেশ দেন । যারা যে অঙ্গ দেখেছে তারাই
এক এক মর্যাদা পেয়েছে । যেমন বাদশা, উজির, আলিম, হাফেজ, সৈনিক, ইত্যাদি হয়ে এ দুনিয়ায়
জন্ম নিয়েছে । মোজাহিদ বিন আব্বাস হতে বর্ণিত যে, যখন আল্লাহপাক হযরত আদম (আঃ) কে পয়দা
করে তাঁর মধ্যে রূহ ফুকে দেন তখন হযরত আদমের (আঃ) হাঁচি আসে, তখন আল্লাহপাকের হুকুমে
হযরত আদম (রা:) আলহামদুলিল্লাহ্ বললেন । আল্লাহপাক ইয়ার হামুকাল্লাহ বলে জবাব দেন ।
তারপর ফেরেশতারা আদমকে (আঃ) সেজদা করেন । হযরত আদম (আঃ) আল্লাহপাকের কাছে আরজ করলেন-
ইয়া আল্লাহ, তুমি কি আমার চেয়ে বেশী মোহাব্বত কোনো কিছু পয়দা করেছ ?
আল্লাহপাকের পক্ষ থেকে কোনো জবাব পেলেন না । এভাবে তিনবার আরজ করেও জবাব পেলেন
না । চতুর্থবার আছতাগফার পড়লেন তারপর আল্লাহ জবাব দিলেন। হে আদম, আমি যদি তাঁদের পয়দা
না করতাম তাহলে তোমাকেও পয়দা করতাম না । হযরত আদম (আঃ) আরজ করলেন, পরওয়ারদেগার তাঁদেরকে
আমাকে দেখাও । আল্লাহপাক আরশের ফেরেশতাদের পরদা উঠাবার হুকুম দিলেন । যখন তারা পরদা
উঠালেন তখন আদম (আঃ) পাঁচটি সুরত দেখতে পেলেন । আদম বললেন, আয় মাবুদ এরা কারা ? আল্লাহ
পাক জবাব দিলেন, উনি আমার হাবিব, আখেরী নবী, উনি আমিরুল মোমেনীন হযরত আলী, উনি আমার
নবীর বেটি/ নয়ন মণি ফাতিমা আর এই দুইজন আলীর দুই সন্তান হাসান ও হোসাইন । এদের আমি
সর্বপ্রথম সৃষ্টি করেছি । তারপর যখন দুনিয়াতে এসে গোনাহ মাফের জন্য আল্লাহর দরবারে
ফরিয়াদ করতে লাগলেন । তখন হঠাৎ সে কথা মনে পড়তেই বলতে লাগলেন - আয় আল্লাহ
পাক পাঞ্জাতনের ওছিলায় আমাকে মাফ করে দাও । তখনই আল্লাহপাক আদমের (আঃ) গোনাহ
সব মাফ করে দিলেন আল্লামা সিউতি তফসিরে নিশাপুরীতে লিখেছেন, হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)
হুজুরে পাক (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, এটা কোনো কালেমা ছিল যা আল্লাহপাক আদমকে
শিখিয়েছিলেন, যার বদৌলতে আদমের তওবা কবুল হয় ? হুজুরে পাক (সাঃ) ফরমালেন, হযরত আদম
এই দোয়া পড়েছিলেন- আয় আল্লাহ তুমি মোহাম্মদ (সাঃ), আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন (রা:)-
এর ওয়াস্তে আমার তওবা কবুল করো । আল্লাহপাক তখনই তওবা কবুল করেন পাঠকগণ এ থেকে একটু
শিক্ষা নিন যে উছিলায় হল মুক্তির পথ কারণ যদি উছিলা না হত তা হলে আমি এবং আপনি সৃষ্টি
হতাম না এখান থেকে বুঝা গেল উছিলার মর্তবা কত বড় আর পাক পাঞ্জাতন কত উর্দ্ধের জিনিষ।তাঁদের
দিকে ভালো করে লক্ষ্য করলে তার হাকিকত উপলব্ধি করা যায় না । যে কোনো অবস্থাতে আহলে
বায়াত আলাদা করা যায় না বা আলাদা হতে পারে না কারণ সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আহলে
বায়াত এ রাজত্ব করে যাবে যা আমরা চর্ম চুক্ষ দিয়ে বুঝিনা আর একটি কথা না বললেই নয় শিয়াদের
ধারনা আহলে বায়াত বলতে শধু মাওলা আলী (রা:)ওনার পরে ১২ ইমামকেই বুঝায় এটা তাদের ভূল
ধারনা এটার জন্য তাদের এক দিন না এক দিন খেশারত দিতে হবে কারণ আহলে বায়াত হলো তারাই
যারা এই পাক পাঞ্জাতনকে অন্তরে রেখে এবং রাসূল (সা:)ওনার সাহাবী তাবে তাবেয়ীন আমিরুল
মুমিনীন খোলাফায়ে রাশেদীনকে সঠিকভাবে ভালবাসতে পেরেছে তারাই হলো মূলত আহলে বায়াত
কারণ রাসূল (সা:)ওনার বংশধারা কেয়ামত পর্যন্ত ঠিকে থাকবেন তা সূরা কাওসারে আল্লাহ এভাবে
বলেচেন আমি আপনাকে এমনি আওলাদ দান করলাম যা কেয়ামত পর্যন্ত বহাল থাকবে তাই নবী রাসূলের
দরজা এখন বন্ধ্ শূধুমাত্র আহলে বায়াত/কামেল মোকাম্মেল ওলি আওলিয়াদের দরজা খোলা যা
হলো প্রধান ৪ তরীকা কাদরিয়া-চিশতীয়া-মোজাদ্দেদীয়া-নকশেবন্দীয়া তাদের কাছেই আপনাকে
বায়াত হয়ে পাক পাঞ্জাতনের নূর ফায়েজ করতে হবে তাহলে কেবল মানব সূরতে স্বাধীন হতে পারবে..তাই
আমি অধম সবার কাছে এ টুকু বলতে চাই ব্যক্তি পাক পাঞ্জাতন ১৪০০ বছর আগে আসলেও বেলায়েতি
পাক পাঞ্জাতন সৃষ্টির মাঝে সদা-সর্বদা বিরাজমান যা প্রেমিক আশেক ব্যক্তি ছাড়া কেউ অনুভব
করতে পারে না ।তাই আসূন একবার হলেও এই দুরুদ শরীফ খানা পাঠ করি...দূরুদ -- আল্লাহুম্মা
সাল্লে অসাল্লেম অ বারেক আলা আবদেকার রাসুলিল করিম রাহমাতাললিল আলামিন শাফেয়েল মুজনেবিন
সাইয়েদেনা মওলানা নবিয়েনা মোহাম্মদেও অ অলা আলেহি অ আহলে বায়তিহি অ আওলাদিহি অ জুররিয়াতিহি
অ আজওয়াজিহি অ আসহাবিহি অ আওলায়ায়েহী অ ওম্মাতেহী আজমাইন কামাসাল্লায়তা অ সালামতা অ
বারকতা অ রাহেমতা আলা সাইয়েদেনা ইব্রাহিমা অ আলা আলে সাইয়েদেনা ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামিদুম মজীদ.. আর আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে অধম নয়নের
পানি জড়িয়ে ক্বালব কে রাসূলের জুতা মোবারকের ধুলির সামনে পেশ করে ফরিয়াদ করি যেন এই
হে আল্লাহ ! পাক পাঞ্জাতন জেনে ও চিনে ইবাদত -তালিম-তাসাউফ পালন করার তৌফিক দিন । আমীন
।পরিশেষে এ টুকুই বলতে চাই সবাই কামেলে মোকাম্মেল ওলীর নিকট বায়াত হউন কারন বায়াত
না হওয়া ছাড়া এসব জ্ঞ্যন অর্জন করা সম্ভব নয় এবং সে প্রকৃত মুসলমান ও নয়..সাবধান আবার
যেন তেন মূর্শিদ ধরলেই হবেনা কারন প্রথিবীতে ভালোর ও শেষ নাই আবার ভন্ডের ও শেষ নাই
তাই আমার মূর্শীদ কেবলা দয়াল মোখলেছ একটি উক্তি করেছিলেন "কোটিতে গুটি মিলবে
নাহি একটি তাতে ও সন্দেহ আছে" কারণ আজকাল সবাই দেখছি পীরালী নিয়ে খুব ব্যস্ত নিজ
নামের সহিত অনেক অনেক উচু মাপের টাইটেল লাগাতে ও দ্ভিধাবোধ করে না...যার কাছে রুহানী
ফায়েজই নেই সে আবার কীসের পীর সে না নিজে পার হতে পারবে না অপরকে তাদের কাছে থেকে দূরে
সরে থাকাব আহবান জানাচ্ছি---প্রচারে-মোখলেছিয়া সূন্নী খানকা শরীফ---সূত্র-হুজ্জাতুল
ইসলাম ইমাম গাজ্জালী (র:)-(দাখায়েখুল আকবর).-ইমাম ফখরুদ্দিন রাযি (র:)-(দাখায়েখুল হাকায়েক).
রেজা মাহবুব চিশতী…পীরের মর্যাদা ও ভুমিকা-অধ্যাপক মুহাম্মদ মোখেলছুর রহমান(নারিন্দা
শাহ সাহেব লেন)...আল্লাহ হাফেজ
No comments:
Post a Comment